Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

জয় বাবা বিশ্বনাথে রক্ষা হয়নি

ছবি হিসেবে দানা বাঁধল না। লিখছেন অরিজিৎ চক্রবর্তীমধ্যবিত্ত কেরানি সুব্রত। প্রতিদিন দশটা-পাঁচটা অফিস। কিন্তু সময় পেলেই মুখ গোঁজে কবিতার বইয়ে। সুব্রতর স্ত্রী সুমিতা। সকাল সকাল ছেলেকে স্কুলে পাঠানো আর স্কুল ফেরত তাকে স্নান করিয়ে খাওয়ানো রুটিনে পরিণত। কিন্তু তাঁর সুপ্তবাসনা অভিনেত্রী হওয়ার। টলিউডের সফল পরিচালক অনির্বাণ। নতুন ফ্ল্যাট, নতুন গাড়ি। কিন্তু মনে প্রাণে চায় যাতে নামের থেকে ‘রিমেক মেকার’য়ের তকমাটা মুছে যায়।

শেষ আপডেট: ১১ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ১৮:৪০
Share: Save:

মধ্যবিত্ত কেরানি সুব্রত। প্রতিদিন দশটা-পাঁচটা অফিস। কিন্তু সময় পেলেই মুখ গোঁজে কবিতার বইয়ে।

সুব্রতর স্ত্রী সুমিতা। সকাল সকাল ছেলেকে স্কুলে পাঠানো আর স্কুল ফেরত তাকে স্নান করিয়ে খাওয়ানো রুটিনে পরিণত। কিন্তু তাঁর সুপ্তবাসনা অভিনেত্রী হওয়ার।

টলিউডের সফল পরিচালক অনির্বাণ। নতুন ফ্ল্যাট, নতুন গাড়ি। কিন্তু মনে প্রাণে চায় যাতে নামের থেকে ‘রিমেক মেকার’য়ের তকমাটা মুছে যায়।

ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করা সৌম্য। ইন্টারভিউ পর্যন্ত দিতে যায় না। চেয়ারে বসে কম্পিউটার প্রোগ্রামের কোড লেখা নয়, ফোটোগ্রাফিকে চায় পেশা করতে।

আর এই চাহিদার পথে হাঁটতে হাঁটতে তাঁরা খুঁজে পায় নিজেদের। পরিচালক অর্ক সিংহের ‘আমার আমি’ ছবি সেই খুঁজে পাওয়ার গল্প বলতে চেয়েছে। এবং চেষ্টার ত্রুটি রাখেননি পঁচিশ বছরের এই পরিচালক। এত অল্প বয়সে প্রথম ফিচার ফিল্ম পরিচালনা করার বিচারে পাশ নম্বর পেয়েছেন বলাই যায়। অভিজ্ঞতা বাড়লে নিশ্চয়ই তাঁর কাছ থেকে আরও ভাল ছবি পাওয়া যাবে।

এ ছবিতে পরিচালকের কাজে অনেকটাই সাহায্য করেছেন অভিনেতারা। অনির্বাণের চরিত্রে রাহুল, সৌম্যর চরিত্রে ইন্দ্রাশিস রায় আর সুমিতার ভূমিকায় অরুণিমা ঘোষ বেশ ভাল। তবে চমকে দিয়েছেন বিশ্বনাথ। তাঁর অভিনীত সুব্রত অফিসের কাজের মধ্যেই কবিতার বই পড়ে, টার্গেট পূরণ করতে না-পারায় বসের ঝাড় মুখ বুজে সহ্য করে, রাতে বৌ বাড়ি না-ফিরলেও একটা নির্লিপ্ত অভিব্যক্তি মুখে ধরে রাখে। আবার সে-ই রাতে শাওয়ারের নীচে দাঁড়িয়ে ভেঙে পড়ে কান্নায় সবই খুব চমৎকার ফুটিয়ে তুলেছেন বিশ্বনাথ। এর আগে ‘উড়ো চিঠি’তেও একই রকমের একটা চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন বিশ্বনাথ। ছবির পাওয়া নম্বরের এক নম্বর শুধু তাঁর জন্যই দেওয়া যায়। এত ভাল অভিনেতাকে কেন যে টলিউড বেশি ব্যবহার করল না, কে জানে?

শুধু অভিনেতারা ভাল অভিনয় করলেই তো হয় না। চিত্রনাট্যের যোগ্য সঙ্গত সেখানে বাঞ্ছনীয়। এখানেই দানা বাঁধতে সক্ষম হয়নি ‘আমার আমি’। প্লট আর সাব-প্লটে মাঝে মাঝেই পথ হারিয়ে ফেলেছে। সংলাপও অনেক জায়গায় শিথিল। কিছু কিছু ‘ওয়ান লাইনার’ ভাল। যেমন, সৌম্যকে অন্য একটি মেয়ের ফেসবুকের জন্য ছবি তুলে দেওয়ায় বিরক্ত হয়ে সৌম্যর বান্ধবী বলে, ‘ভারি তো ফেস আর বুক! তাই আবার ফেসবুক।’ কিন্তু এই ওয়ান লাইনারই ব্যবহার করা হয়েছে দু’-দু’বার। সব কিছুরই বেশি ব্যবহারে ধার কমে। এখানে তাই একটু সংযমী হওয়া দরকার ছিল।

নতুন পরিচালকের মতো সঙ্গীত পরিচালকও নতুন। কবীর চট্টোপাধ্যায় ও শিবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে গানগুলো আরও ভাল হওয়ার জায়গা ছিল।

তবে সিনেমা হলে তো দর্শক আলাদা আলাদা বিভাগ দেখে না। সে সমগ্রটাই দেখতে যায়। সেখানে কিন্তু ফিল্মের ‘আমি’কে খুঁজে পাওয়া গেল না।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

anandaplus arijit chakrabarty amar ami biswanath
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE