সেই অনুষ্ঠানে। —নিজস্ব চিত্র।
সেই ১৯১৯ সালে ‘বিল্বমঙ্গল’-এর হাত ধরে শুরু। নির্বাক, সবাক, সাদা-কালো, রঙিন হয়ে বাংলা ছবি এগিয়েই চলেছে। বাংলা সিনেমার ১০০ বছরে পিছন ফিরে তাকালে শুধু অবাক নয়, গর্বও হয়। এ বার বাংলা সিনেমার শতবর্ষ উদ্যাপনের ভাবনায় জুড়ে গেল মিষ্টিও। আনন্দলোক এবং ‘ক্যাডবেরি মিষ্টি সেরা সৃষ্টি’ মিলে আয়োজন করেছিল দু’দিন ব্যাপী অনুষ্ঠানের। প্রত্যেক বছরের মতোই ক্যাডবেরির সঙ্গে মিষ্টির অভিনব রেসিপির সন্ধান তো ছিলই। ছিল সিনেমার গল্পও। না হলে কি আর ‘পথের পাঁচালী’, ‘সপ্তপদী’, ‘মেঘে ঢাকা তারা’, ‘গুপী গাইন বাঘা বাইন’, ‘উদয়ের পথে’, ‘কাবুলিওয়ালা’, ‘সোনার কেল্লা’, ‘বসন্তবিলাপ’, ‘নায়ক’, ‘উনিশে এপ্রিল’, ‘ভূতের ভবিষ্যৎ’, ‘বেলাশেষে’র মতো কালজয়ী সিনেমার নামে দারুণ সব সিনেমিষ্টি তৈরি হয়!
অনুষ্ঠানের প্রথম দিন উপস্থিত ছিলেন সুশীলকুমার চট্টোপাধ্যায়, যাঁকে ইন্ডাস্ট্রি নকুবাবু নামেই বেশি চেনে। তাঁর বাড়ি আজ ছোটখাটো মিউজ়িয়াম। বাংলা সিনেমায় ব্যবহৃত নানা যন্ত্র জোগাড় করাই তাঁর নেশা। তার সঙ্গেই ৯৩ বছর বয়সি নকুবাবুর ভাঁড়ারে রয়েছে হাজারো গল্প। ‘‘স্টার থিয়েটারে তখন অভিনয় চলছে। দেখার জন্য জুড়িগাড়িতে চেপে আসতেন অনেকে। শ্যামবাজারের মোড় থেকে বেজে উঠত হর্ন। তক্ষুনি দরজা খুলত স্টার থিয়েটারের। জুড়িগাড়ি থেকে নামতেন রানিবালা। তাঁর হিরের নাকছাবি ঝকঝক করত,’’ নকুবাবুর চোখের তারায় সেই দৃশ্যের ঝলকানি।
দ্বিতীয়ার্ধে অবশ্য মঞ্চের হাওয়া গরম হয়ে উঠেছিল বাগ্বিতণ্ডায়। বিতর্কের বিষয় যখন ‘মুখে না বললেও মিষ্টি ছবিই বাঙালি খায়’, তখন হাওয়া গরম হওয়াই স্বাভাবিক। বিতর্কের পক্ষে ছিলেন চন্দ্রিল ভট্টাচার্য, সুদীপ্তা চক্রবর্তী এবং শ্রীজাত। বিপক্ষে বক্তব্য রাখেন সঞ্জয় মুখোপাধ্যায়, অরিন্দম শীল এবং ঋতাভরী চক্রবর্তী। তবে মিষ্টি ছবি না কি বাঙালির চাহিদাবদল— এ নিয়ে বাদানুবাদ যতই হোক, সমাপতন হয় মিষ্টি মুখেই।
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
দ্বিতীয় দিনের বিশেষ আকর্ষণ ছিল অবশ্যই টক শো। ‘মিষ্টি তৈরি আর ছবি তৈরিতে ফারাক নেই, সবই পাকের খেলা’ নিয়ে বলতে গিয়ে স্মৃতিকাতর হয়ে পড়েন আবীর চট্টোপাধ্যায়, দেবশঙ্কর হালদার এবং কমলেশ্বর মুখোপাধ্যায়। অভিনেতা এবং পরিচালকদের মিষ্টির প্রতি প্রেমের সঙ্গে ওতপ্রোত ভাবে জুড়ে গিয়েছিল ছবি তৈরির অভিজ্ঞতাও। অনুষ্ঠান শেষে উপচে পড়া হাততালি ছাড়াও বিশেষ প্রাপ্তি হিসেবে কিন্তু বলা যায়, আনন্দলোকের বিশেষ সংখ্যার কথা। সিনেমার গল্প, রঙিন পোস্টার আর সিনেমিষ্টি... সব মিলিয়ে একেবারে জমজমাট মিষ্টি মনে বাংলা সিনেমার শতবর্ষ দর্শন!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy