Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

শেম নেই শেমিংয়ে

বলিউডে বডি শেমিংয়ের ধারা অব্যাহত। হাতে গোনা কয়েক জনই দৃষ্টান্ত তৈরি করেছেন...বলিউডে বডি শেমিংয়ের ধারা অব্যাহত। হাতে গোনা কয়েক জনই দৃষ্টান্ত তৈরি করেছেন...

শেষ আপডেট: ০৫ জুন ২০১৯ ০০:২২
Share: Save:

নায়িকাদের ভাইটাল স্ট্যাটস সম্পর্কে আগ্রহ চিরকালীন। তাঁদের শরীরী চাকচিক্য দেখে অনেক পুরুষই ভাবনার বিলাসিতায় শান দেন। উচ্চাকাঙ্খী মহিলারা ওই ধাঁচে নিজেদের গড়ে তোলার স‌ঙ্কল্প নেন। তাই যে ভাবে নারীশরীরকে ভারতীয় পুরুষ দেখতে অভ্যস্ত, তার এক চুল বাঁকা হওয়ার জো নেই। হাতের স্মার্টফোন পছন্দের অভিনেত্রীকে আরও কাছ থেকে দেখার সুযোগ তৈরি করে দিয়েছে। চোখের কোণে বলিরেখা বা অ্যাবসে বেশি ভাঁজ... কৌতূহলী চোখের জ়ুম লেন্সে ধরা পড়বেই। তখনই রে রে করে ওঠে নীতিপুলিশ।

তবে নায়িকা বলে তাঁরা তো ম্যানিকুইন নন। বিশেষত, মহিলাদের শরীরে হরমোনের পরিমাণগত পরিবর্তনের কারণে চেহারায় বদল চলতেই থাকে। সেই কারণেই মা হওয়ার পরে ঐশ্বর্যা রাই বচ্চনের ভারী চেহারায় বিশ্বসুন্দরীর চেনা জৌলুস খুঁজে পাওয়া কঠিন। ওজন কমাতে ব্যর্থ হওয়ায় তির্যক মন্তব্যের মুখে পড়তে হয় বিদ্যা বালনকে। তবু তাঁদের কেরিয়ার থেমে থাকেনি। বর‌ং ভারী চেহারায় কানের মতো আন্তর্জাতিক মঞ্চে দাঁড়িয়েছেন ঐশ্বর্যা। নিজের বডিটাইপকে মেনে নিয়ে অভিনয়ের জোরেই টিকে আছেন বিদ্যা। তবু বডি শেমিংয়ের গেরো থেকে মুক্তি নেই। সম্প্রতি বিদ্যার পোস্ট করা বডি শেমিং বিরোধী এক ভিডিয়ো এই বিষয়ে নতুন করে কথা বলার পরিসর তৈরি করে দিল।

বাণিজ্যিক নায়িকা হওয়ার তাড়না

গ্ল্যামার দুনিয়ায় যে কোনও নায়িকার শরীর তাঁর পেশার অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ। ওজন ভারী হওয়ার প্রবণতা থাকলেও ময়দানে টিকে থাকতে বেশির ভাগ নায়িকাই তন্বী চেহারার দিকে ঝোঁকেন। সোনম কপূর, সোনাক্ষী সিংহ, আলিয়া ভট্ট বা নবাগতা সারা আলি খান কেউই গ্ল্যামারের হাতছানিকে উপেক্ষা করতে পারেননি। এঁরা সকলেই ইন্ডাস্ট্রিতে আসার আগে নিজেদের ঘষেমেজে ‘সর্বজনসম্মত’ চেহারায় নিয়ে এসেছেন। কেরিয়ারের গোড়ার দিকে ভারী চেহারা হলেও ঘাম ঝরিয়ে চেহারায় বদল এনেছেন পরিণীতি চোপড়াও।

ব্যতিক্রমী হুমা-রিচা

বলিউড নায়িকাদের তুলনায় রিচা চড্ডা ও হুমা কুরেশি ওজনের মাপকাঠিতে বেশির দিকে। তবে তাঁরা যখন প্রথম ইন্ডাস্ট্রিতে এসেছিলেন, তখনও আজকের মতো চেহারায় ছিলেন না। আনন্দ প্লাসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে রিচা বলেছিলেন, ‘‘প্রথম যখন এলাম, তখন লোকে বলল খুব রোগা। যখন একটু ওজন বাড়ালাম, বলা হল শরীরের বিশেষ বিশেষ জায়গায় মেদ বাড়াতে... শরীর নিয়ে ইন্ডাস্ট্রির এই ধরনের বক্তব্য থাকবেই।’’ তবে কারও কথায় কান না দিয়ে হুমা ও রিচা নিজেদের শর্তেই পথ চলছেন।

রোগাতেও বিপত্তি

বডি শেমিং কিন্তু একমুখী নয়। ইন্ডাস্ট্রিতে সদ্য আসা অনন্যা পাণ্ডে বলেছেন, ‘‘আমার পা খুব লম্বা ও রোগা বলে অনেকে আমাকে কঙ্কাল বলত।’’ রোগা-ভারীর পাশাপাশি, বেঁটে-লম্বা, চোখ-নাকের শেপ, ত্বকের রং... যে কোনও কিছু নিয়ে আক্রমণ হতে পারে। কল্কি কেঁকলা এক বার বলেছিলেন, ‘‘চোখে বলিরেখা থাকায় আইলাইনার নাকি আমাকে পরানো যায় না!’’

মুশকিলটা হল, পিকচার পারফেক্ট শরীর দশ জনের মধ্যে ন’জনেরই থাকে না। কিন্তু শো-বিজ়ের চৌহদ্দিতে শরীর নিয়ে কড়াকড়ি বেশিই। তবে বৃহত্তর দর্শককে উপেক্ষা করে, নিজের ফেলে আসা চেহারার মায়া কাটিয়ে ঐশ্বর্যা বা বিদ্যার মতো যাঁরা নিজের সীমাবদ্ধতাকেও সাদরে গ্রহণ করেছেন, তাঁরাই কিন্তু এই প্রজন্মের আদর্শ হওয়া উচিত। কারণ, রূপ-রং-যৌবনের ঊর্ধ্বে উঠে শারীরিক ও মানসিক ভাবে সুস্থ হয়ে বেঁচে থাকাটাই আসল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE