তিয়াশা ও নীল
সেটে ঢুকতেই ঘাবড়ানোর পালা। কিছুই ঠাহর করা যাচ্ছে না। ঘুটঘুটে অন্ধকারে ইতিউতি ঘুরে বেড়াচ্ছে কয়েকটি ছায়ামূর্তি। অন্ধকারের মধ্য দিয়ে কিছুটা এগিয়ে যেতেই একটা ঘর থেকে আলো ভেসে এল। সে দিকে আর একটু যেতেই ‘শ্যামা’র বাড়ির বসার ঘর, খানিক দূরে ডাইনিং হল। সেখানে কাজ চলছে। দু’জন মানুষ চটজলদি পাল্টে ফেলছেন কার্পেট, পর্দা ইত্যাদি। আরও দু’জনে সেট করছেন আলো। কিন্তু অভিনেতাদের কারও দেখা পাওয়া গেল না।
সেখান থেকে বেরিয়ে সেটের ভিতরে একটু ঘোরাঘুরি করতেই হাসির আওয়াজ ভেসে এল একটা ঘরের ভিতর থেকে। ঘরের দরজায় লেখা লেডিস মেকআপ রুম। আলতো হাতে দরজা ঠেলতেই কয়েকটা মোবাইলের টর্চের আলো এসে পড়ল মুখে। সেখানেই দেখা পাওয়া গেল দুই জায়ের। শ্যামা ও দিশা, যাদের অনস্ক্রিন ভাব-ভালবাসা তো দূরস্থান, পাশাপাশি বসে হাসতে দেখাও যায় না। কিন্তু তাদেরই পাওয়া গেল মেকআপ রুমে একত্রে। দু’জনেই হুমড়ি খেয়ে পড়ে মোবাইলে কিছু একটা দেখে হাসাহাসি করছে।
‘কৃষ্ণকলি’ ধারাবাহিকে অন্তত শ্যামাকে এত হাসতে দেখা যায় না! সব সময়েই সে পারিবারিক কূটকচালির চাপে টেনশনে থাকে। কিন্তু ক্যামেরা অফ হতেই শুরু আড্ডা। ‘‘এই সেটে কেউ ব্যাজার মুখে থাকতে পারবে না। আমাদের এখানে সব সময়ে হাসি ঠাট্টা চলতেই থাকে। সেটে সকলেই আমার চেয়ে বড় আর প্রত্যেকেই আমার খুব বন্ধু। আমার অভিনয় সহজ করার জন্য সকলেই পাশে থাকেন,’’ জানালেন তিয়াশা ওরফে শ্যামা। অফস্ক্রিন রিমঝিমের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক কেমন? জটিল, কুটিল? একেবারেই নয়। বরং তাঁরা খুবই ভাল বন্ধু। তিয়াশার অভিনয়ের প্রশংসাতেও পঞ্চমুখ রিমঝিম, ‘‘ও খুব সিনসিয়ার। অনেক নতুন শিল্পীর সঙ্গে কাজ করতে গিয়ে দেখেছি, তারা সংলাপ ভুলে যায়। আমার শ্যামাপ্রসাদ কিন্তু কখনও তা করে না।’’ রিমঝিম ভালবেসে তিয়াশাকে ‘শ্যামাপ্রসাদ’ বলে ডাকেন। সেই ডাকে অবশ্য রেগে যান তিয়াশা। তবুও ওই ডাকেই তিয়াশার সঙ্গে খুনসুটি চলতে থাকে রিমঝিমের। একসঙ্গে খাবার ভাগ করে নেওয়া, আড্ডা, গল্প, মোবাইলে ছবি দেখা... কী নেই তাঁদের সম্পর্কে! সেখানে কখনওই দিশা এসে কুটিল চিন্তায় ভেস্তে দেয় না ‘শ্যামা’র কোনও পরিকল্পনা। বরং তাঁরা একসঙ্গেই সব প্ল্যান করেন।
বিভান ও রিমঝিম
রিমঝিমের কথায়, ‘‘আমরা যে কত বার কত জায়গায় ঘুরতে যাওয়ার প্ল্যান করেছি, তার সীমা নেই। নিকো পার্ক, রায়চক... বিভিন্ন জায়গায় যাওয়ার প্ল্যান হতেই থাকে। কিন্তু শুটিংয়ের চাপে তা আর হয়ে ওঠে না। আসলে আমাদের বন্ডিংটা এত ভাল। এই ইউনিটে কোনও পলিটিক্স নেই, টাচ উড।’’
মেকআপ রুম থেকে বেরিয়ে আসার পরে ভিতর থেকে তখনও ওদের স্বপ্ন আর গল্পগুলো ভেসে আসছে কানে। বাইরে তখন আলো জ্বলে উঠেছে। ছায়ামূর্তিরাও রূপ পেয়েছে। দেখা হয়ে গেল শ্যামার ভাশুর, শ্বশুর... পরিবারের অন্য কয়েক জন সদস্যের সঙ্গেও। তবে বাকি রয়ে গেলেন আরও অনেকে। শ্যামার স্বামী, শাশুড়ি সেই সময়ে কেউই ছিল না সেটে। শুটিং না থাকলে অভিনেতারা যে যাঁর কাজে বেরিয়ে পড়েন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy