কনীনিকা। ছবি: কনীনিকা বন্দোপাধ্যায়ের ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টের সৌজন্যে।
অনেক দিন ধরে নিজের সঙ্গে, পারিপার্শ্বিকের সঙ্গে একটা লড়াই চালাচ্ছিলেন। সব লড়াইয়ে হয়তো জিততে পারেননি। কিছু লড়াইয়ে মাঝপথেই দাঁড়ি টেনেছেন। কিন্তু ঘরে-বাইরে মাতৃত্বের যে লড়াই লড়ছিলেন, সেখানে তিনি বিজয়ী। চার মাসের অন্তঃস্বত্ত্বা কনীনিকা। তাঁর ঘনিষ্ঠজনেরা জানেন মা হওয়ার জন্য কতটা প্রতিকূলতার সঙ্গে লড়তে হয়েছে তাঁকে। সাংবাদিকের রেকর্ডারের সামনে অবশ্য সেই দিনগুলোয় ফিরতে চাইলেন না। ছবির রিলিজ ও মাতৃত্বের আনন্দেই থাকতে চান কনীনিকা।
প্র: অনেক অভিনন্দন। আপনার শরীর কেমন?
উ: ধন্যবাদ। ভাল আছি, কিছু সাবধানতা মানতে হচ্ছে এই যা।
প্র: এখন তো কাজ করছেন না?
উ: না। এই মুহূর্তে মাতৃত্ব উপভোগ করতে চাই। এই অনুভূতিটা খুব স্পেশ্যাল।
প্র: ‘মুখার্জীদার বউ’ করার সময়েই তো আপনি প্রেগন্যান্ট?
উ: হ্যাঁ। তখন আমার দু’মাস চলছে। শারীরিক সমস্যাও হচ্ছিল কিছু। কাজের মাঝে ঘুম পেয়ে যেত। লোভে পড়েই কাজটা করেছি। শারীরিক অসুবিধে হলেও ছবিটা ছাড়তে চাইছিলাম না।
প্র: চরিত্রটা পছন্দ হয়ে গিয়েছিল বলেই কি ছাড়তে চাইলেন না?
উ: সেটা অবশ্যই একটা কারণ। ছবিতে আমার চরিত্রের মতো অনেককে আমরা নিজেদের আশেপাশে দেখি। দর্শক রিলেট করতে পারবেন। কিন্তু তার চেয়েও বড় কারণ আমাকে কেউ লিড চরিত্রের প্রস্তাব দিচ্ছে! কেউ আমাকে মুখ্য চরিত্রে ভাবছে সেটা শুনলেই খুশি হয়ে যাই। যে কারণে চিত্রনাট্য না শুনেই রাজি হয়ে যাই। তা ছাড়া শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়-নন্দিতা রায় একটা বড় কারণ। ওঁদের সঙ্গে কাজ করতে ভাল লাগে। ‘হামি’তেও কাজ করেছি। ‘কণ্ঠ’তেও ওঁরা আমাকে সুযোগ দিয়েছেন। এত বড় পরিচালক হওয়া সত্ত্বেও ওঁদের ব্যবহারে সেই অহংবোধ নেই।
প্র: ‘মু্খার্জীদার বউ’-এর পরিচালক পৃথা চক্রবর্তীর এটা প্রথম ছবি। কাজের অভিজ্ঞতা কেমন?
উ: কাজ করতে গিয়ে মনে হয়নি পৃথার এটা প্রথম কাজ। কী ভাবে কী করবে সবটা ওর কাছে খুব ক্লিয়ার। ছবির ইউনিট আমাকে খুব সাপোর্ট করেছে।
প্র: এই ছবিতে কাজ করলেন, অথচ তার আগে ধারাবাহিক ‘অন্দরমহল’ ছেড়ে দিলেন! কেন?
উ: মেগা সিরিয়ালে কাজ করা অনেক বেশি হেকটিক। আমার শরীর খারাপ হয়ে যাচ্ছিল। প্রেগন্যান্সির চেষ্টা করছিলাম, সেই জন্য আমাকে অনেক মেডিকেশনের মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছিল। যে কারণে আমি ধারাবাহিকের নির্মাতাদের দু’মাসের আগাম নোটিসও দিয়েছিলাম।
প্র: ‘অন্দরমহল’-এর নির্মাতাদের সঙ্গে আপনার সম্পর্ক তো বেশ তিক্ত হয়ে যায় শেষের দিকে। বলা হয়, আপনার জন্যই সিরিয়াল বন্ধ করা হল।
উ: আমার দিক থেকে কিন্তু আমি একশো শতাংশ সৎ ছিলাম। সিরিয়াল চালাতে যাতে সমস্যা না হয়, তার জন্য আগাম নোটিস দিয়েছি। এমনকি, প্রেগন্যান্সির প্রথম এক মাস আমি কাজও করেছি। তার চেয়ে বেশি পারতাম না। সকলেই জানেন কতটা চাপের মধ্যে ধারাবাহিকের শুটিং হয়। ধারাবাহিকের মুখ বদলে দেওয়ার ঘটনা তো ঘটেই থাকে। এ ক্ষেত্রে কি সেটা করা যেত না? সেই মুহূর্তে এবং এখনও আমার কাছে মাতৃত্ব অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ।
প্র: শোনা যায়, ধারাবাহিকের নিমার্তারা আপনার পারিশ্রমিক কয়েক লক্ষ টাকা দেননি। ঠিক?
উ: বেঠিক বলি কী করে বলুন তো! আমি ওঁদের থেকে ১১ লক্ষ টাকা পাই। যা অনেক বার বলা সত্ত্বেও আমাকে দেওয়া হয়নি।
প্র: এ নিয়ে আর্টিস্ট ফোরাম বা অন্য কোথাও অভিযোগ করলেন না?
উ: আর্টিস্ট ফোরামেও বলেছি, ইন্ডাস্ট্রির দাদাদেরও বলেছি। কোনও লাভ হয়নি। ভেবেছিলাম মামলা করব। কিন্তু দেখলাম এত ক্ষমতাবানদের সঙ্গে লড়াই করতে গেলে যে পরিশ্রমটা করতে হবে, সেটা করার মতো শারীরিক বা মানসিক কোনও অবস্থাই আমার নেই। তার চেয়ে ছেড়ে দেওয়াই ভাল। ভগবানই বিচার করবেন।
প্র: এখন তো অনেক দিন কাজ করবেন না। কেরিয়ারের জন্য সেটা সমস্যা তৈরি করবে না?
উ: করবে তো বটেই। কিন্তু সে সব নিয়ে এখন ভাবছি না। মা হওয়ার এই সময়টা উপভোগ করতে চাই। অনেক লড়াই তো করেছি জীবনে, আবার না হয় শূন্য থেকে শুরু করব।
প্র: পরিবারের সকলে কী বলছেন?
উ: খুব বেশি লোকজন জানেন না। তবে যাঁরা আমাকে ভালবাসেন, তাঁরা সকলেই খুশি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy