অলকা। ছবি: অর্পিতা প্রামাণিক
বলিউড সুরসম্রাজ্ঞীর খেতাবে এক কালে তাঁর ছিল একাধিপত্য। তাঁর ঝুলিতে দু’হাজারের উপর গান। এখনও তিনি এতটাই ব্যস্ত যে, দু’দণ্ড নিজের জন্য সময় পান না। যদিও তিনি মনে করেন, ‘‘শিল্পীর নিজের জন্য সময় বের করা উচিত।’’ নব্বইয়ের মেলোডি কুইন অলকা যাজ্ঞিক সম্প্রতি ‘দমদম উৎসবে’ পারফর্ম করতে শহরে এসেছিলেন। কিন্তু সে দিন অনুষ্ঠানের তাড়ায় বেশি কথা হয়ে ওঠেনি। পরে মুম্বই থেকে ফোনে কথা বললেন গায়িকা।
‘‘কলকাতার সব কিছু স্পেশ্যাল। আমি এখানে জন্মেছি, বড় হয়েছি। শহরটায় এলেই ফিরে যাই ছোটবেলার দিনগুলিতে। স্কুল, বন্ধু, ঝালমুড়ি, নিউমার্কেট-পার্কস্ট্রিটের স্মৃতি এখনও অমলিন। বলতে পারেন, আমার মনের বড় অংশ জুড়ে রয়েছে কলকাতা,’’ বললেন অলকা।
গত বছর হিন্দি ছবির গানে শুধু রিমিক্সের দাপট। এই ট্রেন্ড নিয়ে কী ভাবছেন? ‘‘শুধু গত বছর নয়, দু’-তিন বছর ধরেই এই ট্রেন্ড। বেশির ভাগ ছবির গানে পঞ্জাবি এসেন্স, র্যাপ, এক্সপেরিমেন্টাল মিউজিকের দাপাদাপি। গানের কথায় অনেক অর্থহীন শব্দের ভিড়। কখনও কখনও মনে হয় মিউজিক যেন শোরগোল! সব গান খারাপ তা বলছি না। তবে এ সবের মাঝে মেলোডি যেন হারিয়ে গিয়েছে। আমাদের পরিচিতি কিন্তু মেলোডি দিয়েই,’’ আক্ষেপ গায়িকার কণ্ঠে।
নায়িকারাও তো এখন গায়িকা। হাসতে হাসতে বললেন, ‘‘এখন সকলে সব কিছু পারে। স্পেশালাইজেশনের আর মাহাত্ম্য নেই। নায়িকা গাইলে প্রচার হয় বেশি। আর সুর-তালের জ্ঞান না থাকলেও টেকনোলজি সব ঠিক করে দেয়। তবে এঁরা লাইভ শো করতে পারবেন না।’’ এখনকার গায়িকাদের অনেকেরই অভিযোগ, পুরুষ কণ্ঠে চারটি গান থাকলেও ছবিতে ঠাঁই পায় মহিলা কণ্ঠের একটি গানই। বললেন, ‘‘ইন্ডাস্ট্রি বরাবরই পুরুষশাসিত। নারীবাদের পতাকা ওঠালেও খুব একটা বদল এসেছে বলে মনে হয় না। অনেক গায়কের পাশাপাশি অভিনেতাদেরও দাবি থাকে, নায়িকাদের তুলনায় তাঁর কণ্ঠে বেশি লাইন থাকবে।’’ তবে আপনার সময়ে ডুয়েট গানের অনেক বেশি গুরুত্ব ছিল। ‘‘আমাদের সময়টাই অনেক আলাদা ছিল। এখনকার কোনও গানই মনে দাগ কাটে না,’’ স্পষ্ট জবাব গায়িকার।
এখনকার গায়ক-গায়িকার মধ্যে কারা পছন্দের? ‘‘সত্যি কথা বলতে, আমি এখনকার গান সে ভাবে শুনি না। আমার অলটাইম ফেভারিট, লতাদি (মঙ্গেশকর) ও কিশোরদার (কুমার) গান। আমি পুরনো দিনের গান, গজল এ সবই বেশি শুনি। তবে অনেক অ্যাওয়ার্ড শোয়ের জুরি হওয়ার জন্য আমাকে এখনকার গান শুনতে হয়। তবে সেটা শুধু বিচারের খাতিরেই।’’
রিয়্যালিটি শো কি সত্যিই ট্যালেন্ট খুঁজে বের করে? ‘‘হ্যাঁ, এই প্ল্যাটফর্মটা ভালই। তবে সকলে তো সমান সফল হয় না। এই রাতারাতি জনপ্রিয়তা অনেকেই সামলাতে পারে না। আর ছোটদের বলব, পড়াশোনা বাঁচিয়ে রিয়্যালিটি শো করলে সেটা ভাল। তবে এটা করতে গিয়ে পড়াশোনার ক্ষতি করা ঠিক নয়।’’
মেয়ের আবদারেই টুইটারে অ্যাকাউন্ট খুলেছিলেন অলকা। তবে সোশ্যাল মিডিয়া তাঁর ভাল লাগে না। আধঘণ্টা সময় পেলে খাতা-কলম নিয়ে পাজ্ল সমাধান করতেই পছন্দ করেন।
হিন্দি প্লেব্যাক ইন্ডাস্ট্রি নিয়ে আশঙ্কা আছে? ‘‘যা চলছে, তার চেয়ে খারাপ কী হতে পারে! তবে আমি আশাবাদী, মেলোডি ফিরে আসবে,’’ হালকা হাসি তাঁর কণ্ঠে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy