এক উপাচার্যের বিরুদ্ধে গণভোটের আয়োজন করেছিলেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরা। এ বার নতুন উপাচার্য বাছাইয়ের কমিটিতে সদস্য কে হবেন, গোপন ভোটেই তা স্থির করল সেখানকার সর্বোচ্চ সিদ্ধান্ত গ্রহণকারী সংস্থা ‘কোর্ট’। ভোটাভুটির মাধ্যমে ওই সদস্য হিসেবে চূড়ান্ত হয় ভুবনেশ্বরের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব সায়েন্স এডুকেশন অ্যান্ড রিসার্চ বা নাইসার-এর অধিকর্তা ভি চন্দ্রশেখরের নাম।
পড়ুয়াদের দীর্ঘ আন্দোলন এবং শেষাবধি মুখ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপে জানুয়ারিতে পদত্যাগ করেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন উপাচার্য অভিজিৎ চক্রবর্তী। তাঁর জায়গায় স্থায়ী ভাবে কে আসবেন, তা স্থির করতেই নতুন করে সার্চ বা সন্ধান কমিটি তৈরি করছে রাজ্য সরকার।
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রের খবর, ওই কমিটিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোনীত সদস্য হিসেবে তিনটি নাম প্রস্তাব করা হয়। ভি চন্দ্রশেখর ছাড়াও একটি কেন্দ্রীয় গবেষণা সংস্থার অধিকর্তা এবং একটি রাজ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের নাম ছিল সেই প্রস্তাবে। কিন্তু চন্দ্রশেখরের তুলনায় ওই দু’জনই অনেক কম ভোট পেয়েছেন। কিন্তু এই নিয়ে ভোটাভুটিতে যেতে হল কেন? যাদবপুরের রেজিস্ট্রার প্রদীপ ঘোষ বলেন, “সাধারণত একাধিক নাম প্রস্তাব করা হলে ঐকমত্যের ভিত্তিতেই এক জনকে বেছে নেওয়া হয়। কিন্তু এ বার তা হয়নি। সেই জন্য ভোটাভুটি ছাড়া উপায় ছিল না।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের কোর্টে ৩৭ জন বিভাগীয় প্রধান, চার বিভাগের ডিন, উপাচার্য, সহ-উপাচার্য, রাজ্যপালের মনোনীত পাঁচ জন সদস্য ছাড়াও সরকার, উচ্চশিক্ষা সংসদ, ইউজিসি, এনসিটিই মনোনীত সদস্যেরা এবং মধ্যশিক্ষা পর্ষদ, উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ, মাদ্রাসা পর্ষদের সভাপতিরা থাকেন। কোর্টের এ দিনের বৈঠকে অবশ্য সকলে উপস্থিত ছিলেন না। জনা ৪০ সদস্য ছিলেন বলে বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গিয়েছে।
প্রাক্তন উপাচার্য অভিজিৎবাবু শাসক দলের ঘনিষ্ঠ ছিলেন বলে অভিযোগ। অভিজিৎবাবুর প্রশাসনিক দক্ষতা, শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তো ছিলই। এমনকী তিনি গবেষণাপত্র নকল করেছেন বলেও অভিযোগ উঠেছে বিভিন্ন সময়ে। পরবর্তী উপাচার্য বাছাইয়ের ক্ষেত্রে তাই বিশেষ সতর্ক বিশ্ববিদ্যালয়-কর্তৃপক্ষ। এই প্রক্রিয়ায় নতুন কোনও বিতর্ক চায় না যাদবপুর। তাই স্বচ্ছতা বজায় রাখার তাগিদেই ভোটাভুটির ব্যবস্থা করা হয়েছিল বলে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাংশের অভিমত।
সার্চ কমিটিতে আচার্য-রাজ্যপালের মনোনীত সদস্যের নাম চেয়ে আগেই চিঠি গিয়েছে রাজভবনে। যদিও এখনও তার জবাব মেলেনি বলে সরকারি সূত্রের খবর। বিশ্ববিদ্যালয় মনোনীত সদস্যের নাম পাওয়ার পরে এ বার রাজ্যপালের কাছে ফের দরবার করবে সরকার। এ বার সরকার মনোনীত সদস্য বাছাইয়ের প্রক্রিয়াও শুরু হবে।
যাদবপুর ছাড়াও বারাসতের রাষ্ট্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বাছাইয়ের কমিটিতে রাজ্যপালের মনোনীত সদস্যের নাম চেয়েছিল সরকার। সেই নাম পাওয়া গিয়েছে। রাজ্যপাল ওই কমিটির জন্য প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অনুরাধা লোহিয়াকে বেছে নিয়েছেন বলে সরকারি সূত্রের খবর।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy