গল্পের ‘সোনার কেল্লা’য় ছিল হাজার হাজার ডক্টর হাজরা! সোনার বাংলায় বিজেপি-র কেল্লা ফতে হবে কি না, ঠিক নেই! তবে জয়সলমেড়ে যদি এক মুকুল গিয়ে থাকে, তো বাংলার বিজেপি-তে ফুটে উঠছেন একের পর এক মুকুল!
এক জনের পদবি রায়। অদ্যবধি তিনিই সব চেয়ে বিখ্যাত! বাকিরা চৌধুরী, ভট্টাচার্য এবং নন্দী। বিজেপি-র সংগঠনের মধ্যে এঁদের তেমন বিকাশ এখনও ঘটেনি। তবে নেতাদের কানে কানে গুঞ্জন বিস্তর!
প্রথম মুকুল হলেন তৃণ-মুকুল। জনশ্রুতি আছে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জনপ্রিয়তা এবং মুকুল রায়ের সাংগঠনিক জাদুতেই রাজ্যে ধীরে ধীরে জোড়া ফুল ফুটে উঠেছিল। সেই মুকুলকে কাছে পেয়ে একই জাদুতে এখন পদ্ম ফোটার আশায় আছেন গেরুয়া শিবিরের নেতারা। মুকুল রায়কে তাঁরা তাই পঞ্চায়েত নির্বাচনী কমিটির আহ্বায়ক করেছেন। তাঁর হাত ধরেই রবিবার মালদহ থেকে দু’শো এবং বনগাঁ থেকে ২০ জন তৃণমূল ছেড়ে বিজেপি-তে যোগ দিয়েছেন। উলুবেড়িয়ায় গিয়ে এ দিনই সেই মুকুল দাবি করেছেন, একটি অর্থলগ্নি সংস্থার মামলায় সিবিআই ‘গুটি গুটি পায়ে’ রাজ্যের এক ‘হেভিওয়েট’ মন্ত্রীর দিকে এগিয়ে আসছে!
দ্বিতীয় মুকুলের আমদানি উত্তরপ্রদেশ থেকে। রাজ্যের ২৯৪টি বিধানসভা কেন্দ্রের প্রতিটির জন্য এক জন করে বিস্তারক দিয়েছে বিজেপি। তাঁদের প্রদেশ প্রমুখের দায়িত্ব পেয়েছেন রসায়নে পিএইচডি মুকুল। বঙ্গবাসীর মনের সঙ্গে বিজেপি-র রসায়ন ঘটাতে চষে বেড়াচ্ছেন জেলায় জেলায়। দুই মুকুলের মধ্যে কোন মুকুল আগে ফুটবে? প্রশ্ন শুনে অবাক উত্তরপ্রদেশের নেতা অবশ্য বলছেন, ‘‘আমি তো বিস্তারকদের দায়িত্বে! আর মুকুল রায়কে পঞ্চায়েতের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। দু’টো তো ভিন্ন ক্ষেত্র!’’
আরও পড়ুন: কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর বৈঠকে নেই শীর্ষ আমলারা
তৃতীয় মুকুলকে নিয়ে আবার বিভ্রান্তির গল্প আছে! গল্পের সোনার কেল্লার অবস্থানের মতো! কৈলাস বিজয়বর্গীয়, শিবপ্রকাশের মতো কেন্দ্রীয় নেতারা কলকাতায় এলে নাকি চোখে পড়ে ‘ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ কলেরা অ্যান্ড এন্টেরিক ডিজিজেস’ (নাইসেড)-এর এমেরিটাস বিজ্ঞানী ডাক্তার এম কে ভট্টাচার্যকে। বেলেঘাটার আইডি হাসপাতালে নাইসেডের দফতরে তাঁর কার্যালয়। বিজেপি নেতারা তাঁর পুরো নাম জানেন, মুকুলকুমার ভট্টাচার্য। তিনি বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি হতে চান, এমনও শুনেছেন দলের কেউ কেউ! কিন্তু এম কে স্বয়ং বলছেন, ‘‘আমি তো মুকুল নই! আমার নাম মিহিরকুমার ভট্টাচার্য। বিজেপি-র ব্যাপারে আমি কিছু জানিও না!’’
চতুর্থ মুকুল ২৩ বছরের যুবক। ঝাড়গ্রাম বিধানসভার বিস্তারক মুকুল নন্দী। বাড়ি মুর্শিদাবাদের হালালপুরে। ভোকেশনাল কোর্সে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করেই বিস্তারক। কলেজের লেখাপড়া? নবীন মুকুলের জবাব, ‘‘এখন সংগঠনেই বেশি জোর দিয়েছি। উচ্চ মাধ্যমিকের পরে আর কলেজে যাইনি।’’
চার মুকুলের কাহিনিতে ম ম করছে পদ্ম শিবির। জোড়া ফুল শিবির অবশ্য হাসছে। বিশ্বকবির কথা একটু পাল্টে নিয়ে তাদের মনের কথা— পঞ্চায়েতের ফল বেরোবে যে দিন, সে দিনই তো সকল মুকুল যাবে ঝরে!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy