Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
Smuggling

ও-পারে মায়ের ঘরে ফেরার মুখে ধৃত পাচার-কন্যে

এক হাজার টাকায় যে-ভারতীয় দালাল সোহিনীকে বাংলাদেশে পৌঁছে দেওয়ার ভার নিয়েছিল, সেই তারিকুল গাজিকেও গ্রেফতার করা হয়েছে।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৯ অগস্ট ২০২০ ০৫:০৯
Share: Save:

মা অসুস্থ। খবর পেয়ে রবিবার দুপুরের পরে বেঙ্গালুরু থেকে বিমানে কলকাতায় আসেন বাংলাদেশের গয়াবান্দার বাসিন্দা সোহিনী (ছদ্মনাম)। চেনা ট্যাক্সিচালককে ফোন করে ডেকে নেন। বসিরহাটে পৌঁছতে রাত হয়ে যায়। হোটেলে জায়গা না-পেয়ে চালকের সঙ্গে রাতটা কাটিয়ে দেন ট্যাক্সিতেই। সোমবার সকালে প্রথমে হাকিমপুর এব‌ং পরে বিথারি ঘুরে সীমান্ত টপকে বাংলাদেশে যেতে গিয়ে ধরা পড়ে যান বিএসএফ বা সীমান্তরক্ষী বাহিনীর হাতে।

এক হাজার টাকায় যে-ভারতীয় দালাল সোহিনীকে বাংলাদেশে পৌঁছে দেওয়ার ভার নিয়েছিল, সেই তারিকুল গাজিকেও গ্রেফতার করা হয়েছে। তার বাড়ি উত্তর ২৪ পরগনার স্বরূপনগরে। সোহিনী ও তারিকুলকে স্বরূপনগর থানার হাতে তুলে দিয়েছে বিএসএফ। সোহিনীর সঙ্গে ভারতীয় ৬১ হাজার টাকার সোনার গয়না ছিল।

সোহিনীর কাহিনি শুনে বিএসএফ-কর্তারা হতবাক। বাহিনী জেনেছে, যে-সব বড় ‘গ্যাং’ বা দল বাংলাদেশ থেকে মেয়েদের ভারতের বিভিন্ন শহরে পাচার করে দেহ ব্যবসায় নামিয়ে দেয়, তারিকুল তেমনই একটি চক্রের সদস্য। কীর্তি নামে যে-যুবক রবিবার ১০ হাজার টাকায় সোহিনীকে কলকাতা বিমানবন্দর থেকে ট্যাক্সিতে বসিরহাটে পৌঁছে দেয়, একসঙ্গে ট্যাক্সিতে রাত্রিবাস করে পরের দিন হাকিমপুরে আলমগির গাজি নামে এক যুবকের কাছে নিয়ে যায়, সে-ও চক্রের সঙ্গে যুক্ত। তাদের চালনা করে চক্রের চাঁইয়েরা, যারা চিরকালই আড়ালে থেকে যায়। তারিকুল জেরায় জানায়, আলমগির এবং লালু নামে এক যুবক সোহিনীকে ও-পারে পৌঁছে দেওয়ার বরাত দিয়েছিল তাকে।

সোহিনী বাহিনীকে জানান, ২০১৯ সালের জুলাইয়ে পাচার চক্রের
পাল্লায় পড়ে রূপা নামে এক যুবতীর সঙ্গে তিনি বেনাপোল-পেট্রাপোল সীমান্ত টপকে ভারতে ঢোকেন। বনগাঁয় এক মাস, কলকাতার সোনাগাছিতে ১৫ দিন থাকেন তাঁরা। তার পরে বেঙ্গালুরুর রোশননগরে নিয়ে গিয়ে তাঁদের দেহ ব্যবসায় নামানো হয়। পেটের দায়ে সোহিনীর মতো অনেকে বাধ্য হয়েই ভারতে এসে দেহ ব্যবসায় নামেন।

বিএসএফের জেরায় সোহিনী জানান, ২০১৯-এর অক্টোবরে রোশন নামে এক যুবকের সঙ্গে তাঁর পরিচয় হয় বেঙ্গালুরুতে। সম্পর্ক গড়ে ওঠে এবং ডিসেম্বরে দু’জনে পালিয়ে বেঙ্গালুরুরই অন্য এলাকায় রোশনের বন্ধুর ফ্ল্যাটে প্রায় আট মাস থাকেন। কোনও ভারতীয় পরিচয়পত্র ছাড়াই।

সম্প্রতি মায়ের অসুস্থতার খবর পেয়ে রোশনকে বুঝিয়ে কিছু দিনের জন্য বাংলাদেশে মায়ের কাছে ফিরতে চান সোহিনী। জানান, পাচার চক্রের সাহায্যে তিনি ভারতে ঢুকে রোশনের কাছে ফিরে আসবেন। উড়ানের টিকিট কেটে দেন রোশনই।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Smuggling Bangladesh
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE