টানাপড়েন তো চলতেই থাকে। কিন্তু রোজকার জীবনের টানাপড়েনটাই যদি জাতীয় টিভির পরদায় ফুটে ওঠে? রোজ রাতে যদি কোটি কোটি দর্শকের চুলচেরা বিশ্লেষণের সম্মুখীন হতে হয়? তা হলে সেই টানাপড়েনটাই বে়ড়ে যায় বহু গুণ। যেমনটা বেড়েছিল শিল্পা শিন্ডেরও। তবে ‘বিগ বস এগারো’র খেতাব আর ৪৪ লক্ষ টাকা জিতে বিজয়ীর হাসিটা হেসেছেন শিল্পাই। ‘ভাবীজি ঘর পর হ্যায়’-এর অঙ্গুরী ভাবী তাই এখন বেশ নিশ্চিন্ত। ২০১৬-এ ‘ভাবীজি...’ র নির্মাতাদের সঙ্গে পারিশ্রমিক নিয়ে জোরদার ঝামেলা হয়েছিল শিল্পার। এমনকী শিল্পাকে ধারাবাহিকটি থেকে বের করে দেওয়াও হয়। সিনে অ্যান্ড টিভি আর্টিস্টস অ্যাসোসিয়েশন অভিনেত্রীর বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করে। এক বছর শিল্পা কোনও কাজ করেননি। ফলে ‘বিগ বস এগারো’ যে শিল্পার পায়ের তলায় মাটি ফিরিয়ে আনার জন্য বড় প্ল্যাটফর্ম ছিল, এ কথা বলাই বাহুল্য।
প্র: ফিনালের রাতে লাইভ ভোটিংয়ের টুইস্টে ভয় পেয়েছিলেন নাকি?
উ: শো শুরুর প্রথম দিন থেকেই আমি হিনাকে (খান, শোয়ের আর এক ফাইনালিস্ট) আমার সঙ্গে ফিনালেতে দেখতে চেয়েছিলাম। হিনা আমাকে ঘরের ভিতর বহু বার চ্যালেঞ্জ করেছিল। বলেছিল, আমার ফ্যান ফলোয়াররা আমাকে কত দূর নিয়ে যান, সেটা ও দেখে নেবে! আমার সবচেয়ে বড় জয় এটাই যে, হিনার বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে আমি খেতাবটা জিতেছি। হিনা ঘরের ভিতর বলত, আমি নাকি নাটক করছি। সব মিথ্যে। আমি সব সময় নিজের সত্যিকারের দিকটা দেখাতে চেয়েছিলাম। সলমন যখন লাইভ ভোটিংয়ের ঘোষণা করেন, তখনও জানতাম, আমিই জিতব। আমার কাছে এই সফরটা সহজ ছিল না। তবে আমি নিজেকে পুরো দুনিয়ার সামনে প্রমাণ করতে চেয়েছি। তাই আত্মবিশ্বাসটাও ছিল।
প্র: উইনিং অ্যামাউন্ট নিয়ে কী করার প্ল্যান?
উ: ৫০ লক্ষ টাকা জেতার কথা ছিল। বিকাশ ৬ লক্ষ নিয়ে নিল শেষ টাস্কে। মনে হয়, আমার প্রাইজ মানিটা অনেকের মধ্যে ভাগ হবে।
প্র: প্রথম এক মাস আপনার আর বিকাশ গুপ্তর ভীষণ ঝগড়া হতো। শোয়ের শেষে সেটা কিছুটা কমেছে?
উ: আমার উপর বিকাশ যা অত্যাচার করেছে, তার শোধ নিয়েছি। যখন জানতে পারি, বিকাশ ‘বিগ বস’এ আসছে, তখনই মনে মনে জানতাম, বিকাশকে ছেড়ে দেব না। তবে চেয়েছিলাম যে, দর্শক যেন তার মজাও নেন। আর হ্যাঁ, রাগটা আগের চেয়ে কমেছে বইকী!
আরও পড়ুন, বিগ বস ১১ জিতলেন ‘ভাবিজি’ শিল্পা
প্র: বিকাশ তো আপনাকে কাজের অফারও করেছেন!
উ: টাস্ক চলাকালীন বিকাশ কাজের অফার করেন। একটা ওয়েব সিরিজের কথা চলছে। সম্ভবত আমি ওঁর সঙ্গে কাজ করব।
প্র: আপনার আর বিকাশের অ্যাফেয়ারের খবর আসছিল!
উ: অসম্ভব! যা কিছু মজা হয়েছে, সব ঘরের ভিতর। বাইরে আমাদের নিয়ে কী আলোচনা হয়েছে, জানি না। তবে এ সব অবান্তর!
প্র: এখন কেরিয়ারের প্ল্যান কী?
উ: টিভিতে ফিকশনাল চরিত্র আর করব না। অনেক কষ্টে ‘ভাবীজি’র ইমেজ ছেড়েছি। ‘বিগ বস’ সেই সুযোগটা দিয়েছে। দুর্ভাগ্যবশত টিভিতে এখন ভাল চরিত্র পাওয়া ভাগ্যের ব্যাপার। ১৫ বছর ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করার পর যখন কিছু নির্দেশক আমাকে ব্যান করেন, আমিও তাঁদের অনেককে ব্যান করেছি! অভিনয় আমার রুজি-রোজগার। আর বাড়িতে শুধু বসে থাকার জন্যও সাহসের দরকার। ফিল্মে কাজ করারও ইচ্ছে আছে। দেখা যাক কী হয়...
প্র: হিনা এবং অনেকেরই ধারণা, সলমন আপনাকে বেশ ফেভার করতেন!
উ: এই অপবাদটা ভিত্তিহীন। আমি যদি ভুল কিছু করতাম, সলমন নিশ্চয়ই সাবধান করতেন। আমার সব বিষয় নিয়েই হিনার সমস্যা ছিল। হিনা নিজে কোনও দিন রান্না করেনি। আমি যখন রান্নার দায়িত্ব নিই, হিনা হাইজিন নিয়ে প্রশ্ন তোলে! এই শোয়ে আমি কোনও দিন নিজের অনুভূতি লুকোইনি। হেসেছি, কেঁদেছি, সকলের জন্য রান্না করেছি। চেষ্টা করেছি দর্শকদের বিনোদন দিতে।
প্র: জয়ের পিছনের মূলমন্ত্র কী?
উ: ঘরের ভিতর আমার দুটো মন্ত্র ছিল— ‘নেকি কর দরিয়া মে ডাল’ আর ‘আমার কাজটা ভাল করব’। ঘরের ভিতরের অবস্থাই আমাকে আরও স্ট্রং করেছে।
আরও পড়ুন, শিল্পা শিন্ডেকে এই রূপে দেখেছেন কখনও?
প্র: এই শো কি মিস করবেন?
উ: অবশ্যই মিস করব। কিন্তু আর কখনও ‘বিগ বস’-এ যাব না। সাড়ে তিন মাসের অভিজ্ঞতা কি ভোলার? এখন কিছু দিন পরিবারের সঙ্গে কাটাব। কী ভয়ানক সেই অভিজ্ঞতা!
প্র: স্বপ্ন না কি দুঃস্বপ্ন?
উ: স্বপ্ন (হেসে)।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy