আইনে আদালতের হস্তক্ষেপের ব্যবস্থা নেই। তাই পুজো উদ্যোক্তাদের অনুদান দেওয়ার বিষয়ে হস্তক্ষেপ করতে চায় না কলকাতা হাইকোর্ট।
পুজো উদ্যোক্তাদের সরকারি অনুদানের বিরুদ্ধে জনস্বার্থ মামলার নিষ্পত্তি করতে গিয়ে হাইকোর্টের ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি দেবাশিস করগুপ্ত ও বিচারপতি শম্পা সরকারের ডিভিশন বেঞ্চ বুধবার এ কথা জানিয়ে দিয়েছে। ডিভিশন বেঞ্চ মনে করে, অনুদানের টাকা খরচের বিষয়টি পুরোপুরি রাজ্য আইনসভার এক্তিয়ারভুক্ত। পুজো অনুদান দেওয়ার উপরে আজ, বৃহস্পতিবার পর্যন্ত স্থগিতাদেশ জারি করেছিল ডিভিশন বেঞ্চ। এ দিন তারা এই রায় দেওয়ায় ওই অনুদানের উপরে আর স্থগিতাদেশ বলবৎ থাকছে না বলে জানান রাজ্য প্রশাসনের এক কর্তা। তিনি জানান, এর ফলে অনুদানে বাধা রইল না।
রাজ্যের ২৮ হাজার নথিভুক্ত ক্লাবে পুজোর জন্য প্রত্যেককে ১০ হাজার টাকা হিসেবে মোট ২৮ কোটি টাকা অনুদান দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় রাজ্য সরকার। সেই সিদ্ধান্ত খারিজের আবেদন জানিয়ে ১৯ সেপ্টেম্বর জনস্বার্থে মামলা করেছিলেন সৌরভ দত্ত নামে দুর্গাপুরের এক বাসিন্দা-সহ দু’জন। মামলার আবেদনে বলা হয়, দুর্গাপুজোয় বিশেষ একটি ধর্মীয় সম্প্রদায়কে অনুদান দিলে তা দেশের সংবিধানকে আঘাত করে। বিশেষ কোনও ধর্মীয় সম্প্রদায়কে এ ভাবে অনুদান দিয়ে উৎসাহিত করাটা পুরোপুরি সংবিধান-বিরোধী। এ দিন রায় ঘোষণার পরে সৌরভ বলেন, ‘‘রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে যত শীঘ্র সম্ভব সুপ্রিম কোর্টে যাব।’’
হাইকোর্টের রায়ে নবান্নে স্বস্তির হাওয়া। ‘‘কিছু মানুষ সরকারকে হেনস্থা করতে মামলা করার জন্য হাইকোর্টেই বসে থাকেন। এই রায় দেওয়ার জন্য আদালতকে ধন্যবাদ। পুজো কমিটিগুলির পাশে দাঁড়িয়ে মুখ্যমন্ত্রী যে-সামাজিক বার্তা দিতে চাইছেন, এই রায়ে সরকারের সেই উদ্দেশ্য সফল হবে,’’ বলেন তৃণমূল নেতা ও পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম।
বিজেপি যে এই রায়ে খুশি নয়, তা স্পষ্ট করে দিয়েছেন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। তিনি বলেন, ‘‘ইমাম ভাতা এবং দুর্গাপুজোয় টাকা দেওয়া— দু’টোরই বিরোধী আমরা। তবে এই বিষয়টি নিয়ে দলগত ভাবে আমরা কোনও মামলা করব না।’’ কংগ্রেস বা বাম শিবির এই রায় নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চায়নি।
অ্যাডভোকেট জেনারেল (এজি) কিশোর দত্ত এবং প্রবীণ আইনজীবী শক্তিনাথ মুখোপাধ্যায় সওয়ালে গিয়ে বলেছিলেন, জনগণের জন্য কত টাকা কী ভাবে খরচ হবে, তা রাজ্য আইনসভার এক্তিয়ারভুক্ত। কোনও করদাতা এই নিয়ে আপত্তি তুলতে পারেন না। আদালতও এতে হস্তক্ষেপ করতে পারে না। সংবিধান সেই ক্ষমতা আদালতকে দেয়নি। মামলাটি বিচারযোগ্য কি না, তা দেখারই এক্তিয়ার নেই ডিভিশন বেঞ্চের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy