Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪
Crime

অপহৃত যুবককে খুন করে ছ’টুকরো দেহ

মূল অভিযুক্ত, চুঁচুড়ার দাগি দুষ্কৃতী বিশাল দাস পলাতক।

বিষ্ণু মাল

বিষ্ণু মাল

নিজস্ব সংবাদদাতা
চুঁচুড়া শেষ আপডেট: ২৮ অক্টোবর ২০২০ ০৪:৩৩
Share: Save:

ষোলো দিন আগে অপহৃত হয়েছিলেন হুগলির চুঁচুড়ার রায়বেড়ের যুবক বিষ্ণু মাল (২৩)। তাঁকে খুন করে দেহ ছ’টুকরো করা হয়েছিল। সোমবার, দশমীর রাতে তাঁর দু’টি কাটা হাত এবং দু’টি পা মিলল দিল্লি রোড সংলগ্ন বৈদ্যবাটী খালের ধার থেকে। ধড়-মুণ্ড মেলেনি। ঘটনায় জড়িত অভিযোগে কৃষ্ণ মণ্ডল এবং রাজকুমার প্রামাণিক নামে দুই দুষ্কৃতীকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। তবে, মূল অভিযুক্ত, চুঁচুড়ার দাগি দুষ্কৃতী বিশাল দাস পলাতক।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, বছর কয়েক আগে বিশাল চুঁচুড়ার মার্কণ্ড গলির এক তরুণীকে বিয়ের প্রস্তাব দিয়েছিল। তরুণীর পরিবার প্রস্তাব নাকচ করে দেয়। পরে বিষ্ণুর সঙ্গে ওই তরুণীর ঘনিষ্ঠতা হয়। অভিযোগ, এতেই আক্রোশের জেরে বিষ্ণুকে অপহরণ করে বিশাল খুন করে। আতঙ্কে তরুণীর পরিবার বাড়িতে তালা দিয়ে অন্যত্র চলে গিয়েছে।

গত ১০ অক্টোবর রাতে বিষ্ণু নিখোঁজ হন। ধৃতদের জেরা করে পুলিশ জেনেছে, ওই রাতে বিষ্ণুকে বাড়ির সামনে থেকে দুষ্কৃতীরা মোটরবাইকে তুলে নিয়ে যায় বৈদ্যবাটীর রামমোহন সরণিতে কৃষ্ণের বাড়িতে। সেখানে মদের আসর বসেছিল। সেখানেই বিশাল প্রথমে চপারের পিছন দিক দিয়ে বিষ্ণুর ঘাড়ে আঘাত করে। বিষ্ণু অচেতন হয়ে লুটিয়ে পড়েন। তার পর বিশাল তাঁর গলা টিপে শ্বাসরোধ করে খুন করে। পরে চপার দিয়ে কাঁধের নীচ থেকে দু’টি হাত এবং ঊরু থেকে দু’টি পা-ও কেটে ফেলে। ধড়-মুণ্ড বিচ্ছিন্ন করা হয়। দেহাংশ প্লাস্টিকের প্যাকেটে মুড়ে নাইলনের ব্যাগে ভরা হয়। বিশালের নির্দেশে শাগরেদরা ব্যাগে ভরা দেহাংশ বিভিন্ন জায়গায় ফেলে দেয়।

তদন্তকারী পুলিশ অফিসারদের দাবি, মোবাইল ফোনের সূত্রে সোমবার রাতে কৃষ্ণ এবং বৈদ্যবাটীরই মাটিপাড়ার বাসিন্দা রাজকুমারকে ধরা হয়। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করে বিষ্ণুর হাত-পা ভরা দু’টি ব্যাগ মেলে। ব্যাগ দু’টি ১০০ ফুটের ব্যবধানে পড়েছিল। কাটা ডান হাতে উল্কি করে ‘বিষ্ণু’ লেখা ছিল। তা দেখেই বাড়ির লোকেরা ওই দেহাংশ বিষ্ণুর বলে শনাক্ত করেন।

চন্দননগরের পুলিশ কমিশনার হুমায়ুন কবীর বলেন, ‘‘ধৃতদের জেরা করে নিহতের দেহের বাকি অংশ উদ্ধারের চেষ্টা চলছে। বিশাল-সহ আরও কয়েক জনের খোঁজে চিরুনি-তল্লাশি চলছে।’’

দেহাংশ উদ্ধারের পরে বিশাল ও তার দলবলের বিরুদ্ধে অপহরণের সঙ্গে খুনের ধারা যোগ করা হয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে। ধৃত কৃষ্ণ এবং রাজকুমারকে মঙ্গলবার চুঁচুড়া আদালতে হাজির করানো হয়। বিচারক দু’জনকেই ১৪ দিন পুলিশ হেফাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন। উদ্ধার হওয়া দেহাংশ শ্রীরামপুর ওয়ালশ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। নিহতের পরিচয় সম্পর্কে নিশ্চিত হতে প্রয়োজনে ওই দেহাংশের সঙ্গে বিষ্ণুর পরিজনের ডিএনএ পরীক্ষা করা হবে বলে পুলিশ জানিয়েছে।

বিষ্ণুর বাবা গোপাল মাল বলেন, ‘‘যারা আমার ছেলেকে খুন করেছে, তাদের যেন উপযুক্ত শাস্তি হয়।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Crime Murder Chinsurah
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE