যখন তিনি স্বমহিমায়, বিরোধীদের ভূরি ভূরি অভিযোগ ছিল তাঁর বিরুদ্ধে। এ বার সেই ভারতী ঘোষ যখন সিআইডি তল্লাশির মুখে, তখন তাঁর ‘অনুপ্রেরণা’ নিয়েই একযোগে প্রশ্ন তুলল বিরোধীরা!
পশ্চিম মেদিনীপুর এবং ঝাড়গ্রামে পুলিশ সুপার থাকার সময়ে ভারতীই আসলে তৃণমূল দলটা চালান, এই মর্মে অভিযোগ ছিল বিস্তর। ক্ষোভ ছিল তৃণমূলের অন্দরেও। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ‘জঙ্গলমহলের মা’ বলে ডেকে ভারতী তখন প্রবল প্রতাপশালী! এখন সুযোগ আসতেই ‘মা-মেয়ে’র পুরনো সম্পর্ক নিয়ে বিরোধীরা কটাক্ষ ফিরিয়ে দিচ্ছে।
আয়ের সঙ্গে সঙ্গতিহীন সম্পত্তি রাখার অভিযোগে প্রাক্তন আইপিএস ভারতীর কলকাতার বাড়িতে সিআইডি তল্লাশি হয়েছে শুক্রবার। তার প্রেক্ষিতেই বাম পরিষদীয় নেতা সুজন চক্রবর্তীর মন্তব্য, ‘‘যিনি জঙ্গলমহলের মা বলেছিলেন, তিনি এখন তল্লাশির মুখে। যদি অন্যায় ভাবে সম্পত্তি করে থাকেন, তা হলে ব্যবস্থা নিন। কিন্তু কার অনুপ্রেরণায়, কোন আমলে এ সব হল, সেটা বলবেন? তাঁদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে কি?’’ পাহাড়ের বিমল গুরুঙ্গও যে একদা মুখ্যমন্ত্রীকে ‘মা’ সম্বোধন করে এখন বিপাকে পড়েছেন, তা-ও মনে করিয়ে দিয়েছেন সুজনবাবুরা।
বিজেপি-র নেতারা আবার এই অবসরে রাজ্যের বর্তমান পুলিশ-কর্তা এবং আমলাদের সতর্ক করে দিচ্ছেন। দলের কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক কৈলাস বিজয়বর্গীয়ের কথায়, ‘‘এই ঘটনার পরে বাংলার আমলারা বুঝে নিন, কী করবেন! মুখ্যমন্ত্রী যদি ভারতী ঘোষের বাড়িতে তল্লাশি করাতে পারেন, তা হলে এখন যাঁরা খড়ম মাথায় নিয়ে আছেন, তাঁদের কী হবে বুঝে নিন!’’ বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি ও খড়গপুরের বিধায়ক দিলীপ ঘোষ মনে করিয়ে দিয়েছেন, এই ভারতীই তাঁর বিরুদ্ধে খুনের মামলা দায়ের করতে তৎপর হয়েছিলেন। অস্ত্র আইনে অভিযোগ আনা হয়েছিল তাঁর বিরুদ্ধে। দিলীপবাবুর বক্তব্য, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর অনুপ্রেরণায় এত কিছু করার পরে এখন সব দায় তাঁর একার? মুখ্যমন্ত্রী দায় ঝে়ড়ে ফেললেন! এখনও যাঁরা পদে থেকে অনুপ্রাণিত হতে চাইছেন, তাঁরাও বুঝে-সুঝে চলুন!’’
কংগ্রেসের বিধায়ক এবং বিরোধী দলের মুখ্য সচেতক মনোজ চক্রবর্তীরও প্রশ্ন, ‘‘মেয়ে এত কিছু করে ফেলল আর মা কিছুই জানতে পারলেন না? মুখ্যমন্ত্রীর নীতিই হচ্ছে, কাজের বেলায় কাজী। কাজ ফুরোলে পাজি! কিষেণজি, ছত্রধর মাহাতো, বিমল গুরুঙ্গ, ভারতী ঘোষ— তালিকা বাড়ছে!’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy