Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪

প্রজাপতয়ে নমঃ

এনগেজমেন্ট হল দিন পনেরো। এ বার বিয়ে। তারই মধ্যে নতুন ছবি। প্রজাপতি ও ক্যামেরা একই সঙ্গে সামলানোর ফাঁকে শ্রাবন্তী। সামনে স্রবন্তী বন্দ্যোপাধ্যায়এনগেজমেন্ট হল দিন পনেরো। এ বার বিয়ে। তারই মধ্যে নতুন ছবি। প্রজাপতি ও ক্যামেরা একই সঙ্গে সামলানোর ফাঁকে শ্রাবন্তী। সামনে স্রবন্তী বন্দ্যোপাধ্যায়

ছবি: কৌশিক সরকার

ছবি: কৌশিক সরকার

শেষ আপডেট: ২৭ জুলাই ২০১৬ ০০:৪৫
Share: Save:

• ভাগ্যে খুব বিশ্বাস করেন?

করি।

• বিয়ের দিনও কি জোতিষী ঠিক করবেন?

যখন হবে জানতে পারবেন। এখন বলব না।

• দিল্লির নিজামুদ্দিনে গেলেন যে হঠাৎ? এটা কি কৃষাণকে সুরক্ষিত করার জন্য?

কী বলছেন বুঝলাম না।

• না, আপনি কৃষ্ণভক্ত শুনেছি। আপনার জীবনে কৃষাণ যখন প্রেমিক হয়ে এলেন সেটা নিশ্চয়ই বিশাল পাওয়া?

(হাসি) ও খুব ইন্টারেস্টিং মানুষ। ঈশ্বর চেয়েছিলেন তাই ওকে পেয়েছি।

• কৃষাণের মধ্যে কী এমন দেখলেন যে মনে হল এই আমার জীবনসঙ্গী?

ও আমার বেস্ট ফ্রেন্ড। অদ্ভুত একটা শান্তি আছে ওর মুখে। ভীষণ ভরসা করতে ইচ্ছে হয়। এই সম্পর্ক নিয়ে আমি এতটাই তৃপ্ত যে, ফেসবুক, ইন্সটাগ্রামে আমাদের ছবি পোস্ট করতেও লজ্জা পাই না। হঠাৎ সব হয়ে গেল।

• জুলাইয়ের এনগেজমেন্টে গিফট ছিল আঙুল ভরা সোনার আংটি। বিয়ের স্পেশাল গিফট কী?

(মিষ্টি হেসে) ও পুরোটাই সারপ্রাইজ দেবে আমায়।

• কৃষাণ জীবনে আসার পর, আপনি নাকি আপনার পাস্ট ভুলে গেছেন!

ওর সঙ্গে আমি খুব কমফর্টেবল। খোলাখুলি সব কথা বলতে পারি। এই আন্ডারস্ট্যান্ডিংটাই আমাদের কাছাকাছি এনেছে।

• একজন সুপার মডেলের সঙ্গে সংসার করবেন। মেয়েরা যদি ঘনঘন ওঁর প্রেমে পড়ে, কী করে সামলাবেন?

দেখুন, ছেলেরা ঘনঘন আমার প্রেমে পড়ে। ওই ফেজটার মধ্যে দিয়ে তো আমিও যাচ্ছি, তাই বুঝতে অসুবিধে হবে না। তবে আমি খুব ইমোশনাল। আর সে কারণে একটু পজেসিভ হয়ে যাব, কী আর করা যাবে! নিজেকে তো আর বদলানো যায় না।

• এত বার সম্পর্ক ভেঙেছে, তাও নিজেকে বদলাবেন না? সম্পর্ক ভাঙলেও তো অনেক কিছু শেখা যায়, আপনি কী শিখলেন?

(জানালার দিকে তাকিয়ে একটু ভেবে) আমার বয়স কম ছিল। অনেক কিছু বুঝিনি তখন। ভুল করেছি। সবাই করে। আমি ওভার ইমোশনাল তো...

• এখন তা হলে ইমোশন কমিয়ে লজিকে চলেন?

না, বললাম যে আমি কোনও ভাবেই বদলাব না। ভাল মনের মানুষ ইমোশনাল হয়। ঝড় আসুক, বৃষ্টি পড়ুক, আমার ইমোশন কখনও কমবে না। ওটার জন্যই তো বেঁচে থাকা।

• অতিরিক্ত ইমোশনাল হলে যদি আবার ধাক্কা খান?

(শিউরে উঠলেন) টাচউড। একটু পজিটিভ বলুন না, কেন এত নেগেটিভ বলছেন!

• আচ্ছা বেশ, আপনি পজিটিভ ভাবলেই পজিটিভ।

এটাই চাই। ও সব নেগেটিভ চিন্তা, পাস্ট কোনও কিছুই আর মাথায় আনতে চাই না। কৃষাণ জীবনে আসার পর থেকে আমি খুব পজিটিভলি জীবনকে নিতে শিখেছি। মাঝসমুদ্র যেমন গভীর, স্থির, ও ঠিক সে রকম। ওর ওপর নির্ভর করতে পারি।

• আপনার জীবনে এখন তা হলে শুধুই পাওয়া? সামনে দু’টো ছবির রিলিজ। বিয়ে। বিয়ের মেনু ঠিক হল?

না, না, দূর। সে তো অনেক দেরি। তবে বিয়ে মানেই প্রচুর খাওয়াদাওয়া, এটা মানতেই হবে।

• আপনি দারুণ রান্না করেন, খাওয়াতেও ভালবাসেন?

(থামিয়ে দিয়ে) তার আগে বলুন, আমি ভীষণ খেতে ভালবাসি। আট বছর বয়সে একটা বিয়েবাড়িতে গিয়ে আটটা রুই মাছ খেয়ে ফেলেছিলাম! খাওয়া নিয়ে কম্প্রোমাইজ নেই।

• সে কী! নিজেকে এত সুন্দর মেনটেন করছেন কী করে?

দেখুন, ওই নো-কার্ব, ফ্যাট ফ্রি, ফল-জলের ডায়েট আমি কোনও দিন করিনি। আমার গ্যাসট্রিকও আছে। তাই দু’ ঘণ্টা অন্তর খাই। সব খাই। তবে পরিমাণে অল্প।

• একের পর এক মশালা ছবি করে চলেছেন, তিনটে নাচের সিকোয়েন্স, একটা কান্নার। একটু কমেডি। ভাল লাগে?

খুব ভাল লাগে। নাচ-গান-হই-হুল্লোড় করে কাজ করা, ওটার মধ্যেই তো পজিটিভ এনার্জি থাকে। শ্রাবন্তীকে লোকে মশালা ছবি থেকেই চিনেছে। তবে ‘শেষ সংবাদের’ স্ক্রিপ্টটা ভাল লেগেছিল। একজন লড়াকু ক্রাইম জার্নালিস্টের চরিত্রে দর্শক আগে আমায় দেখেননি, এ বার দেখবেন।

• দু’ধরনের ছবিতেই আপনি স্বচ্ছন্দ। তা হলে ‘বুনোহাঁস’ বা ‘গয়নার বাক্স’-র পর নিউ এজ ছবিতে আপনাকে দেখা গেল না কেন?

এখন সময় আছে, কমার্শিয়াল করছি। অন্য ধারার ছবি তো পরেও করা যায়। এ বার হয়তো করব।

• আপনার পছন্দের পাঁচ নায়ক কারা?

(খুব খুশি) জিৎ, দেব, অঙ্কুশ, আবীরদা, সোহম। তবে বুম্বাদাকে (প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়) সবার ওপরে রাখি।

• আপনার স্বামী সুপার মডেল। আজ যদি শ্রীকান্ত মোহতা ওঁকে নিয়ে ছবি করতে চান, সেখানে মাথা গলাবেন...

(খুব উত্তেজিত) নিশ্চয়ই, করুক না। তবে ওর প্রথম ছবির নায়িকা আমি হব। আর কাউকে হতে দেব না কিন্তু। আমিও ভাল কাজ করতে চাই।

• কিন্তু আপনি তো ভীষণ মুডি। হঠাৎ কয়েক বছর কাজ করলেন না। আবার চুটিয়ে কাজ করছেন। বারবার সম্পর্ক ভাঙার ফলেই কি কাজ থেকে সরে গিয়েছিলেন?

মুড নয়। আসল হল পরিস্থিতি। যখন গুছিয়ে সংসার করার কথা তখন সংসার করেছি, আবার যখন কাজ করার কথা, তখন কাজ করেছি। বছরে ছ’টা ছবি করলেই এক নম্বর হওয়া যাবে, এমন কোনও গ্যারান্টি আছে? নেই। আবার একটা ছবিতে অসাধারণ অভিনয় করেও সারা জীবন দর্শকের মনে থাকা যায়। আর দেখুন, অন্যদেরও তো ছবি করতে দিতে হবে। সকলেই তো বন্ধু, সকলেই তো কাজ করবে।

নিউ ইয়র্কের ম্যাডিসন স্কোয়ার গার্ডেনের সামনে শ্রাবন্তী। ছবি: প্রেমেন্দু বিকাশ চাকী

• আচ্ছা, সকলেই বন্ধু কীভাবে হয়? ইন্ডাস্ট্রির গ্যাং গার্ল-এর একটা হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ আছে শুনেছি, সেখানে আপনিও আছেন।

হ্যাঁ, আছে তো। মিমি, সায়ন্তিকা, নুসরত, তনুশ্রী, আমরা সকলেই খুব বন্ধু। কেন জানেন? দেখা হলে আমরা শুধু ইন্ডাস্ট্রি, প্রযোজক এ সব নিয়ে গল্প করি না।

• কী বলছেন, হতেই পারে না!

(চোখ বড় করে) অফিসে কাজ করে বাইরেও কি বন্ধুদের সঙ্গে অফিস নিয়ে কেউ গল্প করে? আমাদের কাছে সিনেমা করা একটা কাজের মতো। এখন সময় বদলাচ্ছে। যে যার কাজ নিয়ে ব্যস্ত। নায়িকাদের মধ্যে হিংসে সেকেলে ব্যাপার।

• তা হলে নতুন প্রজন্মের নায়িকারা হোয়াটসঅ্যাপে কথা বলে, আর আগের প্রজন্মের নায়িকারা হিংসে করে, তাই তো?

এই তো! আমি কী বললাম আর আপনি কী বুঝলেন। আগে নায়িকারা কী করত সেটা তাঁদের জিজ্ঞাসা করুন। আমি কী করে বলব? শুভশ্রীর সঙ্গে শ্যুট করতে গিয়ে লন্ডনে দারুণ মজা হল। দু’জন কিন্তু আলাদা ছবির জন্য গিয়েছিলাম।

• আমেরিকায় তো মিমির সঙ্গে রুম শেয়ার করেছিলেন।

দারুণ মজা হয়েছে। শ্রীকান্তদা, মিমির সঙ্গে আমি খুব ঘুরেছি। প্রচুর খেয়েছি। মিমির সঙ্গে জমিয়ে শপিংও করেছি।

• বিয়ের শপিং করলেন?

বিদেশে গেলে শপিং তো হয়েই যায়। সবটাই যে বিয়ের জন্য করেছি, তা নয়। ফ্যামিলির জন্যও কিনেছি।

• পাঁচ বছর ছবি করেননি। ডিভোর্স, ডিপ্রেশন এ সবের পরেও আপনি ইন্ডাস্ট্রির ফান গার্ল। শ্যুটে ভূত সেজে ইউনিটের সকলকে নাকি ভয় দেখান?

আমি ইন্ডাস্ট্রির ফান গার্ল হয়েই থাকতে চাই। কাজ করতে করতে রাতের বেলায় পেত্নির মতো সুর করে ইউনিটের সকলকে ভয় দেখাই। তবে নিজেই এখন ভূতের ভয় পাচ্ছি!

• কী রকম?

একটা ছবিতে দেখেছিলাম খাটের তলায় শাঁকচুন্নির মতো কে যেন শুয়ে আছে। সেটা দেখার পর থেকে একা ঘরে আর থাকতে পারি না। অ্যানাকোন্ডাকেও খুব ভয় পাই।

• যদি ‘চাঁদের পাহাড়’ করতে হত?

শ্যুটের সময় দেবের চারপাশে যেমন লোক থাকছে, আমার চারপাশেও থাকত। ঠাট্টা থাক। বিয়ের পরে ইন্টারেস্টিং ছবিতে কাজ করতে চাই। যেখানে দিনের শেষে লোকে আমায় শুধু নায়িকা নয়, একজন দক্ষ অভিনেত্রী হিসেবে জানবে।

(ফোটোশ্যুটের জন্য ছবি তুলতে গিয়ে বরের নামের ট্যাটুটা বেরিয়ে এল)

• বরের নামে ট্যাটু করায় ছেলে কিছু বলল না?

ছেলের নামেও আছে তো। আর কৃষাণের হাতেও আমার নামে ট্যাটু আছে। ওরাই এখন আমার জীবন।

• মালা বদলের আগেই ট্যাটু বদল!

(মুচকি হাসি)

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE