Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

গণপিটুনিতে মৃত্যু যুবকের

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বড় শোলমারিতে অমলবাবুর শ্বশুরবাড়ি ছিল।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
দিনহাটা শেষ আপডেট: ০৫ অগস্ট ২০১৯ ০৪:৪৬
Share: Save:

গ্রামের লোকের গণপিটুনিতে মারা গেলেন এক যুবক। নাম অমল চক্রবর্তী (৩৯)। অমলবাবুর বাড়ি কোচবিহারের দিনহাটার বড় বোয়ালমারি এলাকায়। শনিবার রাতে তিনি দিনহাটারই বড় শোলমারি এলাকায় গিয়েছিলেন। সেখানেই এক তরুণীর সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক নিয়ে গোলমাল শুরু হয় এলাকার বাসিন্দাদের সঙ্গে। কয়েক জন বাসিন্দা জানান, কথা কাটাকাটি থেকেই হাতাহাতি শুরু হয়। অমলবাবুর বাড়ির লোক অভিযুক্তদের গ্রেফতারের দাবিতে তাঁর মৃতদেহ নিয়ে রথবাড়িঘাট এলাকায় পথ অবরোধ করেন। দিনহাটার এসডিপিও মানবেন্দ্র দাস বলেন, ‘‘ইতিমধ্যেই ওই তরুণীর বাবা ও তাঁর এক আত্মীয়কে গ্রেফতার করা হয়েছে। ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।’’

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বড় শোলমারিতে অমলবাবুর শ্বশুরবাড়ি ছিল। ওই এলাকার এক তরুণীকে তিনি বছর চারেক আগে বিয়ে করেন। পেশায় গাড়ি চালক অমলবাবুর আগেও একবার বিয়ে হয়েছিল। প্রথম স্ত্রীর সঙ্গে বিচ্ছেদের পরে তিনি বড় শোলমারির তরুণীকে বিয়ে করেন। ওই তরুণীর বাড়ির লোকের দাবি, অমলবাবু তাঁদের বাড়ির মেয়েকে তুলে নিয়ে গিয়ে বিয়ে করেছিলেন। তখন পুলিশের কাছে অপহরণের একটি মামলাও হয়েছিল।

ওই তরুণীর পরিবারের দাবি, অমলবাবুর সঙ্গে তাঁদের বাড়ির মেয়ের বিয়ে হয়েছিল ঠিকই, তবে পরে বিবাহ বিচ্ছেদও হয়ে যায়। অবশ্য তার পরেও দু’জনের মধ্যে সম্পর্ক ছিল বলে দাবি করা হয়েছে। অমলবাবুর দিদি গৌরী সরকার চক্রবর্তী বলেন, ‘‘ভাই রেজিস্ট্রি করে বিয়ে করেছিল। সংসারও করছিল।’’ তিনি দাবি করেন, ‘‘ভাইয়ের বৌ বাপের বাড়ি গিয়েছিল। তাকে সেখান থেকে নিয়ে আসার জন্য ভাইকে ফোনও করেছিল। সেই জন্যই ভাই সেখানে যায়। কিন্তু তখনই মেয়ের বাড়ির লোকেরা তাকে মারধর করে মেরে ফেলে।’’

ওই তরুণীর গ্রামের বাসিন্দাদের কয়েক জনের দাবি, অমলবাবু রাত ৯টা নাগাদ বন্ধুদের সঙ্গে নিয়ে গ্রামে গিয়েছিলেন। তাঁদের কাছে আগ্নেয়াস্ত্র ছিল বলে দাবি। অভিযোগ, তা দেখিয়ে তাঁরা ভয়ও দেখান, তার পরে ওই তরুণীকে জোর করে নিয়ে আসার চেষ্টা করেন। তাতেই গ্রামের লোক রেগে যান। সেই রোষের মুখে অমলবাবুর বন্ধুরা পালান বলে গ্রামের লোকের দাবি। তখন অমলবাবু একা গ্রামের লোকের সামনে পড়ে যান। মারের চোটে তিনি সংজ্ঞাহীন হয়ে পড়েন। পরে পুলিশ গিয়ে তাঁকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। এলাকার এক বাসিন্দা জানান, গণপিটুনির প্রবণতা এতই বেড়ে গিয়েছে যে, যে কোনও রোষ সেই দিকে বয়ে যাচ্ছে।

রবিবার অমলবাবুর দেহ পৌঁছতেই গোটা গ্রাম শোকস্তব্ধ হয়ে পড়ে। অমলবাবুর মা শোভা চক্রবর্তী কাঁদতে কাঁদতে বলেন, তাঁর ছেলের খুনিদের শাস্তি চাই। এর পরেই ক্ষুব্ধ বাসিন্দারা বিকেল ৩টে নাগাদ দেহ নিয়ে ঘণ্টা খানেক পথ অবরোধ করেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Lynching Violence Dinhata
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE