Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

এখনও নেই যুব

দলনেত্রী সাবধান করে দিয়েছেন বৃহস্পতিবার। সেই হুঁশিয়ারিতে কোচবিহারে যুব ও তৃণমূলের মধ্যে টানাপড়েন কতটা কমল, তা শুক্রবার স্পষ্ট হয়নি।

নমিতেশ ঘোষ
কোচবিহার শেষ আপডেট: ২৩ জুন ২০১৮ ০২:৪৪
Share: Save:

দলনেত্রী সাবধান করে দিয়েছেন বৃহস্পতিবার। সেই হুঁশিয়ারিতে কোচবিহারে যুব ও তৃণমূলের মধ্যে টানাপড়েন কতটা কমল, তা শুক্রবার স্পষ্ট হয়নি। প্রাথমিক ভাবে পেট্রোপণ্যের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে তৃণমূলের অবস্থান বিক্ষোভে যুব নেতাদের গরহাজিরা চোখে পড়লেও দিনের শেষে রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বা উদয়ন গুহরা বিষয়টি নিয়ে সুর চড়াতে চাননি। যুব নেতারাও জানান, বিভিন্ন কারণে তাঁরা এই সমাবেশে যোগ দিতে পারেননি।

গ্রাম পঞ্চায়েত নির্বাচনের সময় থেকে বারে বারে যুব ও তৃণমূল লড়াইয়ে উত্তপ্ত হয়েছে কোচবিহার। বিশেষ করে দিনহাটায় প্রতিদিন নিয়ম করে রক্ত ঝরেছে। দলীয় কর্মী খুন হয় দিনহাটার গীতালদহে। সেখানে নাম জড়িয়ে যায় দলের যুব সংগঠনের নেতা-কর্মীদের। কয়েক জনকে গ্রেফতারও করে পুলিশ। আবার দু’পক্ষের কর্মীদের লড়াইয়ে গুলিবিদ্ধ থেকে বোমায় জখমের ঘটনাও প্রকাশ্যে এসেছে।

নির্দল হিসেবে যুব সংগঠনের সদস্যরা জয়ীও হয়েছেন একাধিক জায়গায়। এই অবস্থায় দলের মধ্যে প্রবল অস্থিরতা তৈরি হয়। দিন কয়েক আগে দেওয়ানহাটে যুব তৃণমূলের সংবর্ধনা সভা ঘিরে ক্ষোভ প্রকাশ করেন রবীন্দ্রনাথবাবু। সেই সময় তাঁকে যুব কর্মীদের বিক্ষোভের মুখে পড়তে হয়।

লোকসভা ভোটের মুখে এই দ্বন্দ্বে লাগাম না পড়লে যে শেষবেলায় বিজেপি বাজিমাত করে দিতে পারে, তা বিলক্ষণ বুঝতে পারছেন রাজ্যের শাসক দলের নেতারা। বৃহস্পতিবার কলকাতায় ইন্ডোর স্টেডিয়ামে দলীয় সভায় বারে বারে সেই প্রসঙ্গ তুলে ধরেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

‘নির্দলে’র জয়

জেলা পরিষদ

প্রার্থী জয়ী
৭ ১

পঞ্চায়েত সমিতি

প্রার্থী জয়ী
৯৫ ২১

গ্রাম পঞ্চায়েত

প্রার্থী জয়ী
৩৬০ ১১১

(সব ক’জনই নির্দল প্রার্থী হিসেবে লড়াই করেছিলেন)

তৃণমূল নেত্রী স্পষ্ট জানিয়ে দেন, যুব তৃণমূল আলাদা কোনও দল নয়, তাদের চলতে হবে মাদার (মূল তৃণমূল) সংগঠনের নেতৃত্বেই। দলের নেতাদের সঙ্গেই আলোচনা করেই যে কোনও কর্মসূচি নিতে হবে। আলাদা কোনও পার্টি অফিস করা যাবে না বলেও নেত্রী জানিয়ে দেন। তৃণমূলের কোচবিহার জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বলেন, “যুব সংগঠন দলের সঙ্গেই আছে। এ দিনের সভাতেও যুব সংগঠনের সদস্যরা হাজির ছিলেন। দুই-একজন বয়স্ক মানুষ নিজেদের যুব বলে পরিচয় দিয়ে দলের ক্ষতি করার চেষ্টা করছেন। তা রাজ্য নেতৃত্বকে জানানো হয়েছে।” দলের জেলা যুব সভাপতি তথা সাংসদ পার্থপ্রতিম রায় বৈঠকে হাজির ছিলেন না। সেই প্রশ্নে রবিবাবু বলেন, “দলের কলকাতায় বৈঠকে গিয়ে অনেকে ফিরতে পারেননি। তাই নেই। অন্য কোনও ব্যাপার নেই এর মধ্যে।”

পার্থবাবুও জানান, তিনি অসুস্থ। তাই কলকাতা থেকে ফিরতে পারেননি। তৃণমূল নেত্রীর নির্দেশের পরিপ্রেক্ষিতে এ দিন তিনি বলে, “আমরা দলের সঙ্গে কথা বলেই যে কোনও কর্মসূচি গ্রহণ করি।” যুব তৃণমূলের কোচবিহারের জেলা সাধারণ সম্পাদক নিশীথ প্রামাণিক বলেন, “দলনেত্রীর বক্তব্য শিরোধার্য। আমরা মূল দলের সঙ্গেই চলব।” নিশীথবাবুও জানান, তিনি বাইরে রয়েছেন।

পরিস্থিতির ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে দিনহাটার বিধায়ক উদয়ন গুহ বলেন, “একটা গাছের প্রধান হচ্ছে শিকড়। সেখান থেকেই গাছ বড় হয়। তার পর শাখা-প্রশাখা হয়। দলেরও তাই। নেত্রী সে কথাই জানিয়েছেন। এটা কারও ভুলে গেলে চলবে না।” কিন্তু শেষ অবধি কি যুব আর তৃণমূলের দূরত্ব ঘুচবে? প্রশ্ন রয়েই গেল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Fuel Price Hike TMC Yuva TMC Yuva
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE