উত্তরবঙ্গের চা বাগিচাগুলির দুর্দশার জন্য শ্রমিক সংগঠনগুলি দায়ী বলে মালিক সংগঠনের সভায় মন্তব্যকে ঘিরে বিতর্ক দেখা দিয়েছে। শনিবার বিন্নাগুড়ির সেন্ট্রাল ডুয়ার্স ক্লাবে চা মালিকপক্ষের সংগঠন ডিবিআইটি-র একটি সভা হয়। সেখানে বাগিচার দুর্দশার জন্য এক শ্রেণির শ্রমিক সংগঠনগুলির আন্দোলনই দায়ী বলে মন্তব্য করা হয় বলে অভিযোগ। এতেই ঘিরেই শ্রমিক সংগঠনগুলির মধ্যে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। রবিবার শিলিগুড়ির প্রধাননগরে তৃণমূল নেতা অলোক চক্রবর্তীর দফতরে একটি অনুষ্ঠান ছিল। সেখানে তৃণমূলের চা শ্রমিক সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটির কার্যকরী সভাপতি অলোকবাবু বলেন, ‘‘শনিবার মালিকদের একটি সংগঠনের সভায় চা বাগিচার দুর্দশার জন্য শ্রমিক সংগঠনগুলিকে দোষারোপ করা হয়েছে। এটা সঠিক নয়। শ্রমিক সংগঠনগুলি আইনের মধ্যে থেকে নিজেদের দাবিদাওয়া নিয়ে লড়াই করে। আদতে এক শ্রেণির অসাধু মালিকদের জন্যই বাগানগুলির এই দশা।’’ তিনি জানান, বর্তমানে বাগানে লিন পিরিওড চলছে। এই সমস্যা আয় কম বলে অনেক মালিকই বাগান ভালভাবে চালান না। শ্রমিকদের পাওয়াগন্ডা ঝুলিয়ে রাখেন। পরে তা বিরাট পরিমাণ বকেয়ায় দাঁড়ায়। বাগান মালিকেরা সঠিক কথা বলছেন না।
যদিও ডিবিআইটি-র পক্ষ থেকে অফিসারেরা জানিয়েছেন, শ্রমিক সংগঠনগুলি তাদের মতামত দিতেই পারেন। তবে ডুয়ার্স, পাহাড় সব মিলিয়ে যেরকম পরিস্থিতি চলছে তা বিবেচনা করেই ওই ধরণের মন্তব্য সভায় সামনে এসেছে। এতে অন্যায়ের কিছু নেই। বরং সবাই মিলে যাতে সমস্যা মেটে সেদিকে নজর দেওয়াটাই জরুরি। এদিন অলোকবাবু অনুষ্ঠানে চা মালিকদের অন্য দুটি সংগঠন আইটিএ এবং টাই-এর প্রতিনিধিরাও উপস্থিত ছিলেন। যদিও তাঁরা বিষয়টি নিয়ে কোনও মন্তব্য করেননি। তাঁরা জানান, বিষয়টি একেবারে কোনও সংগঠনের নিজেদের বক্তব্য। তা নিয়ে অন্য সংগঠনের তরফে কিছু বলা সম্ভব নয়।
মালিক সংগঠনের তরফে শ্রমিকদের দোষারোপ নিয়ে সরব হয়েছেন অন্য শ্রমিক সংগঠনগুলির। এনইউপিডব্লুউ-র কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি সদস্য মণি ডার্নাল বলেন, ‘‘সবসময় শ্রমিকদের দোষারোপ করা হয়। মালিকেরা যেন কিছুই করেন না। তাই আমরা সব সময় বলছি, অসাধু মালিকদের চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নিতে।’’ আবার আরএসপি-র প্রাক্তন সাংসদ তথা চা শ্রমিক নেতা মনোহর তিরকে বলেন, ‘‘একাংশ মালিকদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করা দরকার। ল সাসপেনশন অব ওয়ার্কের প্রসঙ্গ আসলেই একটি তদন্ত কমিটি দরকার। ঠিক কী জন্য কী হল তা দেখা দরকার। সব সময় আমরা দেখি, শ্রমিকেরা দোষী। এটা ঠিক নয়।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy