বিশ্বভারতীর উপাচার্য সুশান্ত দত্তগুপ্তের বিরুদ্ধে যে-সব অভিযোগ উঠেছে, প্রাথমিক ভাবে সেগুলি তদন্তযোগ্য বলে মনে করছে কেন্দ্রীয় সরকার। এই অবস্থায় ওই সব অভিযোগ নিয়ে গড়া অনুসন্ধান কমিটির কাজকর্মের উপরে স্থগিতাদেশ চেয়ে উপাচার্য কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন।
হাইকোর্টে দায়ের করা মামলায় উপাচার্য প্রশ্ন তুলেছেন, তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের বিষয়ে অনুসন্ধান করার এক্তিয়ার ওই কমিটির আছে কি? বুধবার বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তীর আদালতে সেই মামলার শুনানি ছিল। পৃথক অনুসন্ধান কমিটির কোনও প্রয়োজনই নেই বলে আদালতে সওয়াল করেন উপাচার্যের কৌঁসুলি সৌরেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়। তাঁর যুক্তি, বিশ্বভারতী একটি স্বশাসিত সংস্থা। তাঁর মক্কেলের বিরুদ্ধে যে-সব অভিযোগ উঠেছে, সেগুলি খতিয়ে দেখতে ওই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব কমিটিই রয়েছে। তাই এ ক্ষেত্রে আলাদা করে কোনও কমিটি গঠনের দরকার নেই। ওই কৌঁসুলির আবেদন, এই পরিস্থিতিতে অনুসন্ধান কমিটির কাজে স্থগিতাদেশ জারি করুক উচ্চ আদালত।
সূত্রের খবর, উপাচার্য সুশান্তবাবুর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়ের কাছে অভিযোগ জানান বিজেপি সাংসদ সুরেন্দ্র সিংহ অহলুওয়ালিয়া, কংগ্রেস সাংসদ প্রদীপ ভট্টাচার্য, তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায় এবং আরও বেশ কয়েক জন। উপাচার্যের বিরুদ্ধে যে-সব অভিযোগ আনা হয়েছে, তার মধ্যে আছে প্রশাসনিক অদক্ষতা এবং আর্থিক অনিয়ম। ওই সব অভিযোগ নিয়েই অবসরপ্রাপ্ত এক বিচারপতি-সহ তিন সদস্যের অনুসন্ধান কমিটি গড়া হয়। সেই কমিটি অনুসন্ধান করে গত ২৬ এপ্রিল রাষ্ট্রপতির কাছে একটি রিপোর্ট জমা দেয়। গত ১৬ জুন রাষ্ট্রপতিকে একটি চিঠিও দেয় ওই কমিটি। সেই চিঠিতে বলা হয়, ওই সব অভিযোগ তদন্ত করার মতো বলে মনে করছে অনুসন্ধান কমিটি। কেন তদন্ত হবে না এবং সেই ব্যাপারে উপাচার্যের কাছে ‘শো-কজ’ বা কারণ দর্শানোর নোটিস পাঠানোর অনুমতি রাষ্ট্রপতি দেবেন কি না, তা-ও জানতে চাওয়া হয় কমিটির চিঠিতে।
এ রাজ্যে কেন্দ্রের অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল কৌশিক চন্দ এ দিন মামলার সওয়াল করতে গিয়ে জানান, বিশ্বভারতী স্বশাসিত সংস্থা হলেও ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিদর্শক দেশের রাষ্ট্রপতি। তিনি উপাচার্যকে নিয়োগ করেছেন এবং তিনিই ওই অনুসন্ধান কমিটি গড়ার অনুমোদন দিয়েছেন। ওই কমিটিই রাষ্ট্রপতিকে জানিয়েছে, উপাচার্যের বিরুদ্ধে যে-সব অভিযোগ উঠেছে, সেগুলির ব্যাপারে তদন্ত হতে পারে বলে প্রাথমিক ভাবে মনে হয়েছে তাদের। তা ছাড়া উপাচার্যকে এখনও কারণ দর্শানোর নোটিস দেওয়া হয়নি। তাঁর বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থাও নেওয়া হয়নি। দু’পক্ষের সওয়াল শুনে বিচারপতি জানান, এই মামলার পরবর্তী শুনানি হবে ৭ জুলাই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy