Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

‘ভবিষ্যতে সুরক্ষা দিতে পারে রয়্যালটি’

ইন্ডাস্ট্রিতে গায়কদের নিরাপত্তা, নিজের অবসর যাপন থেকে সাফল্য উপভোগ... আনন্দ প্লাসের সঙ্গে অরিজিৎ সিংহতাঁর কণ্ঠে মাতোয়ারা আট থেকে আশি। এহেন অরিজিৎ সিংহের সাক্ষাৎকার পাওয়া যথেষ্টই কষ্টসাধ্য। তবে কলকাতায় কনসার্ট শেষে ই-মেলে আনন্দ প্লাসের প্রশ্নের জবাব দিলেন তিনি। যদিও অরিজিতের প্রচারসচিব বলে রেখেছিলেন, কোনও বিতর্কিত প্রশ্ন করা চলবে না।

ছবি: সুদীপ্ত চন্দ

ছবি: সুদীপ্ত চন্দ

স্বর্ণাভ দেব
শেষ আপডেট: ২৬ ডিসেম্বর ২০১৭ ০০:২৩
Share: Save:

তাঁর কণ্ঠে মাতোয়ারা আট থেকে আশি। এহেন অরিজিৎ সিংহের সাক্ষাৎকার পাওয়া যথেষ্টই কষ্টসাধ্য। তবে কলকাতায় কনসার্ট শেষে ই-মেলে আনন্দ প্লাসের প্রশ্নের জবাব দিলেন তিনি। যদিও অরিজিতের প্রচারসচিব বলে রেখেছিলেন, কোনও বিতর্কিত প্রশ্ন করা চলবে না।

প্র: এ বার তো গোটা দেশ জুড়ে শো করছেন। কলকাতা সফর সুপারহিট। দেশব্যাপী শো নিয়ে আপনি কতটা এক্সাইটেড?

উ: প্রথমেই সকলকে ধন্যবাদ। কলকাতা বরাবরই আমার কাছে স্পেশ্যাল। শোয়ের বিষয়ে বলি, এ বারেরটা খুব বড় মাপের করা হচ্ছে। সেখানে নিজের সেরাটা দেওয়ার চেষ্টা করছি। গোটা বিষয়টা নিখুঁত করার জন্য আমার গোটা টিমও ভীষণ চেষ্টা করছে। বেশ কিছু নতুন জিনিসও তুলে ধরতে চাইছি। এতে দর্শকরা তো আনন্দ পাবেনই। নিজেদেরও গর্ব হবে। আশা করি, দেশজোড়া এই জার্নিটা শ্রোতাদের হৃদয়ে থেকে যাবে।

প্র: শুরুর দিকে মুম্বইয়ে নামী সুরকারদের সঙ্গে কাজ করা কতটা গুরুত্বপূর্ণ ছিল?

উ: কেরিয়ারের গোড়ার দিকে মিউজিকের বিভিন্ন খুঁটিনাটি দিকগুলো শিখেছি। সেটা আমার কাছে সত্যিই গ্রেট ফেজ অব লার্নিং।

আরও পড়ুন: ‘ছেলেই আমার জীবনের শূন্যতা পূরণ করে দিয়েছে’

প্র: এখন তো বেশির ভাগ জনপ্রিয় গানই আপনার গাওয়া। তা হলে কি একে ‘অরিজিতের যুগ’ বলা যায়?

উ: আমি ঠিক এ ভাবে দেখি না। এখন যাঁরা কাজ করছেন, প্রত্যেকেই নিজের ক্ষেত্রে ভাল করার চেষ্টা করছেন। সকলেরই প্রশংসা ও সম্মান পাওয়া উচিত।

প্র: মুম্বইয়ে কাজের পাশাপাশি আপনি তো টলিউডেও প্রচুর কাজ করেন...

উ: প্রথমেই বলি, আমি দেশের অন্যান্য ইন্ডাস্ট্রিতেও কাজ করেছি। যে সব প্রজেক্টে উৎসাহ পাই, সেগুলোতেই কাজ করি। এমন অনেক কাজ করতে হয়, যেখানে কাছের মানুষদের ‘না’ বলতে পারি না। আবার বেশ কিছু প্রজেক্টের কোয়ালিটি এত ভাল যে, সেখানেও জুড়ে যাই। তবে এটা ভাববেন না, আমি খুব চুজি। যেখানে যেমন কাজের সুযোগ পেয়েছি, করে গিয়েছি। তাই কোন ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করছি, সেটা কখনওই ম্যাটার করে না।

প্র: অনেকের অভিযোগ, এখনকার প্রজন্ম গান শুনতে নয়, দেখতে পছন্দ করে। আপনার কি মনে হয়, সংগীতের প্রতি মানুষের ভালবাসা কমে গিয়েছে?

উ: মিউজিকের সঙ্গে বন্ধনটা তো ছিন্ন হয়নি। হয়তো কেউ মিউজিক দেখছে, কেউ বা অনুভব করার চেষ্টা করছে। আবার কেউ শুধুই শুনছে। যে ভাবেই হোক, মিউজিকের আকর্ষণ কিন্তু একটুও কমেনি।

প্র: শোনা যায়, এখন সফটওয়্যারের মাধ্যমে গান রেকর্ড করা হয় বলে, গান গাওয়া খুব সোজা হয়ে গিয়েছে। যার সুবাদে অভিনেতারাও হয়ে উঠেছেন সুগায়ক। এর ফলে কি গায়কদের কঠিন প্রতিযোগিতায় পড়তে হচ্ছে?

উ: কথাটা হয়তো খুব ক্লিশে শোনাবে। কিন্তু সত্যিটা হল, এখানে কোনও কম্পিটিশন নেই। প্রত্যেকেই মিউজিক নিয়ে প্যাশনেট। নিজের প্রতিভার জোরে প্রত্যেকেই একটা জায়গা তৈরি করতে চাইছি।

প্র: এখনকার গায়কদের কেরিয়ারের মেয়াদও সীমিত...

উ: সে জন্যই তো গায়কদের রয়্যালটি পাওয়া দরকার।

আর সেই স্বত্ব না পাওয়াটাই আসলে ভারতে সংগীত জগতের একটা বড় ড্রব্যাক। অধিকাংশ গায়কের মতো আমার কাছেও রয়্যালটি খুব গুরুত্বপূর্ণ। আমরা যে দিন রয়্যালটি পেতে শুরু করব, সে দিন বুঝব আমাদের ভবিষ্যৎ সুরক্ষিত।

প্র: এখন তো ফিল্ম মিউজিকের আগ্রাসনের সামনে ইন্ডিপেন্ডেন্ট মিউজিক কোণঠাসা। এর থেকে বেরোনোর উপায় কী?

উ: এটা ঠিক, ফিল্ম মিউজিকের নিজস্ব শ্রোতা রয়েছে। তা বলে ভাববেন না, ইন্ডিপেন্ডেন্ট মিউজিক ব্রাত্য হয়ে গিয়েছে। আমার মনে হয়, সব ধরনের গানেরই নিজস্ব স্পেস রয়েছে। ইন্ডিপেন্ডেন্ট মিউজিকের জন্য আমরা সকলেই নিজের মতো করে বিভিন্ন প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।

প্র: এ বার ব্যক্তিগত প্রসঙ্গে আসা যাক। অবসর সময়ে কী করেন?

উ: সুযোগ পেলেই বিভিন্ন বিষয় নিয়ে পড়াশোনা করি। গ্যাজেট আমার খুব পছন্দের বিষয়। এ ছাড়া মিউজিক, সিনেমা ও স্পোর্টস নিয়েও চর্চা করি।

প্র: আপনি তো গেম খেলতেও বেশ ভালবাসেন?

উ: হ্যাঁ। মাঝে তো একটা রানিং গেমে আচ্ছন্ন হয়ে পড়েছিলাম। একটা ঘটনার কথা বলি। একবার অদিতি (সিংহ শর্মা) গাইছিল, সে সময় আমি আর আমাদের সাউন্ড ইঞ্জিনিয়ার সানি বসে গেমটা খেলছিলাম। অদিতি যত বারই গাইছিল আমরা বলছিলাম, আর একটা টেক দাও। কিছুক্ষণ পর অদিতি বুঝতে পেরেছিল, আমরা ওর গানে নয়, খেলায় ব্যস্ত। অদিতি তো ভীষণ রেগে গিয়েছিল!

প্র: এখন তো আপনি সাফল্যের শিখরে। জীবন বদলেছে?

উ: বিশ্বাস করুন, আমি এতটুকুও বদলাইনি। আগের মতোই রয়েছি।

প্র: তা আপনার সাফল্যে কার অবদান সবচেয়ে বেশি?

উ: দেখুন, শুধু একজনের কথা তো বলতে পারি না। আমার পরিবার, টিমের পাশাপাশি গুরুত্বপূর্ণ হল আমার ভক্তরা। আমার সাফল্যে প্রত্যেকের অবদানই অনস্বীকার্য।

প্র: ব্যস্ততাও তো বেড়েছে। পরিবারে এর কোনও প্রভাব পড়ে?

উ: কেন পড়বে? আমাকে কি নতুন করে জীবনে ব্যালান্স করতে হচ্ছে নাকি? মিউজিক আমার জীবনের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ। ছোটবেলায় পড়াশোনার পাশাপাশি গানবাজনা চালিয়ে গিয়েছি। এখনও অন্যান্য কাজ করি, মিউজিককে বজায় রেখেই।

প্র: নিজের গাওয়া কোন গানটি আপনার পছন্দের?

উ: ‘হ্যারি মেট সেজল’-এর ‘সফর’ গানটি আমার খুব ভাল লাগে। এই গানটির সঙ্গে আমি ব্যক্তিগত ভাবেও কানেক্ট করতে পারি।’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

interview Arijit Singh Singer Bollywood
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE