মৃত ছেলে কোলে কাজল। ছবি:দেবরাজ ঘোষ
কোলে বছর দেড়েকের ছেলে। হন্তদন্ত হয়ে খড়্গপুর গ্রামীণ থানায় ঢুকলেন এক তরুণী। কর্তব্যরত পুলিশকর্মীকে দেখেই কান্নায় ভেঙে পড়লেন। ধরা গলায় জানালেন, জায়ের উপর রাগ করে শিশুপুত্রকে শ্বাসরোধ করে খুন করেছেন তিনি। নিজেও মরতে গিয়েছিলেন। কিন্তু পারেননি।
রবিবার দুপুরে কাঁটাগেড়িয়া গ্রামের তরুণী কাজল হেমব্রমের এই কথা শুনে হতভম্ব হয়ে গিয়েছিলেন পুলিশকর্মীরাও। অনেক বুঝিয়ে কাজলকে শান্ত করার পর তাঁরা লক্ষ করেন, কোলের শিশু নড়ছে না। সন্দেহ হওয়ায় পুলিশকর্মীরা দেড় বছরের দীপকে খড়্গপুর মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে চিকিৎসকেরা দীপকে মৃত ঘোষণা করার পরে দেহ ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়। খড়্গপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ওয়াই রঘুবংশী বলেন, “অভিযোগ হয়নি। ওই মহিলাকে আটক করেছি। জায়ের সঙ্গে ঝগড়া হয়েছিল বলে দাবি করেছেন উনি। আমরা তদন্ত করছি।” কাজলের স্বামীকেও ডেকে পাঠিয়েছে পুলিশ।
স্থানীয় সূত্রে খবর, বছর আড়াই আগে খড়্গপুর গ্রামীণ থানার সাঁকোয়ার বাসিন্দা কাজলের সঙ্গে কাঁটাগেড়িয়ার বাপি হেমব্রমের বিয়ে হয়। পেশায় দিনমজুর বছর সাতাশের বাপি এবং তাঁর দাদা ময়রা এলাকায় ভাল ফুটবল খেলোয়াড় হিসাবে পরিচিত। পুলিশ সূত্রের খবর, কাজল সন্দেহ করতেন, বাপির সঙ্গে তাঁর বৌদি সোমবারির সম্পর্ক রয়েছে। এ নিয়ে দুই জায়ের অশান্তি চলছিল। শনিবার বাপি এবং ময়রা জেলার অন্যত্র খেলতে গিয়েছিলেন। বাড়িতে ছেলে দীপকে নিয়ে ছিলেন কাজল। সকালে কাজল তাঁর একটি বাসন সোমবারির বা়ড়িতে দেখে চটে যান। ফের অশান্তি শুরু হয়।
খানিক পরে জা এবং শাশুড়ি শান্তি হেমব্রম মাঠের কাজে চলে যান। পুলিশকে কাজল জানিয়েছেন, এরপরই রাগের চোটে তিনি গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। কিন্তু ব্যর্থ হয়ে শিশুপুত্রের মুখে কাপড় চেপে ধরেন। বেলা ১১টা নাগাদ স্থানীয়রা দেখেন, ছেলেকে কোলে নিয়ে কাজল গ্রাম থেকে বেরিয়ে যাচ্ছেন। তখনও কেউ বোঝেননি কাজল কী কাণ্ড ঘটিয়েছেন।
আরও পড়ুন: ধর্ষক কে, ‘চিনতেই পারে না’ নাবালিকারা!
কাজলের কথায়, “জায়ের সঙ্গে ঝগড়া হয়েছিল। তাই আমি নিজেই ছেলেকে মেরেছি। জা বলেছিল আমার স্বামীকে নিয়ে নেবে। তাই মাথা ঠিক রাখতে পারিনি।” যদিও জা সোমবারি বলেন, “আমি তো মজা করে বলেছিলাম, সত্যিই তোর স্বামীর সঙ্গে চলে যাব। কিন্তু এ জন্য কেউ নিজের ছেলে খুন করে!”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy