মৃণাল
চলে গেলেন অভিনেতা মৃণাল মুখোপাধ্যায়। গত কয়েক মাস ধরে ক্যানসারে ভুগছিলেন তিনি। মাঝে সুস্থ হলেও সম্প্রতি জন্ডিস ধরা পড়ে অভিনেতার। মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে তিনটে নাগাদ দক্ষিণ কলকাতার এক নার্সিংহোমে মৃত্যু হয় তাঁর। বয়স হয়েছিল ৭৪ বছর। তপন সিংহের ছবিতে এক সময়ে নিয়মিত অভিনয় করেছেন মৃণাল। তাঁরই মেয়ে জনপ্রিয় সঙ্গীতশিল্পী মিস জোজো। মঙ্গলবার মিস জোজো আনন্দ প্লাসকে ফোনে বলেন, ‘‘আমার অনুপ্রেরণা ছিলেন বাবা। ওঁর চলে যাওয়াটা অপূরণীয় ক্ষতি। আমার গানের শুরু ওঁর কাছে... যখন রেওয়াজ করতেন, হামাগুড়ি দিয়ে কোলে উঠে পড়তাম। শুনেছিলাম, সুরে ‘সা’ বলতে পারতাম বলে খুশি হতেন।’’
জোজো জানালেন, শেষ ‘জয়কালী কলকাত্তাওয়ালি’ ধারাবাহিকের শুটিং করেন মৃণাল। তার আগে ‘আমলকী’তেও কাজ করেছিলেন। ‘‘ক্যানসার ধরা পড়লেও বাবা কেমোথেরাপি নিতে চাননি। চেহারা খারাপ হয়ে যাবে বলে। অভিনেতা হিসেবে এতটাই ডেডিকেশন ছিল ওঁর,’’ বলছিলেন জোজো। তাই বিকল্প পদ্ধতিতে চিকিৎসা চলছিল অভিনেতার।
মৃণালের প্রথম ছবি ‘বিলম্বিত লয়’। তার পরে একে একে ‘শঙ্খবেলা’, ‘ছুটি’, ‘আপনজন’-এর মতো ছবিতে দর্শক আবিষ্কার করেন এক সুপুরুষ অভিনেতাকে। পরে মুম্বইয়ে গিয়ে হৃষীকেশ মুখোপাধ্যায় এবং গুলজ়ারের সঙ্গেও কাজ করেছিলেন। মুম্বই যাতায়াতের সময়টায় প্রথম স্ত্রী শিবানীর সঙ্গে বিচ্ছেদ হয় তাঁর। পরে বাসবদত্তাকে বিয়ে করেন মৃণাল। জোজো ছাড়াও তাঁর আরও দুই সন্তান রয়েছে— দেবপ্রিয় এবং টিনা।
বাংলা ইন্ডাস্ট্রিতে একই সঙ্গে গায়ক এবং নায়ক খুব একটা দেখা যায় না। মৃণাল ছিলেন সেই দুর্লভ শিল্পী, যিনি অভিনয়ের সঙ্গে গানও গাইতেন। দীপালি নাগের ছাত্র ছিলেন। ‘ছুটি’ ছবিতে ওঁর সঙ্গে অভিনয় করেছিলেন রোমি চৌধুরী। রোমি ছিলেন শিবানীর বোন। তাঁকে ছবির পরিচালক অরুন্ধতী দেবীর কাছে নিয়ে গিয়েছিলেন মৃণালই। রোমি জানালেন, তপন সিংহের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা ছিল মৃণালের। ‘‘তপনদা ‘শঙ্খবেলা’ দেখে মৃণালদাকে নিজের ছবিতে কাজের জন্য ডাকেন। তপনদার হাতেই তৈরি মৃণালদা। আবার ‘শঙ্খবেলা’র পরে উত্তমকুমারের সঙ্গেও ওঁর খুব সুন্দর একটা সম্পর্ক তৈরি হয়।’’
জীবনের নিয়মে মৃণাল চলে গেলেন বটে, কিন্তু রেখে গেলেন তাঁর নামের সঙ্গে জড়িয়ে থাকা অজস্র স্মৃতি...
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy