প্রতিবাদ: ভাগাড়-কাণ্ডে কলকাতা পুরসভার সামনে বিক্ষোভ কংগ্রেস কর্মী-সমর্থকদের। ছবি: সুদীপ ঘোষ
মৃত পশুর মাংস কেনাবেচায় অভিযুক্তদের ধরপাকড় চালাচ্ছে পুলিশ। মামলা ঠুকে দোষীদের শাস্তির ব্যবস্থা করতে এ বার অভিযুক্তের তালিকা চাইল রাজ্যের ক্রেতা সুরক্ষা দফতর। ওই দফতরের মন্ত্রী সাধন পাণ্ডে জানান, ওই সব মামলায় দোষী প্রমাণিত হলে আদালত শাস্তি তো দেবেই। সেই সঙ্গে বাজেয়াপ্ত করা হবে দোষীদের সম্পত্তি।
ক্রেতা সুরক্ষা দফতরের তরফে রাজ্য পুলিশের ডি়জি এবং কলকাতার পুলিশ কমিশনারের কাছে চিঠি লিখে বলা হয়েছে, ভাগা়ড়ের মাংস বিক্রির ঘটনায় অভিযুক্তদের নামের তালিকা পাঠানো হোক। নাম পেলে ক্রেতা সুরক্ষা আদালতে স্বতঃপ্রণোদিত মামলা ঠুকে শুনানি শুরু হতে পারে।
সম্প্রতি বজবজের ভাগাড় থেকে মৃত পশুর মাংস শহরের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে পড়েছে বলে শোরগোল শুরু হয়। ট্যাংরা, কাঁকিনাড়া, কল্যাণী, টালিগঞ্জ এবং ধাপার মাংসও একই ভাবে ছড়িয়ে পড়েছে বলে অভিযোগ ওঠে। গত বুধবার ভাগাড় থেকে মৃত পশুর মাংস পাচারের মূল পাণ্ডা বিশ্বনাথ ঘড়ুইকে গ্রেফতার করার পরে জানা যায়, ভাগাড়ের মাংস সরবরাহ করা হত নেপালেও। এখনও পর্যন্ত এই ঘটনায় বিশ্বনাথ, তাঁর সঙ্গী শেখ সিকন্দর-সহ ন’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তবে জামিনে মুক্তি পেয়ে গিয়েছেন নারকেলডাঙা হিমঘরের দুই নিরাপত্তারক্ষী।
মন্ত্রী সাধনবাবু জানান, সব অভিযুক্তেরই নাম চাওয়া হয়েছে। নামগুলো পেলে ক্রেতা সুরক্ষা আদালতে বিচার হবে। খাবারের দোকানে পচা মাংস বিক্রি করাটা চরম অপরাধ। অনেক বাচ্চাও তা খেয়েছে। দোষীদের ছাড়া যাবে না। ‘‘ক্রেতা সুরক্ষা আইনের ১২(১)(ডি) ধারায় মামলা করব আমরা। দোষী প্রমাণিত হলে মাংস বিক্রি করে দোষীরা যে-সম্পত্তি বানিয়েছে, তা ক্রোক করা হবে,’’ বললেন ক্রেতা সুরক্ষা মন্ত্রী।
এ দিনই হাও়ড়া, হুগলি, বর্ধমানের হোটেল রেস্তরাঁগুলিতে অভিযান চালিয়েছে পুরসভা। শুক্রবার বর্ধমান শহরের নানা রেস্তরাঁ, হোটেলের রান্নাঘরে অভিযানে বেশ কিছু অনিয়ম নজরে পড়েছে বলে অভিযোগ। রাধানগর এলাকার এক রেস্তরাঁয় বহু দিনের পুরনো পোস্তবাটা, ছাতা পড়ে যাওয়া খাবার মিলেছে। ঢলদিঘির এক নামী হোটেলে ফ্রিজ থেকে পচা ভেটকি, কালো হয়ে যাওয়া মাংস পাওয়া গিয়েছে। বর্ধমান পুরসভার চেয়ারম্যান স্বরূপ দত্ত বলেন ‘‘খালি চোখে মাংস ভাগাড়ের কি না, বোঝা সম্ভব নয়। আমরা নমুনা পাঠিয়েছি পরীক্ষার জন্য। কিন্তু রান্নাঘরের যা হাল, মনে হয় ওগুলোই ভাগাড়।’’
হুগলির বৈদ্যবাটীর একাধিক রেস্তরাঁয়ও মিলেছে ফ্রিজে জমিয়ে রাখা মাংস, রান্না করা বাসি খাবার। একটি রেস্তরাঁ ‘সিল’ করে দেন পুর-কর্তৃপক্ষ। অন্য একটি রেস্তরাঁর ফ্রিজার ‘সিল’ করা হয়েছে। হাও়ড়ার উলুবে়ড়িয়া স্টেশন রোডেও একাধিক খাবার দোকানে অভিযান চালান পুর কর্তৃপক্ষ। ২০টি হোটেল রেস্তরাঁর বেশ কয়েকটি থেকে বাসি, পচা মাংস বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে বলে দাবি পুরপ্রধান অর্জুন সরকারের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy