হোলি বা দোল শব্দটা কোথায় যেন মনের সঙ্গে জড়িয়ে আছে। বসন্তকালে সবার মনেই রং লাগে। এই রং শুধু শরীরেই লাগে না, মনের ভিতরেও লাগে। সে জন্যই তো বসন্তোৎসব সবাই খুব ধুমধামের সঙ্গে পালন করেন। ছোটবেলায় দেখতাম বাড়িতে নারায়ণ পুজো হত, তার পর শুরু হত দোলখেলা। এখন কিন্তু আগের মতো উদ্দাম রং খেলা হয় না। সবাই এখন সাবধানী। ত্বক, চুল, নখ—এ সব যাতে নষ্ট না হয়, তার জন্য অনেক কিছু করা হয়। তবে রং খেলার সময় কি আর অত মনে থাকে? কিন্তু তার পরেই মুখ চুলকোতে থাকে, গায়ে ফুসকুড়ি হয়। অনেক সময় চুলও উঠতে থাকে। এই সবই অ্যালার্জি থেকে হয়। অনেক রঙেই কেমিকাল থাকে, তার থেকেই হয় অ্যালার্জি। আজকাল ফুল থেকে রং বা অর্গানিক রং বেরিয়েছে। এই রঙে খেললে ত্বক-চুল-নখ সব বাঁচানো যায়।
রং খেলার আগে কয়েকটা উপকরণ হাতের কাছে রাখা দরকার।
১) ঠান্ডা জল।
২) আইড্রপ।
৩) সিসল্ট।
৪) হাইড্রোজেন প্যারাঅক্সাইড।
৫) অ্যালার্জির ওষুধ।
যাদের আবির বা শুকনো রঙে অ্যালার্জি থাকে তারা নাকে পেট্রোলিয়াম জেলি লাগিয়ে রং খেললে ফুসফুসে রং ঢুকতে পারে না। অ্যালার্জির হাত থেকে বাঁচা যায়।
সাবধানে রং খেলুন। কিছু টিপস।
১) রং খেলার সময় এমন জামাকাপড় পরা উচিত যাতে সারা শরীর ঢাকা থাকে।
২) ভাল করে বডি অয়েল বা ভাল হারবাল ময়শ্চারাইজার, অথবা সানস্ক্রিন লাগিয়ে রং খেললে ত্বকে রং গাঢ় হলেও লাগবে না। ত্বকের ক্ষতিও হবে না।
৩) হেয়ার অয়েল এবং ক্যাস্টর অয়েল একসঙ্গে মিশিয়ে চুলে লাগালে চুলের ক্ষতি হবে না।
৪) নখে রং লেগে গেলে উঠতে সময় লাগে। তাই গাঢ় রঙের নেলপালিশ নখে লাগিয়ে রং খেললে নখ বেঁচে যাবে।
৫) খুব গাঢ় রং শরীরে লাগলে জলে হাইড্রোজেন প্যারাঅক্সাইড মিশিয়ে স্নান করলে রং তাড়াতাড়ি উঠে যায়।
৬) দোল খেলার পর হারবাল শ্যাম্পু দিয়ে স্নান করবেন। তারপর চুলে কন্ডিশনার লাগাবেন।
৭) রং উঠতে না চাইলে প্রথমে হাইড্রোজেন প্যারাঅক্সাইড যুক্ত জল দিয়ে রং ধুয়ে নিন। তার পর ট্যানক্লিয়ার স্ক্যাব লাগিয়ে স্নান করলে রং উঠে যাবেই।
৮) বেসন ২ চামচ, হলুদ ২ চামচ ও লেবুর রস মিশিয়ে ত্বকে লাগালে রং চলে যাবে আর ত্বক নরম হবে।
৯) সবেদা পেস্ট করে, তার সঙ্গে দই মিশিয়ে লাগালে ত্বকের আর্দ্রতা ফিরে আসবে।
১০) সাধারণত হাতে ও পায়ে রং পাকা ভাবে থেকে যায়। গরম জলে এইচ-টু ও-টু দিয়ে পা ও হাত কিছুক্ষণ ভিজিয়ে রাখলে রং উঠে যাবে। তার পর ময়শ্চারাইজার লাগিয়ে রাখুন।
১১) দোলের পরে মুখ জ্বালা করলে বা ফুসকুড়ি বেরোলে লবঙ্গযুক্ত Anti-Rash ক্রিম লাগান।
১২) চুল যদি রুক্ষ লাগে তবে দই-ডিম-তেল একসঙ্গে মিশিয়ে লাগালে চুল নরম হবে।
১৩) চোখে যদি রং ঢুকে যায় তাহলে একদম চোখ রগড়াবেন বা ঘষবেন না, ঠান্ডা জলের ঝাপটা দিন, সঙ্গে আইড্রপ দিন।
১৪) হাত পরিষ্কার করতে ট্যানকিলার স্ক্র্যাব দিয়ে হাত ঘষুন। রং উঠে যাবে।
১৫) স্নানের পর ভাল করে হারবাল ক্লিনজার দিয়ে মুখ পরিষ্কার করা দরকার। তারপর রোজ টোনার লাগালে ত্বক উজ্জ্বল হবে।
১৬) হেয়ার অয়েল, জোজোবা তেল এবং রোজমেরি একসঙ্গে মিশিয়ে চুলে লাগালে রুক্ষতা থেকে চুল রক্ষা পাবে ও নরম হবে।
১৭) রঙে অ্যালার্জি থাকলে অ্যালার্জির ওষুধ খাবেন।
১৮) তেলতেলে ত্বকের জন্য অ্যালবেরা জেল দিয়ে মাসাজ করলে ত্বকে Rash উঠবে না।
১৯) দোলের পর প্রচুর জল বা ফলের রস খাওয়া দরকার। পার্লারে গিয়ে একবার ফেসিয়াল ও হেয়ার স্পা করা উচিত।
২০) নন-কেমিকাল রং ব্যবহার করুন। নিরাপদ হোলি খেলুন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy