জনজাতি এলাকায় পঞ্চায়েত ভোটে বিজেপি-র কাছে হারানো জমি ফিরে পেতে সচেষ্ট তৃণমূল। সেই বার্তা ফের স্পষ্ট হল ২১শে জুলাইয়ের সভা থেকে। তৃণমূলের ‘শহিদ স্মরণ’ সমাবেশে শনিবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়ে দিলেন, আগামী ৯ অগস্ট তিনি নিজে ঝাড়গ্রামে গিয়ে ‘আন্তর্জাতিক আদিবাসী দিবস’ পালন করবেন। যে জেলায় সদ্য পঞ্চায়েত ভোটে ধাক্কা খেয়েছে শাসক তৃণমূল। উত্তরবঙ্গ এবং পুরুলিয়ার জনজাতি এলাকাতেও পঞ্চায়েতে তাদের ফল আশানুরূপ হয়নি। এবং তিন ক্ষেত্রেই তুলনায় ভাল ফল করেছে বিজেপি। বস্তুত, দেশ জুড়েই বিজেপি জনজাতিদের ভোট টানার নানা কৌশল নিয়েছে। তার মোকাবিলাতেই মমতার ‘আদিবাসী দিবস’ পালনের কর্মসূচি ঘোষণা বলে মনে করছে রাজনৈতিক শিবির।
তৃণমূল নেত্রী এ দিন ধর্মতলায় ২১শে-র মঞ্চ থেকে বলেন, ‘‘৯ অগস্ট ভারত ছাড়ো আন্দোলনের স্মরণে অনুষ্ঠান হয়। সে দিনটা আন্তর্জাতিক আদিবাসী দিবসও (ওয়ার্ল্ড ইন্ডিজেনাস ডে)। আমি বলেছি, দিনটা সেই হিসাবেও পালন করতে হবে। আমি নিজে ঝাড়গ্রামে যাব। উত্তরবঙ্গের জেলাগুলিতেও ৯ তারিখ আদিবাসী দিবস পালন করতে হবে। ১০ তারিখ হবে দক্ষিণবঙ্গে।’’ পঞ্চায়েত ভোটে ঝাড়গ্রামে জয়ী বিজেপি-সহ বিরোধীদের ৫৬ জন এ দিন ওই সমাবেশে এসে তৃণমূলে যোগ দেন। দলেরই একাংশের মতে, মমতা যে ইতিমধ্যেই জনজাতি এলাকায় মন ফিরে পেতে শুরু করেছেন, ওই যোগদানই তার প্রমাণ।
বিজেপি-র কেন্দ্রীয় সম্পাদক রাহুল সিংহ বলেন, ‘‘জঙ্গলমহলে— বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, ঝাড়গ্রাম, পশ্চিম মেদিনীপুরে আদিবাসী মানুষের সমর্থন হারিয়ে মুখ্যমন্ত্রী ভয় পেয়েছেন। সেই জন্যই বক্তৃতার ৯৮ শতাংশ অংশ জুড়ে তিনি শুধু বিজেপিকে আক্রমণ করেছেন।’’
মমতা এ দিন ভাষণ শেষ করেছেন তাঁর চেনা স্লোগানের পাশাপাশি ‘হিন্দু তৃণমূল’, ‘মুসলিম তৃণমূল’, ‘খ্রিস্টান তৃণমূল’ ইত্যাদি স্লোগান দিয়ে। দেশ জুড়ে জাতপাত এবং মেরুকরণের রাজনীতির অঙ্কে এই স্লোগান অর্থবহ বলে অনেকে মনে করছেন। মমতা এ দিন মঞ্চ থেকে আরও ঘোষণা করেছেন, তিনিও হিন্দু। তবে বিজেপি-র ‘তরোয়ালের হিন্দুত্ব’-এ তিনি বিশ্বাস করেন না। যার জবাবে বিজেপি নেতা রাহুলবাবু বলেন, ‘‘এত দিন মুখ্যমন্ত্রী সংখ্যালঘু তোষণ করতেন। এখন বিজেপি-র ভয়ে হিন্দু দরদী হয়ে উঠেছেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy