সেই ‘ত্রিনয়ন ও ত্রিনয়ন একটু জিরো’র মতো! গল্পের গোড়ায় ধাঁধা! তা’ও আবার একটা নয়, দুটো। ‘আঠেরো পেয়ের কাছে চোদ্দো পেয়ে আছে’। দ্বিতীয়টি, ‘আদর শিকায় তুলি রাখে যেইজন/ প্রতাপ অক্ষয় হয় বাড়ে মানধন।’ এই দুটি ধাঁধার কিনারা হলেই উদ্ধার হবে হারিয়ে যাওয়া সোনার ঐতিহাসিক কলম। সেই সঙ্গে বেঁচে যেতে পারে এক বনেদি পরিবারের হারিয়ে যেতে বসা সম্মানও।
তবে ‘পুনশ্চ’, ‘এবং ঋতুপর্ণ’-র পরিচালক শৌভিক মিত্রর নতুন ছবি ‘কার্জনের কলম’ শুধু হারানো কলম বা ঐতিহ্য লুটিয়ে পড়তে চলার কল্পগল্প নয়। এই কমেডি থ্রিলারের গায়ে লেগে প্রেম, স্মৃতিকাতরতা, শ্লেষ, শ্লাঘা, এমনকী দুই বিপরীত চিন্তার মানুষজনের সংঘাতও।
উত্তর কলকাতার মিত্রবাড়ি। ১৯০৫ সালে যে বাড়ির দুর্গাপুজো উদ্বোধনে এসেছিলেন লর্ড কার্জন। বাড়ির কর্তা পাঁচুব্রত মিত্রর হাতে উপহারস্বরূপ তিনি দিয়ে যান একটি কলম। যে-সে কলম নয়, যে কলমে তিনি স্বাক্ষর দিয়েছিলেন বঙ্গভঙ্গে!
উপহার প্রদানের সময়ই খবরটি চাউর হলে মিত্রবাড়িতে বিক্ষোভ দেখাতে হামলে পড়ে হালসিবাগান, সুতানটির বাসিন্দারা। বেগতিক বুঝে কার্জনকে বিদায় করা হয় বাড়ির খিড়কি দিয়ে। কিন্তু ওই ডামাডোলে কলমটি যে কোথায় রাখলেন কর্তা, ভুলে যান। শেষে মৃত্যুকালে শুধু ছড়া দুটিই বলে যেতে পারেন তিনি।
এই ফ্ল্যাশব্যাক থেকে গল্প এসে পড়ে ২০১৬-১৭য়। যে সময় বাড়ির দশা এতটাই বেহাল যে, প্রাচীন পুজো বাঁচাতে গেলে হয় বাড়ি বেচতে হবে, নয় উদ্ধার করতে হবে সেই কলম। ঐতিহাসিক ওই কলম যদি প্রাচীন পুজো বাঁচাতে, এমনকী বাড়িটিকে রক্ষা করতে পারে!
ছবিতে খরাজ ও কাঞ্চন

ধাঁধার হেঁয়ালি উদ্ধারে নামে মিত্রবাড়ির যুবতী মেয়ে পুপু (পৌলমী দাস) আর প্রেমিক বন্ধু তাতু (সাহেব ভট্টাচার্য)! কী পরিণতি হয় তাদের?
কাহিনি ও চিত্রনাট্য পদ্মনাভ দাশগুপ্তর। মিউজিক দেবজ্যোতি মিশ্রর। অভিনয়ে লিলি চক্রবর্তী, পরান বন্দ্যোপাধ্যায়, খরাজ মুখোপাধ্যায়, কাঞ্চন মল্লিক, কুশল চক্রবর্তী, দেবদূত ঘোষ ও আরও অনেকে। ছবির মুক্তি ২ জুন।