উত্তুরে হাওয়া থেমে গিয়েছে কয়েক দিন আগেই। দখিনা বাতাসের সঙ্গে এ বার হাজির ঝড়বৃষ্টিও! এ-সব দেখেই দক্ষিণবঙ্গ থেকে শীতের বিদায়বার্তা ঘোষণা করল আবহাওয়া দফতর। তারা জানিয়েছে, এ বার দিন ও রাতে তাপমাত্রা বাড়বে। বঙ্গোপসাগরের উচ্চচাপ বলয় জলীয় বাষ্পের জোগান দেওয়ায় বাড়বে আর্দ্রতাও।
আবহবিদেরা জানান, বৃহস্পতিবার কলকাতায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ২৯.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এটা চলতি সময়ের নিরিখে স্বাভাবিকই। তবে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা (২১.৬ ডিগ্রি) অবশ্য স্বাভাবিকের থেকে তিন-চার ডিগ্রি বেশি থাকছে। সাধারণত, শীতকালে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা স্বাভাবিকের নীচে থাকে। শীত বিদায় নেওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই তা বাড়ে।
ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি থেকেই শীত বিদায় নেওয়ার পালা শুরু হয় বলে জানাচ্ছে হাওয়া অফিস। ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে তাপমাত্রা। এ বারেও সেই নির্ঘণ্ট মেনে শীত বিদায় নিয়েছে। তবে এই বিদায়পালার মধ্যেই যে-ভাবে ঝড়বৃষ্টি হাজির হয়েছে, তাতে অনেকেই অবাক। যেমন অবাক করেছে সর্বনিম্ন তাপমাত্রার এক লাফে স্বাভাবিকের থেকে চার ডিগ্রি উপরে উঠে যাওয়ার ঘটনা।
ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গ এবং ওড়িশায় দু’টি ঘূর্ণাবর্ত হাজির হয়েছে। বঙ্গোপসাগরে রয়েছে একটি উচ্চচাপ বলয়ও। তার ফলেই দখিনা বাতাসের পাশাপাশি ঝড়বৃষ্টি হচ্ছে বলে জানান আবহবিজ্ঞানীদের একাংশ। গত রবিবার কলকাতায় বৃষ্টি হয়েছিল। বুধবার রাতেও উত্তর ২৪ পরগনা, হুগলি, বর্ধমান ও কলকাতার একাংশে ঝড়বৃষ্টি হয়েছে। শুধু ঝড়বৃষ্টি নয়, কয়েক দিন ধরে রাতে আকাশও মেঘলা থাকছে। তার জেরেই গুমোট গরম পড়ছে। অনেকেই রাতে ফ্যান চালিয়ে ঘুমোতে বাধ্য হচ্ছেন।
শীত চলে গেলেও জোলো হাওয়ার জেরে ভোরের দিকে হাল্কা কুয়াশা হচ্ছে। আবহবিদেরা বলছেন, জোলো হাওয়া ঠান্ডা হাওয়ার সংস্পর্শে ঘনীভূত হয়ে কুয়াশা তৈরি করছে। রোদ উঠলেই সেই কুয়াশা মিলিয়ে যাচ্ছে। “ঘূর্ণাবর্ত আরও দিন দুয়েক স্থায়ী হবে। তার প্রভাবে দক্ষিণবঙ্গে ঝড়বৃষ্টির সম্ভাবনা আছে,” বলেন আলিপুর আবহাওয়া দফতরের অধিকর্তা গোকুলচন্দ্র দেবনাথ।
এমন হাওয়া বদল আর ঝড়বৃষ্টির জেরে বাড়ছে নানা পরজীবীবাহিত রোগের প্রকোপ। সর্দিজ্বরের রোগী ঘরে ঘরে। চিকিৎসকেরা বলছেন, এই সময় আবহাওয়ার তারতম্যে পরজীবীরা সক্রিয় হয়ে ওঠে। সাধারণ মানুষ অসাবধানে অনিয়ম করলেই পরজীবীরা আক্রমণ করে। রোগের হাত থেকে বাঁচতে তাই সাবধানতাই মূল মন্ত্র বলে জানাচ্ছেন চিকিৎসকেরা। তাঁদের পরামর্শ, এখন রাতে ফ্যান বা এসি না-চালানোই ভাল। হাল্কা করে চালালেও গায়ে চাদর দেওয়া উচিত। বাইরে থেকে এসেই ঠান্ডা জল বা ফ্রিজের খাবার খেলে চলবে না। গভীর রাতে বা ভোরে প্রয়োজনমতো মোটা জামা গায়ে দিতে হবে। শিশু ও বৃদ্ধদের ক্ষেত্রে বিশেষ সতর্কতা দরকার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy