ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে প্রায় চার দশক (৩৭ বছর) কাটিয়ে দিলেন অনিল কপূর। এখনও তিনি ‘ঝক্কাস’। তাঁর বয়সের আন্দাজ পাওয়া শক্ত। কম বয়সি নায়িকাদের সঙ্গে প্রেম তো বটেই, ‘মুবারকা’য় পাল্লা দিয়ে ভাইপো অর্জুন কপূরের সঙ্গে নেচেছেন!
জুহুতে নিজের অফিসে বসে অনিল বলছিলেন, ছোটবেলায় অর্জুনকে কেমন দেখেছেন। ‘‘অর্জুনের রূপান্তর আমাকে ভীষণ অবাক করেছে! বরাবরই ওকে অলস দেখেছি। সেটে ওকে দেখে আমি তো অবাক। খুব পরিশ্রম করে।’’ কপূর পরিবারের একাধিক সদস্য ইন্ডাস্ট্রিতে এসেছেন। সোনম, হর্ষবর্ধন, অর্জুন, মোহিত মারওয়া। এঁরা আপনার থেকে পরামর্শ চান না? ‘‘আরে ধুর! এরা কেউ আমাকে পাত্তাই দেয় না (হাসি)! আসলে ওরা সকলেই স্বনির্ভর। ট্যালেন্টেড। কোনও কাজে আটকে গেলে নিশ্চয়ই আসে আমার কাছে। যা বলার আমি বলিও। আরও একটা জিনিস আমার খুব ভাল লাগে, এই প্রজন্মের মধ্যে কোনও রকম জটিলতা নেই। বাবা-মায়ের সঙ্গেও খুব সহজ সম্পর্ক রাখতে পারে।’’
অনিল যখন চুটিয়ে অভিনয় করছেন, তখন ঘর আগলেছেন তাঁর স্ত্রী সুনীতা। অনিলের স্ত্রী সম্পর্কে প্রায় কিছুই শোনা যায় না। ‘‘সুনীতা সব দিক সামলে রাখত। ওর সঙ্গে প্রতিটি দিন খুব স্মরণীয়। আমি তো সব সময়ে কাজ নিয়েই ব্যস্ত থাকতাম। কিন্তু দায়িত্ব এড়িয়ে যাইনি কখনও।’’ অনিল জানালেন, সুনীতা ভাল রান্না করতে পারেন। আর পারেন ভাল মিমিক্রি করতে।
কেরিয়ারে অনেক উত্থান-পতন দেখেছেন অনিল। জীবনের সেরা সময় বাছতে বললে কোনগুলো বাছবেন? ‘‘অনেক আছে। তা-ও কয়েকটা বলছি। আমার প্রথম ছবি ‘ওহ সাত দিন’-এর রিলিজ। তার পর তিন ছেলেমেয়ের জন্মের সময়টা। ওদের প্রথম ছবি রিলিজের সময়টাও। আর ‘স্লামডগ মিলিওনেয়ার’ যে দিন অস্কার পেল। সকলে মিলে অস্কারের মঞ্চে যাওয়ার অনুভূতিটাই আলাদা,’’ চোখে মুখে তৃপ্তি অনিলের।
অনিল কপূর মানেই এনার্জিতে ভরপুর এক ব্যক্তি। নিজেই বললেন, ‘‘আমি বর্ন এন্টারটেনার। লোকজনের সঙ্গে মিশতে ভালবাসি। কথা বলতে ভালবাসি। জীবন খুব ছোট, সিরিয়াসলি কোনও কিছুই নেওয়া উচিত নয়। খুশি থাকো আর সকলকে খুশিতে থাকতে দাও।’’
কিন্তু ছেলেমেয়েদের ছবি যখন চলে না। তাঁদের দিকে সমালোচনা ধেয়ে আসে, তখন খারাপ লাগে না? ‘‘দেখুন, ভাগ্য খুব বড় ব্যাপার। অভিনেতার সন্তান হও আর যেই হও, ব্যর্থতা জীবনে আসবেই। ভগবান তারই পরীক্ষা নেন, যে সব কিছু সহ্য করতে পারে।’’ সোনমের ‘সাওরিয়াঁ’ আর ‘দিল্লি সিক্স’ ফ্লপ করার সময় মেয়েকে সাহস জুগিয়ে বলেছিলেন, নিরাশ না হতে। মিডিয়া অনেক কিছু লিখবে। কারও কথায় কান না দিয়ে নিজের কাজ কাজ করে যেতে। ‘‘আমি জানতাম সোনম একদিন না একদিন স্টার হবেই। হর্ষবর্ধনের জন্য বড় কিছু অপেক্ষা করছে। হর্ষ বেশ পরিণত। নিজের বুদ্ধি বিবেচনা অনুযায়ী কাজ করলে নিশ্চয়ই ভাল ফল পাবে,’’ বেশ জোরের সঙ্গে বললেন অনিল।
তাঁর নিজস্ব প্রযোজনা সংস্থাও রয়েছে। ছবি পরিচালনায় আসার ইচ্ছে আছে? ‘‘দিলীপকুমার, অমিতাভ বচ্চনের মতো অভিনেতাদের কেরিয়ারের কথা ভাবুন। এঁরা সারা জীবন অভিনয়ই করে গেলেন। অভিনয়ের পরিধি এত বড়, সেখানে কাজ করার সুযোগ অনেক বেশি।’’
অনিলের এখন হাত ভর্তি কাজ। ‘মুবারকা’র পর ঐশ্বর্য রাই বচ্চনের সঙ্গে ‘ফ্যানি খান’ রয়েছে। জানালেন, আবার একটা ইন্টারন্যাশনাল শোয়ে কাজ করতে চলেছেন। ছেলেমেয়ের কেরিয়ার তৈরিতেও বাবা হিসেবে পাশে থাকতে চান। সোনম যখন ‘নীরজা’র জন্য জাতীয় পুরস্কার নিচ্ছেন, দর্শকাসন থেকে উত্তেজিত অনিল সেই মুহূর্তটা ক্যামেরাবন্দি করছিলেন। ‘‘ওরা একটা গুরুত্বপূর্ণ সময়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। বাবা হিসেবে ওদের জার্নিতেও পাশে থাকতে চাই। এ ছাড়া আমার ট্র্যাভেলিং তো আছেই। সব মিলিয়ে আমি একজন ব্যস্ত মানুষ,’’ বললেন অনিল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy