Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

গ্রামে বিদ্যুৎ, তবু ক্ষতি বাড়ায় চিন্তা

বিদ্যুতের বকেয়া বিল এবং হুকিং— এই জোড়া ফলায় সংস্থার লোকসানের পরিমাণ নিত্যই বাড়ছে।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১০ ডিসেম্বর ২০১৮ ০১:২৯
Share: Save:

সব বাড়িতে বিদ্যুৎ পৌঁছে দেওয়ার কথা বারবার বলছে তৃণমূল সরকার। ‘সৌভাগ্য’ প্রকল্পে গ্রামাঞ্চলে সাত লক্ষ ২৫ হাজার বিদ্যুৎহীন বাড়িতে আলো দিতে পারার ঘটনাকে ‘নজিরবিহীন সাফল্য’ বলে দাবি করছে তারা। অথচ সেই সাফল্যের আর্থিক প্রতিফলন যে রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার হিসেবের খাতায় দেখা যাবেই, বিদ্যুৎকর্তাদের কেউ সেটা জোর গলায় বলতে পারছেন না। কারণ বিদ্যুতের বকেয়া বিল এবং হুকিং— এই জোড়া ফলায় সংস্থার লোকসানের পরিমাণ নিত্যই বাড়ছে।

সৌভাগ্য প্রকল্পটি কেন্দ্রের। তার মাধ্যমে রাজ্যের ১৮টি জেলার বিদ্যুৎহীন পরিবারে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে আলো। এই প্রকল্পে কেন্দ্রের কাছ থেকে ৬০ শতাংশ ভর্তুকি পাওয়ার কথা। সব মিলিয়ে প্রায় ২৬০ কোটি টাকার মতো। পাশাপাশি ২৫ শতাংশ অর্থ ঋণ নেওয়া হয়েছে বাজার থেকে। বাকি ১৫ শতাংশ টাকা দিয়েছে রাজ্য সরকার। এ ভাবে টাকার সংস্থানের পরে প্রকল্পের আলো ছড়িয়ে দেওয়া গিয়েছে বলে রাজ্য সরকারের দাবি। প্রাপ্য ভর্তুকির দাবি জানিয়ে সৌভাগ্য প্রকল্পের সাফল্যের খতিয়ান পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে কেন্দ্রীয় বিদ্যুৎ মন্ত্রকের কাছে।

কিন্তু এই ‘সাফল্য’-এর পরেও রাতে শান্তিতে ঘুমোতে পারছেন না রাজ্যের বিদ্যুৎকর্তাদের একাংশ। কারণ, গত সাত বছরে বিদ্যুৎকর্তাদের অভিজ্ঞতা হল, গ্রামীণ বিদ্যুদয়নের কাজ যত বেশি এগিয়েছে, বিদ্যুৎ চুরির বহর বেড়েছে পাল্লা দিয়ে। সেই সঙ্গে অনেক জায়গায় কমেছে বিল আদায়ের হার। কোটি কোটি টাকা আর্থিক লোকসানের মুখে পড়েছে রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থা। ব্যাপক লোকসানের ফলে মেটানো যাচ্ছে না বিদ্যুৎকর্মীদের বকেয়া মহার্ঘ ভাতাও।

এই অবস্থায় সৌভাগ্য প্রকল্পের সাফল্যের আলো কোষাগারে পড়বে কি না, সেই বিষয়ে সংশয় আছে এক শ্রেণির বিদ্যুৎকর্তার। সরকারি বিদ্যুৎ পেয়েও জেলার মানুষ যে বিল মেটাচ্ছেন না, তা নিয়ে বিভিন্ন সময়ে সরকারের কাছে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বিদ্যুৎকর্তারা। সম্প্রতি খোদ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় উত্তরবঙ্গে গিয়ে কোচবিহারে প্রশাসনিক বৈঠকে বিদ্যুৎ বিল বকেয়া রাখার প্রবণতা নিয়ে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন। শুধু কোচবিহারেই ১০০ কোটি টাকারও বেশি বিল বকেয়া পড়ে। তার উপরে বীরভূম, নদিয়া, মুর্শিদাবাদ, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনার মতো জেলায় দেদার বিদ্যুৎ চুরি ও বকেয়া বিল তো আছেই। তাই গ্রামবাসীরা বিদ্যুৎ পেলেও সেটা সরকারি কোষাগারে কতটা সৌভাগ্য বয়ে আনবে, সেই বিষয়ে অনেক কর্তাই সংশয়ে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE