Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

দু’পক্ষের স্নায়ুযুদ্ধ পাহাড়ে

বিনয় তামাঙ্গ, অনীত থাপার সঙ্গে বিমল গুরুঙ্গের এই স্নায়ুযুদ্ধের দিকে তাকিয়ে গোটা পাহাড়। টানা ৩ মাসের বেশি বন্‌ধে জেরবার আম-পাহাড়বাসী চাইছেন, শেষ হোক স্নায়ুযুদ্ধ। খুলুক পাহাড়।

কিশোর সাহা ও সৌমিত্র কুণ্ডু
শিলিগুড়ি ও কার্শিয়াং শেষ আপডেট: ১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০৩:৩২
Share: Save:

এক দল নিয়মিত সভা-মিছিল করে পাহাড়ের মানুষের ভয় ভাঙাতে চাইছে। অন্য জন একা দার্জিলিং থেকে দূরে আত্মগোপন করে থেকে সেই ভয়টাই জিইয়ে রাখতে চাইছেন। বিনয় তামাঙ্গ, অনীত থাপার সঙ্গে বিমল গুরুঙ্গের এই স্নায়ুযুদ্ধের দিকে তাকিয়ে গোটা পাহাড়। টানা ৩ মাসের বেশি বন্‌ধে জেরবার আম-পাহাড়বাসী চাইছেন, শেষ হোক স্নায়ুযুদ্ধ। খুলুক পাহাড়।

দোকানপাট একটু একটু করে কোথাও খুলছে। রবিবার কার্শিয়াঙের মোটর স্ট্যান্ডে অনীতের সভা ছিল। তখন এলাকার কয়েকটি দোকান খোলে। কালিম্পং-দার্জিলিঙের আনাচেকানাচেও কিছু আনাজপাতির দোকান খোলে। অনেকে ফুটপাথে কাপড় পেতেও দোকান বসাচ্ছেন। সব থেকে স্বাভাবিক অবস্থা মিরিকের। সেখানে এ দিন হাটও বসে। জিটিএ-র দফতরেও কর্মী সমাগম বাড়ছে। কনভয় করে ছোট গাড়ি চলাচলও শুরু হয়েছে পাহাড়ে। নাম না করে পাহাড়ের কেউ কেউ বলছেন, ‘‘স্বাভাবিক হতেই তো চাই। কিন্তু সকলেই ভয় পাচ্ছে হাঙ্গামার।’’ এই গোলমালের আশঙ্কাকে জিইয়ে রেখেই প্রাসঙ্গিক থাকতে চাইছেন গুরুঙ্গ। তাঁর এখন একটাই লক্ষ্য, তিনি ছাড়া কেউ যে পাহাড়ে বন্‌ধ পুরো তুলতে পারবে না, সেটা প্রমাণ করা। আর তিনি বন্‌ধ তুলবেন রাজ্য ত্রিপাক্ষিক বৈঠকে রাজি হলে।

রবিবার এক বার্তায় গুরুঙ্গ জানান, দেরিতে হলেও ত্রিপাক্ষিক বৈঠক ডাকতেই হবে রাজ্যকে। সেই দিনক্ষণ ঘোষণা হলেই কেন্দ্রের কাছে চিঠি পাঠিয়ে সেখানে যোগ দেওয়া নিশ্চিত করতে চান গুরুঙ্গ। তত দিন পাহাড়কে স্বাভাবিক হতে দিতে চান না তিনি। তাই বিনয়-অনীতের বিরুদ্ধে লাগাতার প্রচার চালিয়ে যেতে নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। এমনকী, অন্য দলগুলির কয়েক জন নেতাকেও এই কাজে লাগাতে বলেছেন। যেমন অনীতের বিরুদ্ধে বেআইনি সম্পত্তির অভিযোগ তুলে জিএনএলএফ কার্শিয়াং মহকুমার সভাপতি নিমা লামা বলেছেন, ‘‘আমরাও চাই আলোচনার মাধ্যমে জনজীবন স্বাভাবিক হোক। কিন্তু, যাঁকে-তাঁকে নেতা বলে মানব না।’’ জাপের নেতা হরকা বাহাদুরও ত্রিপাক্ষিকের পক্ষে সওয়াল করেন। এ দিন বিকেলে দার্জিলিঙের চকবাজারে কেউ বা কারা পোস্টার দিয়ে স্কুল-কলেজ না খোলার হুমকি দেয় বলে অভিযোগ। কার্শিয়াং শহরেও এমন পোস্টার দেখা গিয়েছে।

জমি বাঁচাতে বিনয়-অনীতও রাজ্যকে বোঝাতে চাইছেন, প্রশাসনিক পর্যায়ে হলেও ত্রিপাক্ষিক বৈঠকের প্রস্তাব দিক তারা। এ দিন সভায় অনীত বলেন, ‘‘কেউ অন্ধকারে পোস্টার দিয়ে ভয় দেখানোর চেষ্টা করছে। দিনের আলোয় সকলের সামনে বলার সাহস নেই।’’ মুখে বললেও অনীত জানেন, ভয় কাটাতে এই কথাটুকু যথেষ্ট নয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE