Advertisement
১৬ এপ্রিল ২০২৪

চমকে দিয়েও ভয় পাওয়াল না ‘দ্য নান’

কিন্তু নান ভালাকের আবির্ভাব কী ভাবে, তারই পর্দা ফাঁস করল করিন হার্ডি পরিচালিত ‘দ্য নান’।

শেষ আপডেট: ০৮ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০০:০৩
Share: Save:

‘ভালাক’, এই অশুভ শক্তির সঙ্গে পরিচয় করিয়েছিল সপ্তদশ শতাব্দীতে সংকলিত ‘লেসার কী অফ সলোমন’। সেই ভালাকের নান বা সন্ন্যাসিনীর বেশে কু-ভেল্কি ইতিমধ্যেই আমাদের ভয় পাইয়েছে ‘কনজুরিং টু’-এ। কিন্তু নান ভালাকের আবির্ভাব কী ভাবে, তারই পর্দা ফাঁস করল করিন হার্ডি পরিচালিত ‘দ্য নান’।

সিনেমার কালপর্ব, ‘দ্য কনজুরিং’-এর সময়ের আগে, ১৯৫২-য়। ঘটনাস্থল, রোমানিয়ার একটি প্রাসাদোপম গথিক মঠ। সেখানে অশুভ প্রভাবে দু’জন সন্ন্যাসিনীর অপমৃত্যু, অশুভ শক্তির হাত থেকে নিজেকে বাঁচাতে এক সন্ন্যাসিনীর গলায় দড়ি দেওয়া, নান ভালাকের ছায়ামূর্তির ধীর আবির্ভাবে সিনেমার শুরু দর্শককে প্রেক্ষাগৃহের সিটে চমকে দেয়। তাতে যোগ্য সঙ্গত দেয় অ্যাবেল করজেনিওস্কির আবহ।

অদূরে গ্রামের যুবক ফ্র্যাঞ্চি গলায় দড়ি দেওয়া দেহ খুঁজে পায়। অশুভ শক্তির রহস্য-সন্ধানে ভাটিকানের নির্দেশে রোমানিয়ার ওই মঠে আসে ফাদার ব্রুক। সঙ্গী, সিস্টার আইরিন। কনজুরিং-দর্শক যার অপেক্ষায় ছিল, এই সিনেমা সেই নান ভালাকের আবির্ভাবের গল্প। অন্ধকার যুগে (‌রোমান সাম্রাজ্যের পতনের কাল) ডিউক অব সেন্ট কার্টার অশুভ শক্তির বশবর্তী হয়ে সমাধিক্ষেত্রে ফাটল ধরিয়ে ভালাককে আহ্বান জানায়।

ভালাকের আবির্ভাব মুহূর্তেই ভাটিকানের সৈন্যদল সেই ফাটলটি নানা কিছু এবং পবিত্রতম বস্তু, ‘খ্রিস্ট-রক্ত’ দিয়ে বন্ধ করে দেয়। সেই ফাটল ফের খোলে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়ে মঠে বোমা পড়ার ফলে। এই সূত্রে দর্শক ১৯৪৩ ও ৪৪-এ রোমানিয়ায় বোমাবর্ষণের প্রসঙ্গ মিলিয়ে দেখতে পারেন। এ ছাড়া সৈন্যদলের প্রসঙ্গে সামান্য সময়ের অদলবদল করলে ‘নাইট টেম্পলার্স’দের কথাও মনে আসে।

এ ভাবে সূত্র খোঁজার সম্ভাবনা দিতে দিতেই নান ভালাক কখনও ফাদারকে কফিনবন্দি করে। কখনও বা ফ্র্যাঞ্চিকে তাড়া করে বা আইরিনকে বিপদে ফেলে চমক দেয়। চমকের চেষ্টা হিসেবেই লাতিনে ‘গড এন্ডস হিয়ার’ মার্কা বাক্য লেখা থাকে দরজায় । কিন্তু এ সব চমক বা ‘ভয়ে’র জাল ছিঁড়তেই ওই তিনজনের দৌড়-ঝাঁপ, ভালাক তাড়াতে পবিত্র রক্তের খোঁজ পাওয়ার রহস্যসন্ধান। শেষমেশ চরম মুহূর্তে সেই ‘ফাটল’ ফের পূরণের আগেই খ্রিস্ট-রক্তের সাহায্যে ভালাকের হাত থেকে বাঁচে আইরিন। কিন্তু তত ক্ষণে ফ্র্যাঞ্চি ওরফে মরিস ভালাকের অশুভ শক্তির চিহ্ন বহন করে ফেলেছে। এটা বেশি করে বোঝা যাবে, এই সিনেমার কালপর্বের কুড়ি বছর পরের একটি ফুটেজে। সেই ফুটেজ দেখছে ক্যারোলিন পেরোন— সেখানেই শুরু কনজুরিং-এর।

সিনেমার শুরু ও চূড়ান্ত মুহূর্তে আইরিনের ‘ভিশন’, নান ভালাকের সঙ্গে লড়াইয়ের অংশ ছাড়া বিশেষ ভয় পাওয়াতে পারেননি পরিচালক এবং লেখক জেমস ওয়ান, গ্যারি ডাবেরম্যানরা। এ ছাড়া, নান ভালাকের মতো কুখ্যাত সিনে-চরিত্রের কোনও পরত বুনতে পারেনি সিনেমাটি। ঘটনাপ্রবাহে যুক্তি পরম্পরারও অভাব।

দ্য নান
পরিচালনা: করিন হার্ডি
অভিনয়: টাইসা ফারমিগা, দেমিয়ান বিচর,
জোনাস ব্লকোয়েট

৫/১০


তবে ফ্র্যাঞ্চির আইরিনের প্রতি দুর্বলতা প্রকাশে কমিক-রিলিফ, গ্রামের ছবি, প্রত্যাশামতোই। টাইসা ফারমিগা, দেমিয়ান বিচর, বনি অ্যারোন্স, জোনাস ব্লকোয়েটরা অভিনয়ে সাবলীল। সিনেম্যাটোগ্রাফার ম্যাক্সিম আলেকজান্দারের ‘হুইপ প্যান শট’গুলিও চমৎকার। ছবির সেটের আবছায়া পরিবেশ দেখতে ভাল, কিন্তু বড্ড পরিচিত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Hollywood Actor Actress Horror
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE