হাতে ওষুধ গুঁজে দিলেও ওঁদের কেউ কেউ তা জানলা দিয়ে ফেলে দেন। বারবার বললেও বিছানায় বসে মুঠো খুলে ওষুধ মুখে ঢোকান না অনেকে। কেউ কেউ নাগাড়ে চিৎকার করতে থাকেন। চড়াও হন নার্সদের উপরে।
এই অবস্থায় রোগীর জেদের সঙ্গে পাল্লা দিতে ওয়ার্ডের কর্মীদের সাহায্য নিয়ে জোর করে তাঁকে বিছানায় ফেলে মুখে ওষুধ ঢুকিয়ে দেন কর্তব্যরত নার্স। অনেক ক্ষেত্রে নার্সের বিরুদ্ধে হাসপাতালের এক কোণে দড়ি দিয়ে হাত-পা বেঁধে রোগীকে ফেলে রাখার অভিযোগও ওঠে। সরকারি মানসিক হাসপাতালে রোগীদের দেখভালের এটাই চেনা ছবি। নার্সদের আচরণ নিয়ে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ধরনের অভিযোগ উঠছে। প্রশ্ন ওঠে
মানসিক রোগীদের পরিষেবা দেওয়ার জন্য নিযুক্ত নার্সদের প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ নিয়েও।
ছবিটা বদলাতে মানসিক হাসপাতালে কর্মরত নার্সদের মার্চ থেকে বিশেষ প্রশিক্ষণ দেওয়ার কর্মশালা শুরু করছে স্বাস্থ্য দফতর। স্বাস্থ্য ভবন সূত্রের খবর, এ রাজ্যে ছ’টি সরকারি মানসিক হাসপাতালে শ’দুয়েক নার্স রয়েছেন। নার্সিংয়ে স্নাতকোত্তর পাশ করা নার্সের সংখ্যা পর্যাপ্ত নয়। তাই মানসিক রোগীদের জন্য প্রশিক্ষিত নার্সের সংখ্যাও কম। অভিজ্ঞতার উপরে ভিত্তি করেই মানসিক হাসপাতালে নার্সদের দায়িত্ব দেওয়া হয়। ফলে অনেক সময় তাঁরা রোগীদের অবসাদ, হিংস্র মনোভাব, জেদ সামলাতে হিমশিম খান। বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ,
মনোরোগীদের আচরণ স্পর্শকাতর বিষয়। যথাযথ ভাবে তার মোকাবিলা করতে হবে।
স্বাস্থ্য দফতরের খবর, ২০১৭ সালে রাজ্য সরকার ইউকে-ইন্ডিয়া এডুকেশন অ্যান্ড রিসার্চ ইনিশিয়েটিভ-এর সঙ্গে একটি ‘মউ’ বা সমঝোতাপত্র স্বাক্ষর করেছিল। সেই চুক্তির ভিত্তিতেই বিলেতের পাঁচ সদস্যের দল মার্চের দ্বিতীয় সপ্তাহে রাজ্যে আসবে। নার্সদের প্রশিক্ষণ চলবে ইনস্টিটিউট অব হেল্থ অ্যান্ড ফ্যামিলি ওয়েলফেয়ারের তত্ত্বাবধানে।
কর্মশালা শুরুর আগেই স্বাস্থ্য দফতরের তরফে মানসিক হাসপাতালে কর্মরত নার্সদের মধ্যে সমীক্ষা চালানো হয়েছে। পরিষেবার বিষয়ে তাঁদের ধ্যানধারণায় কোথায় কতটা খামতি রয়েছে, খতিয়ে দেখা হয়েছে সেগুলো। ইনস্টিটিউটের অধিকর্তা চিকিৎসক কৃষ্ণাংশু রায় বলেন, ‘‘পরিষেবার মান উন্নত করতেই কর্মশালার ব্যবস্থা হয়েছে। এই কর্মশালা রোগীদের পরিষেবায় বিশেষ ভাবে সাহায্য করবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy