Advertisement
১৯ মার্চ ২০২৪

‘নিজের কাজের ধারা বদলাতে চেয়েছিলাম’

অন্য ঘরানার ছবিতে প্রধান মুখ তিনি। ছক ভাঙা পথেই কেরিয়ারে এগোতে চান আয়ুষ্মান খুরানাঅন্য ঘরানার ছবিতে প্রধান মুখ তিনি। ছক ভাঙা পথেই কেরিয়ারে এগোতে চান আয়ুষ্মান খুরানা

আয়ুষ্মান

আয়ুষ্মান

শ্রাবন্তী চক্রবর্তী
মুম্বই শেষ আপডেট: ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০০:০০
Share: Save:

প্র: ‘অন্ধাধুন’ এবং ‘বধাই হো’ পরপর মুক্তি পাচ্ছে। এক জন অভিনেতার কাছে এটা লাভ না ক্ষতি?

উ: গত বছর যখন ‘শুভ মঙ্গল সাবধান’ আর ‘বরেলী কী বরফি’ পরপর এসেছিল, তখন দর্শকের ভালবাসা পেয়েছিলাম। কিন্তু ছবির ব্যবসা কম হয়েছিল। দুটো ভাল ছবির মধ্যে ব্যবধান থাকলে বক্স অফিসে নম্বর একটু বেশি আসে বইকী।

প্র: শ্রীরাম রাঘবনের সঙ্গে অনেক দিন ধরে কাজ করতে চাইছিলেন...

উ: আমার বাকেট লিস্টে একদম প্রথম নাম ওঁরই ছিল। গত ছ’বছর ধরে আমি স্লাইস অব লাইফ জঁরের ছবিতে অভিনয় করছি। কাজের ধারাটা পাল্টাতে চাইছিলাম। নিজে থেকেই শ্রীরাম রাঘবনকে ফোন করেছিলাম। প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পরে প্রথম বার আমি কোনও ডিরেক্টরকে ফোন করি কাজ চাওয়ার জন্য। নিউকামার থাকার সময়ে অনেক ধাক্কা খেয়েছি। কেউ ফোন পর্যন্ত ধরত না। শ্রীরাম আমাকে বলেন, এই ধরনের ছবি আমার জন্য নয়। আমি বললাম, তাই তো আপনার কাছে এসেছি। স্ক্রিন টেস্টের পরে উনি সন্তুষ্ট হয়ে আমাকে কাস্ট করেন। নিজেই স্ক্রিন টেস্টের কথা বলেছিলাম। আমার কোনও ইগো নেই।

প্র: ‘অন্ধাধুন’-এ কি কেরিয়ারের সবচেয়ে কঠিন চরিত্র পেলেন?

উ: আগে হলে ‘দম লাগাকে হাইসা’র কথাই বলতাম। এখন ‘অন্ধাধুন’ই এগিয়ে থাকবে। অন্ধ পিয়ানোবাদকের চরিত্র করার প্রসেসটা বেশ কঠিন ছিল। পিয়ানো বাজানো এমনিতেই কঠিন কাজ। আমি মিউজ়িশিয়ান বলে মোটে ছ’মাসে তিন-চার ঘণ্টার প্র্যাকটিসে শিখে ফেলেছি।

প্র: শ্রীরাম রাঘবনের কাজের ধরন আলাদা। আপনার অভিজ্ঞতা কেমন?

উ: মুম্বইয়ের ওয়র্লিতে একটি বড় ব্লাইন্ড স্কুল আছে। সেখানে গিয়েছিলাম। এক জন অন্ধ মিউজ়িশিয়ানকে শ্রীরাম স্যরের অফিসে ডাকা হয়েছিল। তাঁর হাঁটাচলা, হাবভাব, সিঁড়ি দিয়ে ওঠানামা সব খুব কাছ থেকে দেখেছিলাম। এগুলোই সাহায্য করেছে।

প্র: টেলিভিশন-রেডিয়োয় কাজ করেছেন। সিনেমায় আপনার স্ট্রাগলের ধারাটা কি একটু আলাদা ছিল?

উ: রেডিয়ো প্রেজ়েন্টার বা টিভি শোয়ের হোস্ট হিসেবে সেলেব্রিটিদের সাক্ষাৎকার নেওয়ার সময়েই আমার একটা ফেস ভ্যালু তৈরি হয়ে গিয়েছিল। যদিও একমাত্র সুজিত সরকার ছাড়া আমার উপর আর কেউ ভরসা করেননি। ‘ভিকি ডোনর’ আমার কেরিয়ারের জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ ছিল।

প্র: তব্বুর সঙ্গে কাজের অভিজ্ঞতা কেমন?

উ: ভীষণ ভাল! নব্বই দশকের বড় স্টার উনি। সেই সময়ে একটু চড়া দাগে অভিনয় হতো। এখনকার ধারাটা একেবারে অন্য। তব্বু কিন্তু সময়ের সঙ্গে নিজেকে বদলেছেন। উনি এক দিকে ‘গোলমাল’, অন্য দিকে ‘হায়দর’, ‘অন্ধাধুন’ করছেন। আমার মতে, সেটা বড় গুণ।

প্র: বাকি অভিনেতাদের চেয়ে অনেকটাই আলাদা ধাঁচের কেরিয়ার আপনার...

উ: সেটা প্রথম ছবি থেকেই তৈরি হয়ে গিয়েছিল। থিয়েটার করার আগে ‘নুক্কড় প্লে’ করতাম। আর সেখানে দর্শককে ডেকে আনতে হতো নাটক দেখানোর জন্য। দর্শকের আগ্রহ কাড়তে না পারলে তাঁরা উঠে চলে যাবেন। নুক্কড় নাটক সাধারণত সামাজিক বিষয়ের উপরে হয়। দর্শকের বিনোদনের বিষয়টাও মাথায় রাখার দরকার। ছবি করার সময়েও ওটাই কাজে লেগেছে।

প্র: আপনার ভাই অপারশক্তি ভাল কাজ করছে। ওঁর শেষ ছবি ‘স্ত্রী’ বক্স অফিসে সফলও...

উ: ও কিন্তু নিজের পথ নিজেই তৈরি করেছে। আমাদের দু’জনের মধ্যে তুলনা করা হয়। কিন্তু অভিনেতা হিসেবে আমরা খুবই আলাদা। আমি অভিনয়ের ব্যাপারে সূক্ষ্মতার দিকে নজর দিই। ও কিন্তু আউটগোয়িং।

প্র: কাজ সামলে সন্তানদের সময় দিতে পারেন?

উ: খুব কঠিন। অভিনেতার জীবন সহজ নয়। অনেক ট্র্যাভেলিং করতে হয়। কম বয়সে বাবা হয়েছি। তাই আমার সঙ্গে বাচ্চাদের বয়সের ব্যবধান খুব বেশি নয়। আমি ওদের সঙ্গে বন্ধুর মতো মেশার চেষ্টা করি। আমার ছেলের মিউজ়িকে খুব আগ্রহ। আমার জন্য বাড়িতে পিয়ানো এসেছিল। এখন ও বাজায়।

প্র: মিউজ়িক আপনার কেরিয়ারে কতটা গুরুত্বপূর্ণ?

উ: আমার সব ছবিতে আমার কণ্ঠে একটা গান থাকবেই। এ ছাড়া আমি প্রতি বছর একটা করে সিঙ্গল লঞ্চ করি। আমার ব্যান্ডের সঙ্গে লাইভ কনসার্ট করে থাকি। যদিও আমার কেরিয়ারে অভিনয়ের গুরুত্ব এই মুহূর্তে বেশি।

প্র: আপনার লেখা কবিতা সোশ্যাল মিডিয়ায় জনপ্রিয়। নিয়মিত লিখছেন?

উ: শুটের ফাঁকে কখনও বা ট্র্যাভেলের সময়ে মনে যত নতুন ভাবনা আসে, লিখে ফেলি। ফোনে লেখা আরও সহজ। কাগজে-কলমে লেখাটা মিস করি। ইচ্ছে আছে, একটা স্ক্রিপ্ট লেখার। তবে তার জন্য চাই নিরবচ্ছিন্ন অবসর। শটের ফাঁকে কি স্ক্রিপ্ট লেখা যায়?

প্র: ইন্ডাস্ট্রিতে প্রতিযোগিতামূলক মনোভাব নিয়ে চলেন?

উ: আমি কম্পিটিটিভ নই। যার সঙ্গে কাজ করি, তাকে সব সময়ে এগিয়ে রাখি। যাতে সে-ও আমার সঙ্গে কাজে উৎসাহী থাকে। নিজের জায়গা নিয়ে আমি নিশ্চিন্ত। সকলের মধ্যেও আমাকে চোখে পড়ে দর্শকের। তা ছাড়া ইন্ডাস্ট্রি খুব ভাল সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। নতুন হিরো আসছে। টাইগারের চেয়ে বরুণ আলাদা। আবার রণবীর সিংহের চেয়ে রণবীর কপূর আলাদা। আমি রাজকুমার রাওয়ের চেয়ে আলাদা। অন্যের কাজ দেখার থেকে স্কিল তৈরি করা জরুরি।

প্র: আপনার স্ত্রী তাহিরা লেখেন এবং ছবিও পরিচালনা করছেন। আপনার জন্য ছবি কবে লিখবেন?

উ: কোনও স্ক্রিপ্ট হাতে এলে প্রথমেই তাহিরাকে শোনাই। কলেজ থেকে আমাদের সম্পর্ক। একসঙ্গে নাটক করেছি, ওরই লেখা। আমার জন্যও লিখবে কখনও না কখনও (হাসি)।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Ayushmann Khurrana Celebrities Bollywood
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE