Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

ভোটের আগে তহবিল ভরতে বাড়তি জমির ছাড়পত্রই কি ভরসা তৃণমূলের

শিল্প সম্মেলন ‘বেঙ্গল গ্লোবাল বিজনেস সামিট’-এর শেষ পর্বে বৃহস্পতিবার একসঙ্গে ২২টি উপনগরী তৈরির নীতিগত ছাড়পত্র দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এর মাধ্যমে রাজ্যে ৬৮ হাজার কোটি টাকা লগ্নির পথ খুলে গেল বলে দাবি করেছেন পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ (ববি) হাকিম। কিন্তু এই বিশাল কর্মযজ্ঞের পত্তনের সঙ্গে সঙ্গে দুর্নীতির নতুন নতুন পথও উন্মুক্ত হয়ে গেল কি না, সেই প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছে শিল্প-বাণিজ্য মহল। সারদা-উত্তরপর্বে আখেরে ওই প্রকল্প ভোটের আগে শাসক দলের তহবিল বাড়াতে সাহায্য করবে বলে কটাক্ষ করছেন তাঁদের অনেকেই। সরব হয়েছে রাজ্যের বিরোধী দলগুলিও।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১০ জানুয়ারি ২০১৫ ০৩:৫৪
Share: Save:

শিল্প সম্মেলন ‘বেঙ্গল গ্লোবাল বিজনেস সামিট’-এর শেষ পর্বে বৃহস্পতিবার একসঙ্গে ২২টি উপনগরী তৈরির নীতিগত ছাড়পত্র দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এর মাধ্যমে রাজ্যে ৬৮ হাজার কোটি টাকা লগ্নির পথ খুলে গেল বলে দাবি করেছেন পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ (ববি) হাকিম।

কিন্তু এই বিশাল কর্মযজ্ঞের পত্তনের সঙ্গে সঙ্গে দুর্নীতির নতুন নতুন পথও উন্মুক্ত হয়ে গেল কি না, সেই প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছে শিল্প-বাণিজ্য মহল। সারদা-উত্তরপর্বে আখেরে ওই প্রকল্প ভোটের আগে শাসক দলের তহবিল বাড়াতে সাহায্য করবে বলে কটাক্ষ করছেন তাঁদের অনেকেই। সরব হয়েছে রাজ্যের বিরোধী দলগুলিও।

গত বিধানসভা ভোটের খরচ জোগাতে সারদার মতো অর্থলগ্নি সংস্থার টাকা তৃণমূল ব্যবহার করেছিল বলে বিরোধীদের অভিযোগ। একই সঙ্গে তাঁরা বলছেন, চলতি বছরের পুরভোট এবং তার পর ২০১৬-এর বিধানসভা নির্বাচনে আর সারদার টাকা পাওয়া যাবে না। তাই প্রস্তাবিত ২২টি উপনগরীর জমি কেনা থেকে শুরু করে বিভিন্ন ছাড় এবং অনুমোদন দেওয়ার ক্ষমতাকে কাজে লাগিয়ে দুর্নীতির নতুন নতুন রাস্তা তৈরি করতে চাইছে শাসক দল। শিল্পমহলেরও একাংশের আশঙ্কা, উপনগরী প্রকল্পের হাত ধরে পশ্চিমবঙ্গে এ বার ‘রবার্ট হাকিম’ (হরিয়ানায় জমি কেলেঙ্কারিতে অভিযুক্ত কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গাঁধীর জামাই রবার্ট বঢরার পশ্চিমবঙ্গীয় সংস্করণ পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ববি হাকিম) পর্ব শুরু হয়ে গেল মনে হচ্ছে। ওই সব শিল্পপতির আশঙ্কা, দুর্নীতির প্রধান রাস্তা তৈরি করে দেবে ভূমি আইনের ১৪ওয়াই ধারা।

কী ভাবে?

মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করেছেন, সরকার কোনও বেসরকারি প্রকল্পের জন্য জমি অধিগ্রহণ করবে না। কিন্তু বেসরকারি উদ্যোগপতিরা নিজেরাই জমি কিনে নিলে তাঁদের সিলিং অতিরিক্ত জমি রাখার অনুমতি দেওয়া হবে। তাঁর কথায়, “গত বছরে যাঁরাই এই জন্য আবেদন জানিয়েছিলেন, ভূমি আইনের ১৪ওয়াই ধারা মেনে তাঁদের প্রত্যেককে অতিরিক্ত জমি রাখার ছাড়পত্র দিয়ে দেওয়া হয়েছে।”

কিন্তু এই পথে হাঁটলে দুর্নীতির সুযোগ কোথায়?

১৪ ওয়াইয়ের ছিদ্র

রাজ্যের ভূমি আইন অনুযায়ী কোনও ব্যক্তি বা সংস্থা গ্রামাঞ্চলে ২৪.২ একরের বেশি জমি রাখতে পারে না। তবে নির্দিষ্ট কয়েকটি ক্ষেত্রের জন্য সরকার চাইলে ১৪ওয়াই ধারায় সর্বোচ্চ সীমার বেশি জমি রাখার অনুমতি দিতে পারে। কিন্তু এই অনুমতি দেওয়ার জন্য কোনও ‘অনুমোদন মূল্য’ নেওয়ার সংস্থান রাখা হয়নি আইনে। আর সেই ছিদ্রপথেই দুর্নীতির কালসাপ ঢুকে পড়তে পারে বলে মন্তব্য করেছেন ভূমি দফতরের এক অবসরপ্রাপ্ত কর্তা। তাঁর কথায়, “দেশে আরও কোনও রাজ্যে জমির সিলিং ব্যবস্থা কায়েম নেই। ফলে চাইলে যে কেউ, যত ইচ্ছে জমি কিনতে পারেন। এখানে ২৪.২ একরের বেশি জমির মালিকানা পেতে হলে সরকারের কাছে ছাড়পত্র নিতে হয়। এর জন্য কোনও টাকা দিতে হয় না। কিন্তু কাকে অনুমতি দেওয়া হবে, আর কাকে দেওয়া হবে না, তার পুরোটাই নির্ভর করে রাজ্য সরকারের কর্তাদের বদান্যতার উপরে।”

এক শিল্পপতিরও মন্তব্য, “এই ছাড়পত্র দেওয়ার ক্ষেত্রে প্রকল্পভিত্তিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা আইনে বলা রয়েছে। অর্থাৎ, পুরোটাই নির্ভর করছে সরকারের মর্জির উপরে। ফলে ছাড়পত্র পেতে সরকারকে ‘খুশি’ করার দায় থাকে জমির ক্রেতার।”

এতে আখেরে লাভ কার? বণিক সভার এক প্রতিনিধি জানাচ্ছেন, কার আবার, রবার্ট হাকিমের?

রবার্ট হাকিম

হরিয়ানায় কয়েক বছর আগে রবার্ট বঢরার সংস্থা সাড়ে সাত কোটি টাকা দিয়ে প্রায় সাড়ে তিন একর কৃষি জমি কিনেছিল। এর এক মাস পরে ওই কৃষি জমির চরিত্র বদলের অনুমতি দেয় রাজ্যের কংগ্রেস সরকার। ওই জমিতে আবাসন প্রকল্প গড়ে তোলার ছাড়পত্র দেওয়া হয় রবার্টের সংস্থাকে। আর তার দু’ মাসের মধ্যেই ওই জমি রবার্টের সংস্থা ৫৮ কোটি টাকায় অন্য একটি সংস্থাকে বিক্রি করে দেয় বলে অভিযোগ। বিরোধীদের বক্তব্য, রাজনৈতিক প্রভাব কাজে লাগিয়ে মাঝখান থেকে প্রায় ৫০ কোটি টাকা কামিয়ে নিয়েছেন সনিয়ার জামাই।

মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণা এ রাজ্যেই ববি হাকিমের রোজগারের পথ খুলে দিল বলে বিরোধীদের অভিযোগ। কারণ, উপনগরী প্রকল্পগুলির ক্ষেত্রে সিলিং-অতিরিক্ত জমি রাখার প্রস্তাব ভূমি দফতরের কাছে যায় পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রীর মাধ্যমেই। ফলে তিনি ‘খুশি’ না হলে কোনও প্রকল্পের ছাড়পত্র আটকে যেতে পারে। এক আবাসন-উদ্যোগীর কথায়, “জমির চরিত্র বদলের জন্য পশ্চিমবঙ্গে যে ফি দিতে হয়, সেটা অন্য রাজ্যের তুলনায় অনেক কম। পাশাপাশি, সিলিং-এর বেশি জমি রাখার অনুমতি পেতে কোনও ‘ফি’-ই লাগে না। কিন্তু দু’ক্ষেত্রেই ঘুরপথে খরচ হয় অনেক।”

উদাহরণ দিয়ে নবান্নের এক কর্তা বলেন, হরিয়ানা, পঞ্জাব, রাজস্থান, দিল্লি-লাগোয়া উত্তরপ্রদেশের পশ্চিমাংশে চাষের জমিতে ব্যাপক হারে উপনগরী, আবাসন প্রকল্প তৈরি হচ্ছে। সেখানে জমির চরিত্র বদল করতে নেতা-অফিসারদের একাংশকে যেমন মোটা টাকা নজরানা দিতে হয়, তেমনই, ফি দিতে হয় সরকারকে। গুড়গাঁওয়ে এক একর চাষের জমি বাস্তুতে রূপান্তরিত করতে সরকারকে ২ কোটি টাকা দিতে হয়। অন্যত্রও অন্তত ৫০-৬০ লক্ষ টাকা ফি দিয়ে তবেই জমির চরিত্র বদল করা সম্ভব।

আর পশ্চিমবঙ্গে? ভূমি দফতরের এক কর্তা জানাচ্ছেন, পঞ্চায়েত এলাকায় এক একর চাষের জমি বাস্তু জমিতে রূপান্তরিত করতে সরকারকে দিতে হয় মাত্র ২০ হাজার টাকা। আর শহর এলাকায় কনভারসন চার্জ বাবদ দিতে হয় একর-পিছু মাত্র ৫০ হাজার টাকা। পাশাপাশি, আবাসন প্রকল্পের ক্ষেত্রে মাটি কাটা বা ভরাটের জন্য প্রতি ১০০ ঘন ফুটের জন্য ৭৮ টাকা ফি নেওয়া হয়। সে ক্ষেত্রে এক একর জমির জন্য ১ লক্ষ ৩৬ হাজার টাকা ফি দিলেই জমি মালিক চাষের জমিতে মাটি কাটা বা ভরাট করতে পারে।

সরকারকে এত কম টাকা দিতে হলেও আবাসন গড়তে চলা উদ্যোগপতির খরচ কিন্তু কম কিছু হয় না। লাল ফিতের ফাঁস ছাড়াতে প্রতিটি ধাপে টাকা দিতে হয় তাঁকে। ‘প্রভাবশালী’ ব্যক্তিদের সন্তুষ্ট করতে হয়। ফলে শেষমেশ টাকা খরচ হয়-ই। কিন্তু তা সরকারের কোষাগারে যায় না, বরং সময় নষ্ট হয়ে যায়। প্রয়োজনীয় ছাড়পত্র পেতে যত সময় গড়িয়ে যায়, প্রকল্পের খরচও তত চড়তে থাকে। শিল্প মহলের বক্তব্য, যেখানে সামান্য পরিমাণ জমির চরিত্র বদলাতেই কালঘাম ছুটে যায়, লক্ষ লক্ষ টাকা খরচ করতে হয়, সেখানে শয়ে শয়ে একর জমির চরিত্র পরিবর্ত করতে সরকারি কর্তারা কত খেল দেখাবেন, তা সহজেই অনুমেয়।

বস্তুত, এই ‘ঘুরপথে’ রোজগারের পথ খুলতে মুখ্যমন্ত্রীর একান্ত বিশ্বস্ত ববিকে বোড়ে হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে কি না, সেই প্রশ্নও তুলতে শুরু করেছেন অনেকে। এ ব্যাপারে ববি হাকিমের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা হয়। কিন্তু তিনি ফোন ধরেননি। তাঁর বক্তব্য জানতে এসএমএস-ও করা হয়। কিন্তু তাতেও সাড়া মেলেনি।

ফি-ই বরং ভাল

এই অবস্থায় নির্মাণ শিল্পমহলের মতে, সরকারি ও রাজনৈতিক কর্তাদের ঘুরপথে টাকা দিয়ে অনুমতি আদায়ের চেয়ে সরাসরি ফি আদায় করার ব্যবস্থা করাই শ্রেয়। তাদের প্রস্তাব, সিলিং বহির্ভূত জমি রাখার অনুমোদন দিতে সরকার মোটা ফি নিক, সেই সঙ্গে জমির চরিত্র বদলের জন্য ধার্য টাকার পরিমাণ বাড়িয়ে দেওয়া হোক। কিন্তু নিজেদের পকেট থেকে বাড়তি টাকা দেওয়ার আগ্রহ কেন?

নির্মাণ সংস্থাগুলির সংগঠন ক্রেডাই-এর এক সদস্য জানান, সরকারের বেঁধে দেওয়া ফি বেশি হলে আখেরে লাভ হবে দু’পক্ষেরই। তাঁর কথায়, “এ রাজ্যে কনভারসন বা জমির চরিত্র বদলের জন্য সরকারি ফি নেহাতই কম। কিন্তু তার জন্য আমাদের খরচ যে কম হয়, তা নয়। প্রভাবশালীদের খুশি করে তবেই চাষের জমির চরিত্র বদল করতে হয়। ফলে টাকা খরচ হয়। কিন্তু সেই টাকা সরকারের ঘরে যায় না।” তাঁর মতে, ফি-এর পরিমাণ বাড়ালে এক দিকে সরকারি কোষাগারে বেশি রাজস্ব আসবে। অন্য দিকে, এক টেবিল থেকে আরেক টেবিলে ফাইল ঠেলতে টাকা গুনতে হবে না। মোটা রাজস্ব আদায়ের জন্য সরকারি স্তরেই তৎপরতা তৈরি হবে। রাজস্ব আদায় করতে উপর মহল থেকে চাপ আসবে। ফলে ফাইল সহজেই নড়বে। স্বচ্ছতা আসবে।

এ বিষয়ে রেজিস্ট্রেশন ও স্ট্যাম্প ডিউটির উদাহরণ টেনে একটি নির্মাণ সংস্থার কর্তা বলেন, রেজিস্ট্রেশন ও স্ট্যাম্প ডিউটির পরিমাণ চড়া হওয়ায়, সংশ্লিষ্ট দফতরই দ্রুত কাজ শেষ করার তাগাদা দেয়। কনভার্সন ফি বাড়লেও একই ফল হবে বলে তাঁর আশা।

একই সঙ্গে তিনি জানান, ফি নির্দিষ্ট করা থাকলে প্রকল্পের খরচও সেই হিসেবে করা যায়। ছাড়পত্র আদায়ের জন্য হিসেব বহির্ভূত টাকা গুনতে হলে তা সম্ভব নয়। প্রকল্পের খরচও বেড়ে যায়। সেটা ক্রেতাদেরই দিতে হয়।

জমি হাঙরদের দাপট

শুধু সিলিং-এ ছাড়পত্র দেওয়া নয়, আবাসন প্রকল্পের জন্য জমি দখলের হাত ধরেও শাসক দলের তহবিল ভরার চেষ্টা হবে বলে অনেকের ধারণা। অনুমোদন পাওয়া আবাসন প্রকল্পগুলি মূলত চাষের জমি কিনেই গড়ে উঠবে। সরকার মধ্যস্থতাকারী হিসেবে না থাকায় অনেক ক্ষেত্রেই অনিচ্ছুক চাষিদের ভয় দেখিয়ে, জোর করে জমি কেড়ে নেওয়া হয় বলে অভিযোগ। যে ক্ষেত্রে তাঁদের জমিও যায়, টাকাও মেলে না।

ভূমি দফতরের এক কর্তা বলেন, “২০১০ সালে ভাঙড় এলাকার বেদিক ভিলেজ প্রকল্পের জমি কী ভাবে নেওয়া হয়েছিল তা তৎকালীন শাসক দলের আশ্রিত গুণ্ডাদের মারামারি না-হলে জানাই যেত না। ওই প্রকল্প দেখিয়ে দিয়েছে, রাজারহাট এলাকার আশপাশে বন্দুকের নলের সামনে কী ভাবে জমি নেওয়া হয়েছিল।” ওই কর্তার আশঙ্কা, এক সঙ্গে কলকাতার আশপাশে ২২টি উপনগরী প্রকল্পের ছাড়পত্র ফের জমি হাঙরদের উৎসাহিত করবে। যে কোনও মুহূর্তে আইনশৃঙ্খলার সমস্যাও মাথাচাড়া দিতে পারে বলে জানিয়েছেন তিনি।

রাজ্যের সরকারি আমলাদের একাংশ বলছেন, এক সঙ্গে ২২টি উপনগরী প্রকল্পের ছাড়পত্র দিয়ে রাজ্যে লগ্নির অঙ্ক নিয়ে ঢাকঢোল পেটানো হলেও সরকারের কোষাগারে রাজস্ব বিশেষ আসবে না। কিন্তু প্রকল্পগুলির ‘রাজনৈতিক ছাড়পত্র’ আদায় করতে জন্য উপনগরী নির্মাতাদের মোটা টাকা চাঁদা দিতেই হবে। পুরসভা ভোটের আগে শাসক দলের কোষাগার ভরাতে এই পথে হাঁটা জরুরি ছিল বলেই তাঁদের মত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

land policy west bengal
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE