গ্রাফিক: তিয়াসা দাস।
কর্মীদের মহার্ঘ ভাতা (ডিএ) সংক্রান্ত মামলায় হলফনামা জমা দেওয়ার সুযোগই আর রইল না রাজ্য সরকারের সামনে। নির্দিষ্ট তারিখে হলফনামা জমা দেয়নি রাজ্য। কেন জমা দেওয়া হল না, রাজ্য প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনাল (স্যাট)-কে তা এত দিন জানানোও হয়নি। বৃহস্পতিবার তাই সরকারের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগ তুলল মামলাকারী সংগঠন। আর রাজ্য জানাল, ডিএ মামলার ফাইলই হারিয়ে গিয়েছে।
কলকাতা হাইকোর্ট গত ৩১ অগস্ট ডিএ মামলার রায় দেয়। ডিএ রাজ্য সরকারের দয়ার দান নয়, তা কর্মীদের অধিকার— জানিয়ে দেয় আদালত। তবে কী হারে ডিএ দেওয়া হবে, বছরে ক’বার দেওয়া হবে— সে সব বিষয় স্যাটে স্থির হবে বলে হাইকোর্ট জানিয়ে দেয়। মামলার নিষ্পত্তি করার জন্য স্যাটকে দু’মাসের সময়সীমাও বেঁধে দেওয়া হয়।
হাইকোর্টের বেঁধে দেওয়া সময়সীমা মেনেই ডিএ মামলার নিষ্পত্তির লক্ষ্যে এগোতে শুরু করেছিল স্যাট। বিচারপতি আর কে বাগ এবং সুবেশ দাসের বেঞ্চ রাজ্য সরকারকে নির্দেশ দিয়েছিল, ২৪ সেপ্টেম্বরের মধ্য হলফনামা জমা দিয়ে ডিএ-র বিষয়ে অবস্থান জানাতে। রাজ্য সরকারের হলফনামার প্রেক্ষিতে জবাবি হলফনামা দেওয়ার জন্য মামলাকারী সংগঠন কনফেডারেশনকে সময় দেওয়া হয়েছিল ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। কিন্তু ২৪ তরিখ রাজ্য সরকার কোনও হলফনামা স্যাটে জমা দেয়নি। ফলে ৩০ তারিখ মামলাকারী সংগঠনও কোনও জবাবি হলফনামা দিতে পারেনি।
আরও পড়ুন: টাকায় টান, বেছে কাজ করার বার্তা পুরসভাকে
আরও পড়ুন: দলের লোককেও রেয়াত নয়, জমি মাফিয়াদের বিরুদ্ধে ফের সরব মমতা
কনফেডারেশনের তরফে সুবীর সাহা বৃহস্পতিবার বললেন, ‘‘রাজ্য সরকার রীতিমতো আদালত অবমাননা করেছে। হলফনামা জমা দেওয়ার জন্য স্যাট যে তারিখ নির্দিষ্ট করে দিয়েছিল, সেই তারিখের মধ্যে হলফনামা জমা দেওয়ায় কোনও সমস্যা থাকতে পারে। সে ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট তারিখে বেঞ্চের সামনে হাজির হয়ে সরকারের আইনজীবীকে জানাতে হবে যে, কী কারণে হলফনামা জমা দেওয়া গেল না। সরকার তো সেটুকুও করেনি। আদালতের নির্দেশকে এই ভাবে অবজ্ঞা করা মানে তো আদালতকে না মানা। সে কথাই জোর দিয়ে তুলে ধরেছেন আমাদের আইনজীবী।’’
যে দিন স্যাট জানিয়েছিল, কবে কোন পক্ষকে হলফনামা জমা দিতে হবে, সেই দিনই বলে দেওয়া হয়েছিল যে, দুই হলফনামার ভিত্তিতে শুনানি হবে ৪ অক্টোবর। সেই অনুযায়ী স্যাটে বৃহস্পতিবার ফের ওঠে মামলাটি। কনফেডারেশনের কৌঁসুলি আমজাদ আলি তীব্র আক্রমণ করেন রাজ্য সরকারকে। রাজ্য সরকারের তরফে স্যাটকে জানানো হয়, ডিএ মামলার ফাইলটাই হারিয়ে গিয়েছে। তাই সময় মতো হলফনামা জমা দেওয়া যায়নি। কিন্তু হলফনামা যে ২৪ তারিখের মধ্যে জমা দেওয়া যাচ্ছে না, তা স্যাটকে জানানো হল না কেন, সে প্রশ্নের কোনও সদুত্তর অবশ্য মেলেনি।
সময় মতো হলফনামা যে হেতু জমা হয়নি, সে হেতু রাজ্যকে আর হলফনামা দেওয়ার সুযোগ দেওয়া উচিত নয় বলে সওয়াল করা হয় কনফেডারেশনের তরফে। বিচারপতি আর কে বাগ এবং সুবেশ দাসের বেঞ্চ সে কথা মেনে নিয়েছে। নতুন করে আর হলফনামা জমা দেওয়ার সুযোগ পাচ্ছে না রাজ্য। স্যাট জানিয়েছে, ১৪ নভেম্বর ফের শুনানি হবে মামলাটির। কনফেডারেশনের আশা, নভেম্বর শেষ হওয়ার আগেই ডিএ মামলার রায় ঘোষণা করবে স্যাট।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy