Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪
State News

তালিকায় ত্রুটির সুরাহায় শাস্তির পক্ষেই সওয়াল

এ-সবের মধ্যেই অবশ্য নতুন পলি ভিনাইল ক্লোরাইড (পিভিসি) বা প্লাস্টিক রঙিন ভোটার পরিচয়পত্র তৈরির কাজ শুরু করেছে সরস্বতী প্রেস।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

প্রদীপ্তকান্তি ঘোষ
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৯ মার্চ ২০২০ ০৪:২৫
Share: Save:

কোথাও ‘এপিক’ বা ভোটার পরিচয়পত্রে কুকুরের ছবি। কোথাও সংশোধনের পরেও নাম-ঠিকানায় ভুল থেকে যাওয়া। কোনও ক্ষেত্রে নথিপত্র ঠিক থাকলেও তালিকায় নাম না-ওঠার ‘ভুল’ ব্যাখ্যা। কোথাও বা নতুন ভোটারের লিঙ্গ বদল! আবার বয়স উল্লেখ করে তালিকায় নাম তুলতে চাওয়ার বিষয়টি নিয়েও তোলা হচ্ছে প্রশ্ন। ভোটার তালিকা সংক্রান্ত বিষয়ে এ ভাবেই ভোটের কাজের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মী-অফিসারদের কেউ কেউ আমজনতাকে নাজেহাল করছেন বলে অভিযোগ। তাতে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে গোটা নির্বাচন কমিশনকে।

এ-সবের মধ্যেই অবশ্য নতুন পলি ভিনাইল ক্লোরাইড (পিভিসি) বা প্লাস্টিক রঙিন ভোটার পরিচয়পত্র তৈরির কাজ শুরু করেছে সরস্বতী প্রেস। ছাপানোর কাজ চলছে। চূড়ান্ত তালিকা অনুযায়ী এ বার রাজ্যের ২৯৪টি বিধানসভা কেন্দ্রে ২৪,১৪,৭২১ জন নতুন ভোটার অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন। তাই রঙিন ভোটার কার্ড আগে পৌঁছবে তাঁদের কাছেই। পরবর্তী কালে চূড়ান্ত তালিকায় তথ্য সংশোধনের সূত্রে নতুন কার্ড পাবেন ৩৯,০২,৯৪৮ জন ভোটার। সে-ক্ষেত্রে পরিচয়পত্রটি হাতে নেওয়ার সময় ২৫ টাকা দিতে হবে সংশ্লিষ্ট ভোটারকে। তবে কোনও ক্ষেত্রে যদি প্রমাণিত হয় যে, ভুলের দায় দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মী-আধিকারিকের, তা হলে ভিন্ন পথে হাঁটতে পারে জেলা প্রশাসন।

ভোটার পরিচয়পত্রে কুকুরের ছবি ওঠার ঘটনার আগে এক মহিলা ভোটারের পরিচয়পত্রে স্বামীর নামের জায়গায় ‘ডোমকল হসপিটাল’ কথাটি দেখা গিয়েছিল। দু’টি ঘটনাই মুর্শিদাবাদের। তারপ রেই নড়েচড়ে বসেন নির্বাচন কমিশনের কর্তারা। রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী অফিসার (সিইও)-সহ পদস্থ কর্তারা জেলা সফরে যান। কিন্তু তাতেও একেবারে বিতর্কহীন হতে পারেনি মুর্শিদাবাদ জেলা প্রশাসন। যদিও ভোটার পরিচয়পত্রে কুকুরের ছবি ওঠার ঘটেছিল ইভিপি বা ভোটার তথ্য যাচাই কর্মসূচিতে। তবে পূর্ণাঙ্গ ভোটার তালিকায় সেই ভুল হয়নি।

আরও পড়ুন: নারী-দিন বা পুরুষ-দিন নেই ওঁদের

জাতীয় নাগরিক পঞ্জি (এনআরসি) এবং সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ) নিয়ে উদ্বেগ-আতঙ্কের আবহে গুরুত্বপূর্ণ নথি হিসেবে ভোটার পরিচয়পত্রকেই আঁকড়ে ধরতে চাইছেন সাধারণ মানুষ। তাই দীর্ঘদিন ভোটার পরিচয়পত্র নাম না-থাকলেও নতুন করে তা তালিকাভুক্ত করার চেষ্টা চালাচ্ছেন অনেকেই। বয়সের গেরোয় অনেক ক্ষেত্রে তাঁদের নথিভুক্তি আটকে যাচ্ছে বলে অভিযোগ। তবে নথিপত্র ঠিক রয়েছে বলে অনেক আবেদনকারীর দাবি। এই পরিস্থিতিতে আবেদনকারীকে আরও ‘বিভ্রান্ত’ করার অভিযোগও উঠছে অনেক কর্মী-আধিকারিকের বিরুদ্ধে।

কেন এই পরিস্থিতি?

ভোট প্রক্রিয়ার সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে যুক্ত আধিকারিকদের মতে, এ-সব ক্ষেত্রে শাস্তির প্রয়োজন আছে। তা না-হলে প্রতিষ্ঠানের বিশ্বাসযোগ্যতাই প্রশ্নের মুখে পড়বে বা পড়ছে।

অনলাইনে সংযোজন, সংশোধনের ক্ষেত্রে সাইবার ক্যাফেগুলির ভূমিকা নিয়ে কাটাছেঁড়া করছেন কমিশনের কর্তারা। একটি সূত্র জানাচ্ছে, নাম-ঠিকানার ক্ষেত্রে অনেক সময় কটু কথা লিখে পাঠানো হচ্ছে। দু’-একটি ক্ষেত্রে যা চোখ এড়িয়ে যেতে পারে বলে সিইও দফতরের কর্তাদের অভিমত। কারণ, শেষ কয়েক মাস সংশোধন, সংযোজন আর বিয়োজন মিলিয়ে প্রায় আড়াই কোটি আবেদন এসেছে বলে ওই কর্তাদের দাবি। রাজ্যে ভোটার তালিকা প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত থাকেন ৮৫ হাজার কর্মী-অফিসার। সেখানে এই ধরনের মাত্র কয়েকটি ঘটনা ঘটেছে বলে জানান তাঁরা। তবে সেটুকুও অভিপ্রেত নয় বলে সিইও দফতরের কর্তাদের অভিমত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Voter ID
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE