জয়ের পরে আনিসুর রহমান। ছবি: পার্থপ্রতিম দাস
কাউন্সিলরদের ভোটে জিতে পাঁশকুড়া পুরসভার চেয়ারম্যান হয়েও দল থেকে সাসপেন্ড হতে হল তৃণমূলের যুব নেতা আনিসুর রহমানকে। দলের নির্দেশ অমান্য করার অভিযোগে বুধবার আনিসুরকে ছ’বছরের জন্য সাসপেন্ডের কথা জানান পার্থ চট্টোপাধ্যায়। এই নির্দেশের পরেই তুলে নেওয়া হয় আনিসুরের নিরাপত্তারক্ষীও।
আনিসুরের বিরুদ্ধে বিজেপির সঙ্গে হাত মেলানোর অভিযোগ তুলে এ দিন নবান্নে পার্থবাবু বলেন, ‘‘দলীয় নির্দেশ অমান্য করে বিজেপির সঙ্গে হাত মিলিয়ে আনিসুর চেয়ারম্যান হয়েছেন। তাই ওঁকে দল থেকে ৬ বছরের জন্য সাসপেন্ড করা হল।’’ আনিসুর অবশ্য বলেন, ‘‘সাসপেন্ডের কথা জানি না। আমি তৃণমূলেরই চেয়ারম্যান।’’ শিশির-শুভেন্দু অধিকারীদের বিরুদ্ধেও তোপ দেগে আনিসুর বলেন, ‘‘এখানে পরিবারতন্ত্র চলবে না। অধিকারী পরিবারের বিরুদ্ধে আমার লড়াই চলবে।’’
এক সময় সিপিএমের যুব সংগঠন ডিওয়াইএফ-এর পাঁশকুড়া জোনাল কমিটির সম্পাদক ছিলেন আনিসুর। ২০০৭ সালে নন্দীগ্রামে জমিরক্ষা আন্দোলনের সময় তৃণমূলে যোগ দেন। ২০১২ সালে পাঁশকুড়া পুরসভার কাউন্সিলর হন। এ বারেও প্রথম থেকেই চেয়ারম্যান হওয়ার দৌড়ে ছিলেন অধিকারী পরিবারের না-পসন্দ আনিসুর।
পূর্ব মেদিনীপুরের ১৮ আসনের পাঁশকুড়া পুরসভায় এক জন বিজেপি কাউন্সিলর। বাকিরা সবাই তৃণমূলের। এ দিন চেয়ারম্যান নির্বাচনের আগে তৃণমূলের সহিদুল ইসলাম খান দলের জেলা সভাপতি শিশিরবাবুর পাঠানো খামবন্দি চিঠি নিয়ে আসতেই নাটকের শুরু। আনিসুর উত্তেজিত হয়ে সহিদুলকে বলেন, ‘‘আপনি দলের কে? চিঠি দিলে দলের নেতা দেবেন।’’ এর মধ্যেই এক কাউন্সিলর চিঠি খুলে চেয়ারম্যান হিসেবে নন্দকুমার মিশ্রের নাম থাকার কথা জানাতেই ক্ষোভ বাড়ে। দলের নির্দেশ অমান্য করে আনিসুর-অনুগামী কাউন্সিলররা চেঁচামেচি শুরু করেন। মহকুমাশাসক শুভ্রজ্যোতি ঘোষের উপস্থিতিতে নতুন কাউন্সিলরদের শপথগ্রহণের পর আরও গোলমাল হয়। পরে গোপন ব্যালটে ভোট নেওয়া হয়। ১০-৮ ভোটে আনিসুর জিতে যান। পার্থবাবুদের অভিযোগ, বিজেপি কাউন্সিলর সিন্টু সেনাপতির সাহায্যেই জিতেছেন আনিসুর।
দলের নির্দেশ অমান্য করায় আনিসুরের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপের কথা জানিয়ে জেলা সভাপতি শিশিরবাবু বলেন, ‘‘ওঁর বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ করা হবে। চেয়ারম্যানের পদ থেকেও হটানো হবে।’’ ভোটের ক’ঘণ্টা পরে পাঁশকুড়া থানার ওসি-কে
বদলি করে জেলা পুলিশ লাইনে ক্লোজ করা হয়। পুলিশ সূত্র জানায়, আনিসুরের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হওয়াতেই এই বদলি। জেলার এসপি অলোক রাজোরিয়া বলেন, ‘‘প্রশাসনিক কারণে ওসি-কে সরানো হয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy