কাজলের সঙ্গে ঋদ্ধির সেলফি
বলিউডে ‘চৌরঙ্গা’, ‘পার্চড’, ‘ভূমি’র পরে ফের হিন্দি ছবিতে কাজ শুরু করে দিয়েছেন ঋদ্ধি সেন। এ বার কাজলের ছেলের ভূমিকায় অভিনয় করছেন তিনি। প্রিয় অভিনেত্রীর বিপরীতে কাজের সুযোগ পেলেন কী ভাবে? ‘‘এক দুপুরবেলায় প্রদীপদা ফোন করে বললেন, ‘শোন একটা কথা বলব, বেশি ভাও খাবি না। কাজলের ছেলের চরিত্রে তুই অভিনয় করবি।’ তার মাসখানেক পরেই বললেন, ‘মুম্বইয়ের টিকিট পাঠাচ্ছি। চলে আয়।’ গত বছর জুলাইয়ের ঘটনা সেটা। ভেবেছিলাম, অডিশন হবে। কিন্তু পৌঁছতেই অপেক্ষা করেছিল আরও এক দফা বিস্ময়! আমাকে কনট্র্যাক্ট সাইন করতে বললেন প্রদীপদা। ‘ইলা’য় কাজল ম্যামের পাশাপাশি আমিও মুখ্য ভূমিকায়। প্রথম দিকে একটু নার্ভাস ছিলাম। তবে কিছু দিন পর দেখি, প্রদীপদা আমার পারফরম্যান্সে খুশি।’’ তবে এই সুযোগের নেপথ্যে রয়েছে ২০১৬য় প্রদীপ সরকারের পরিচালনায় একটি বিজ্ঞাপনের কাজ। ঋদ্ধি খোলসা করলেন সে কথা, ‘‘আমাকে সে সময়েই বলেছিলেন, তুই চেহারাটা ধরে রাখিস। শুনেছি, বিজ্ঞাপনের কাজ শেষে প্রদীপদা বাড়িতে বলেছিলেন, ছবির ভিভানকে পেয়ে গিয়েছি।’’
‘ইলা’ গল্প আবর্তিত হয়েছে মা ও ছেলের সম্পর্ককে কেন্দ্র করে। ইলার (কাজল) গায়িকা হওয়ার স্বপ্ন অধরা থাকার কারণে, তার সম্পূর্ণ মনোযোগ গিয়ে পড়ে ছেলে ভিভানের (ঋদ্ধি) উপর। এ দিকে ভিভান মায়ের এই সমস্যাটা বুঝলেও, অনেক সময়েই বিরক্ত বোধ করে মায়ের এই অতিরিক্ত উৎসাহে। সম্পর্কের টানাপড়েন নিয়েই এগোতে থাকে ছবির গল্প।
বলিউডের এই নামী নায়িকার সঙ্গে স্ক্রিন শেয়ার করে কেমন লাগল? প্রশ্ন শুনেই উত্তেজনা ঋদ্ধির গলায়, ‘‘কাজল ম্যাম সেটে থাকলে কেউ সিরিয়াস থাকতে পারে না। এতটাই মজার মানুষ! কে বলবে উনি মেগাস্টার! আদ্যন্ত ফ্যামিলি পার্সন। আমাকে বলেছেন, ‘সন্তান হওয়ার পর ঠিক করেছি, আর ছবি করব না। আমি চাইনি এত পাপারাৎজি আর চাপের মধ্যে বেড়ে উঠুক ছেলেমেয়েরা।’ সেটে বলিউড নিয়ে বেশি কথা বলেন না উনি। প্রদীপদা আমাকে শুটের ফাঁকে বলছিলেন, ‘ওঁর কোনও ট্যানট্রাম দেখবি না। যখনই রিহার্সালে ডাকি, কাজল ইজ অলওয়েজ দেয়ার।’ কাজল ম্যাম এমনটাই। আমাকেও খুব ভালবাসেন। শুটের ফার্স্ট শেডিউলে দিন দশেকের বিরতি কাটিয়ে আমাকে দেখেই জড়িয়ে ধরে বলেছিলেন, ‘তোমাকে খুব মিস করছিলাম। ফাইনালি দেখে ভাল লাগছে। আই অ্যাম ফিলিং সো গুড।’ ওঁর সঙ্গে কাজ করে কী শিখলেন? ‘‘এত বড় তারকা হওয়া সত্ত্বেও ক্লোজ শট নেওয়ার সময়ে সিরিয়াসলি আমাকে কিউ দিচ্ছেন। আমি শুনেছিলাম, ‘দ্য লাস্ট লিয়র’-এ অমিতাভ বচ্চন এটা করতেন। কখনও কিউ দিতে গিয়ে ভুল হলে এত বার সরি বলতেন যে, আমি লজ্জায় পড়ে যেতাম। অ্যাক্টরের থেকে কো-অ্যাক্টর হওয়া আরও চাপের ব্যাপার।
আর পরিচালক? ‘‘কাজ নিয়ে ভীষণ খুঁতখুঁতে প্রদীপদা। তবে শিল্পীকে যথেষ্ট স্বাধীনতা দেন তিনি। ভীষণ ইমোশনালও। আমার আর কাজল ম্যামের একটা ইনটেন্স সিন মনিটরে দেখে কেঁদেই ফেলেছিলেন।’’ ‘ইলা’র সেটে পরিচালক, তাঁর সহকারী এবং অভিনেতাদের অনেকেই বাঙালি। এমন পরিবেশে বাংলায় আড্ডা হবে না, তা হয় নাকি! ‘‘প্রদীপদা তো ওখানে বাংলাতেই কথা বলতেন। এক দিন ক্যামেরা পজিশনের নির্দেশ সেরে কাজল ম্যামকে বাংলাতেই সিন বোঝাতে শুরু করে দিলেন। কাজল ম্যাম তো হকচকিয়ে বললেন, ‘দাদা, এ রকম কেন করছেন আমার সঙ্গে?’ আড্ডার পাশাপাশি খাওয়াদাওয়াও বেশ জমজমাট। সেটে সবচেয়ে উন্মাদনা পায়েস নিয়ে। টোটাদা তো স্ট্রিক্ট ডায়েট মেনটেন করেন। কিন্তু মিষ্টির প্রতি ওঁর যত দুর্বলতা!’’ আগামী দিনে আরও ভাল কাজ করতে চান ঋদ্ধি। জানালেন, ‘‘আমার তো টাকা রোজগারের চাপ নেই। ভাল কাজ করাই লক্ষ্য।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy