Advertisement
১৬ এপ্রিল ২০২৪

একুশে জোর যুব সংগঠনে

পঞ্চায়েত নির্বাচনকে সামনে রেখে সংগঠন গোছানোর কাজে হাত দিয়েছিল বিজেপি। ভোটে তার ফলও মিলেছে।

প্রস্তুতি: পুরুলিয়া শহরে যুব তৃণমূল অফিসে। ছবি: সুজিত মাহাতো

প্রস্তুতি: পুরুলিয়া শহরে যুব তৃণমূল অফিসে। ছবি: সুজিত মাহাতো

প্রশান্ত পাল
পুরুলিয়া শেষ আপডেট: ০৯ জুলাই ২০১৮ ০২:২৫
Share: Save:

২১ জুলাইয়ের কর্মসূচি সামনে রেখে কোমর বাঁধছে তৃণমূল। এ বারে লক্ষ্য যুব সংগঠনকে শক্তপোক্ত করা। একাধিক ব্লকে যুবকদের একটা অংশই যে দলের সঙ্গে নেই, পঞ্চায়েত ভোটের পরে সেটা দলের অন্দরে বলছেন কোনও কোনও নেতা। ভোটে বেশ কিছু ব্লকে দলের ভরাডুবি হয়েছে। কয়েকটি ব্লকে শাসকদলের সঙ্গে বেশ টক্কর দিয়েছে বিজেপি। ফলের পর্যালোচনায় নানা তত্ত্ব উঠে এসেছে। তৃণমূলের একটি সূত্রের খবর, তার মধ্যে তরুণ ও যুবকদের সঙ্গে বিরোধী শিবিরের যোগাযোগ বাড়াটাও একটা কারণ বলে মনে করা হচ্ছে। কোনও কোনও নেতা স্বীকার করছেন, ভোটের আগে এই ব্যাপারে দলের কাছে বিশেষ খবর ছিল না।

পঞ্চায়েত নির্বাচনকে সামনে রেখে সংগঠন গোছানোর কাজে হাত দিয়েছিল বিজেপি। ভোটে তার ফলও মিলেছে। শূন্য থেকে শুরু করে জেলার ৫৯টি পঞ্চায়েত, ৫টি পঞ্চায়েত সমিতি ও জেলা পরিষদের ৯টি (বিজেপির দাবি ১০টি) আসন জিতেছে তারা। বিজেপির দাবি, যথেষ্ট কর্মসংস্থান না হওয়ায় যুব সমাজের একটা বড় অংশ তাদের দিকে ঝুঁকছেন। দলের জেলা সভাপতি বিদ্যাসাগর চক্রবর্তী বলেন, ‘‘ভোটের আগে থেকেই আমরা সংগঠন গোছানোর কাজ শুরু করেছিলাম। দেখা গিয়েছে, গ্রামে গ্রামে যুবকদের সিংহভাগের সমর্থনই আমাদের দিকে। ত্রিস্তর পঞ্চায়েতে নতুন মুখ হিসেবে তরুণ-তরুণীদের একটা বড় অংশই আমাদের প্রার্থী হয়েছিলেন।’’

ভোটের আগে বিজেপির যুব মোর্চার রাজ্য কার্যকারিণী সভা হয়েছে পুরুলিয়ায়। সেই সভায় দলের কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক কৈলাস বিজয়বর্গীয় উপস্থিত ছিলেন। দলের দাবি, সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহের সভায় পুরুলিয়ায় যুব মোর্চার কর্মীদের ঢল দেখা গিয়েছে। বিদ্যাসাগরের কথায়, ‘‘বলরামপুরে যে তিন জনের মৃত্যু নিয়ে আমরা সিবিআই তদন্ত দাবি করেছি, তাঁদের দু’জনই যুব মোর্চার। গত পঞ্চায়েত ভোটে তাঁরা সবাই অত্যন্ত সক্রিয় ভাবে লড়াই করেছেন।’’

শাসকদলের নেতারা অবশ্য দাবি করছেন, বিজেপি ভুল বুঝিয়ে মানুষকে বিভ্রান্ত করছে। তবে এটাও মানছেন, এই ‘ভুল বোঝানোর’ মোকাবিলা অনেক জায়গাতেই তাঁরা করতে পারেননি। ২১ জুলাইয়ের কর্মসূচিতে একেবারে নিচুতলা থেকে কর্মীদের সামিল করাতে এ বার উদ্যোগী হয়েছে তৃণমূলের যুব সংগঠন। ইতিমধ্যেই ব্লকে ব্লকে গিয়ে সভা করছেন যুব তৃণমূল সভাপতি সুশান্ত মাহাতো। তিনি জানান, প্রতিটি বুথ থেকে অন্তত দশ জন করে যুবকর্মী ২১ জুলাই কলকাতার সমাবেশে যাবেন। ব্লকে ব্লকে সভায় সেই লক্ষ্যমাত্রাও বেঁধে দেওয়া হচ্ছে। তাঁর দাবি, জেলা থেকে শুধু যুব সংগঠনেরই পঁচিশ হাজার সদস্য ওই দিন কলকাতায় যাবেন। সেই লক্ষ্যেই বিভিন্ন ব্লকে মিছিল ও প্রচার করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

আগে ২১ জুলাইয়ের প্রস্তুতিতে জেলায় একটি বা দু’টি প্রকাশ্য সভা হত। এ বারে ২১ তার ব্যাতিক্রম। সভা হচ্ছে প্রতিটি ব্লকে। মঙ্গলবার জেলা শহরে রবীন্দ্রভবনে প্রস্তুতি সভারও আয়োজন করা হয়েছে। সেখানে দলের সমস্ত বিধায়ক, সাংসদ ও পঞ্চায়েত স্তরের নেতৃত্বকে ডাকা হয়েছে। ২১ জুলাইয়ের ইতিহাস এবং আবেগ তুলে ধরা হচ্ছে যুবক কর্মীদের কাছে। জেলা যুব তৃণমূল সভাপতি সুশান্ত মাহাতো বলেন, ‘‘২১-এর ঘটনা যখন ঘটেছিল, সেই সময়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ছিলেন যুবনেত্রী। কলকাতায় এই কর্মসূচি হচ্ছে যুব তৃণমূলের উদ্যোগে। তাই এই কর্মসূচি সফল করতে যুবক বা তরুণ-তরুণীদের বড় ভূমিকা রয়েছে। সে কথাই বলা হচ্ছে।’’

তবে তৃণমূলের পুরুলিয়া জেলা সভাপতি শান্তিরাম মাহাতো বলেন, ‘‘কেন্দ্রীয় সরকার চাকরির স্বপ্ন দেখিয়েছিল যুবকদের। কিন্তু কোথায় কর্মসংস্থান? যুব সম্প্রদায় বুঝতে পেরেছে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই তাদের সঙ্গে আছেন। প্রচার করতে গিয়ে আমরা সেটা দেখতে পাচ্ছি। ২১ জুলাই পুরো রাজ্যও দেখতে পারবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Young generation TMC 21 July Meeting
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE