মরিয়া: সাসপেন্ড হয়েও পুরচেয়ারম্যানের চেয়ারে আনিসুর রহমান। —নিজস্ব চিত্র।
পুর চেয়ারম্যান নির্বাচন ঘিরে বুধবারই অধিকারী পরিবারের সঙ্গে জেলার যুব তৃণমূল নেতা আনিসুর রহমানের বিরোধ প্রকাশ্যে এসেছিল। চব্বিশ ঘণ্টা পরে তাতে প্রলেপ পড়া দূর অস্ত, আরও বেআব্রু হল দু’পক্ষের সংঘাত। দল ৬ মাসের জন্য সাসপেন্ড করার পরেও এ দিন সদলবদলে পুরভবনে এলেন আনিসুর। চেয়ারম্যানে চেয়ারে বসেই হুঁশিয়ারি দিলেন, ‘‘আমি মনে করি আমি তৃণমূলের চেয়ারম্যান। প্রয়োজনে জেল থেকেও পাঁশকুড়া পুরসভার চেয়ারম্যান হিসেবে কাজ করে যাব।’’
আনিসুরের এ সব মন্তব্যে অবশ্য গুরুত্ব দিচ্ছে না অধিকারী শিবির। তৃণমূলের পূর্ব মেদিনীপুর জেলা সভাপতি শিশির অধিকারী বলছেন, ‘‘উনি অনেক কিছুই করতে পারেন। যা পারেন করে নিন।’’ তাঁর আরও সংযোজন, ‘‘দলীয়ভাবে ঘটনার তদন্ত করা হচ্ছে।’’
১৮ আসনের পাঁশকুড়া পুরসভার ভোটে ১৭টি আসনেই জয় পেয়েছে তৃণমূল। একটি আসন বিজেপি-র দখলে গিয়েছে। তবে প্রায় নিরঙ্কুশ এই জয়ও গোষ্ঠীকোন্দলে দাঁড়ি টানতে পারেনি। পুর-চেয়ারম্যান হওয়ার দৌড়ে প্রথম থেকেই ছিলেন অধিকারী পরিবারের বিরোধী হিসেবে পরিচিত আনিসুর। যদিও বুধবার তমলুকে চেয়ারম্যান নির্বাচন সভায় দলের তরফে চিঠি দিয়ে চেয়ারম্যান হিসেবে নন্দকুমার মিশ্রের নাম জানানো হলে কোন্দল বেআব্রু হয়ে পড়ে। চেঁচামেচি শুরু করেন আনিসুর অনুগামীরা। শেষ পর্যন্ত ভোটাভুটিতে ১০-৮ ব্যবধানে জিতে যান আনিসুর।
আরও পড়ুন:গবেষণায় চুরি ধরবে প্রযুক্তি-গোয়েন্দা
দলের নির্দেশ অমান্য করায় বুধবার রাতেই আনিসুরের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ করার কথা জানিয়েছেন তৃণমূলের জেলা সভাপতি শিশিরবাবু। সেই সূত্রেই এ দিন আনিসুর বলেন, ‘‘কাচের ঘরে বসে ঢিল ছুড়বেন না। ৩৪ বছরে ৬০টি মামলায় বেকসুর খালাস হয়ে বেরিয়ে এসেছি। আমাকে জেলে পুরবেন!’’ তাঁকে খুনের চক্রান্ত করা হচ্ছে বলেও সংবাদমাধ্যমে অভিযোগ করেন আনিসুর। তবে পুলিশে অভিযোগ জানাননি।
দলের সর্বোচ্চ নেতৃত্ব যাঁকে পাঁশকুড়ার পুরপ্রধান বেছেছেন, সেই নন্দকুমারবাবুও বসে নেই। তৃণমূলের এক সূত্রে খবরের, বুধবার রাতেই গোটা ঘটনা নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে ফোনে কথা হয় তাঁর। বৃহস্পতিবার নবান্নে এসেও তিনি বিষয়টি নিয়ে কথা বলেন। এ প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হলে নন্দকুমারবাবুর জবাব, ‘‘এটা দলের অভ্যন্তরীণ বিষয়। বাইরে কিছু বলব না। আর দল তো ওঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছেই।’’ আজ, শুক্রবার কালীঘাটে তৃণমূলের কোর কমিটির বৈঠক থেকে পাঁশকুড়ার জট কাটানো নিয়েও দিকনির্দেশ আসতে পারে বলে তৃণমূলের এক সূত্রে খবর।
আনিসুর অবশ্য এখনও আস্থা রাখছেন দলনেত্রীর উপর। তিনি বলেন, ‘‘নেত্রীর কাছে আমার একটাই আর্জি— দল আমার বিরুদ্ধে যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তা প্রত্যাহার করা হোক।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy