Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

পরপর ব্যোমকেশ করতে একঘেয়েমি আসছে না? আবীর বললেন...

সত্যান্বেষী, তাই সাদাতেই তাঁর আবির্ভাব। আনন্দ প্লাসের ফোটোশুটে সে কথাই বললেন আবীর চট্টোপাধ্যায়সত্যান্বেষী, তাই সাদাতেই তাঁর আবির্ভাব। আনন্দ প্লাসের ফোটোশুটে সে কথাই বললেন আবীর চট্টোপাধ্যায়

দীপান্বিতা মুখোপাধ্যায় ঘোষ
শেষ আপডেট: ০৯ অক্টোবর ২০১৮ ০০:১৩
Share: Save:

ধুতি পড়া বাঙালি নায়ক বললে এক কথায় উত্তমকুমারের ছবিটা ভেসে ওঠে। যে ধুতি সামলাতে এ প্রজন্মের হাঁসফাঁস দশা, তা তিনি অবলীলায় সামলাতেন। ব্যোমকেশ বক্সী ধুতি পরে অপরাধীর পিছনে ছুটছে, এমন একটা দৃশ্য না থাকলে ব্যোমকেশের সাবেকিয়ানা যেন ঠিক জমে না। আবীর চট্টোপাধ্যায় এবং ব্যোমকেশের পরিচালক অরিন্দম শীল দু’জনেরই এমন একটা দৃশ্যের ইচ্ছে ছিল। ‘ব্যোমকেশ গোত্র’ তা পূরণ করেছে। আনন্দ প্লাসের ফোটোশুটে আবীরকে দেখলে মনে হবে, ধুতি তাঁরও আয়ত্তে। তবে রে়ডিমেড ধুতি। ‘‘এমনি ধুতি পরতেই পারি। কিন্তু রেডিমেড হলে একটু নিশ্চিন্ত থাকা যায় আর কী,’’ বললেন আবীর।

অভিনেতার এক হাতে শরদিন্দু বন্দ্যোপাধ্যায়, অন্য হাতে শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়। তাঁর দুই পছন্দের লেখকের সৃষ্ট চরিত্রে তিনি পর্দায়। ‘‘আমি বলব ব্যোমকেশই আমার আসল রিলিজ়। ‘মনোজদের অদ্ভুত বাড়ি’তে আমার স্ক্রিন টাইম বেশি নয়। ‘ব্যোমকেশ গোত্র’ আমার নিজের ফ্র্যাঞ্চাইজ়ি। আর ‘রক্তের দাগ’ খুব জনপ্রিয় একটা গল্প। দুটোই সাহিত্যধর্মী গল্প, দুটো আলাদা স্বাদের। দর্শক দুটো ছবিতেই আনন্দ পাবেন।’’

ছবি রিলিজ়, পুজোর ইভেন্ট কেটে গেলে বাকি দিনগুলো তিনি নিশ্চিন্ত। তখন বন্ধু, পরিবারের সঙ্গে দেদার আড্ডা। ‘‘আমার এমবিএ-র বন্ধুদের একটা গ্রুপ আছে। নবমীর দিন আমরা সকলে একসঙ্গে আড্ডা দেব, এটা হল অলিখিত নিয়ম। সেই নিয়মটা আমারই করা।’’

খেতে ভালবাসেন। কিন্তু নিজেকে বাঁধাধরা ডায়েটে রেখেছেন। পুজোর দিনগুলোয় কি ডায়েট ভঙ্গ হচ্ছে? ‘‘আমি খেতে ভালবাসি বলে বেহিসেবি হয়ে যাওয়ার একটা সম্ভাবনা থাকে। এই খাওয়াদাওয়া, ফিটনেস একটা অভ্যেসের ব্যাপার। দুম করে শুরু করা বা ছাড়া যায় না। তাই বাইরের খাবার খেলেও খুব বাড়াবাড়ি কিছু করি না,’’ বয়ান আবীরের।

ছবি রিলিজ়, শহর জুড়ে নিজের হোর্ডিং... এ সবের মাঝে কি সেলেব্রিটি জীবনের আগের পুজোটাকে মিস করেন? ‘‘সব কিছু একসঙ্গে পাওয়া যায় না,’’ সহজ উপলব্ধি তারকার। ব্যাখ্যা করে বললেন, ‘‘প্রত্যেক সময়ের আলাদা আলাদা মজা। কলেজ লাইফে যেগুলো করার, তখন সেটা করে নিয়েছি। এখন গোটা শহর জুড়ে নিজের হোর্ডিং দেখতে ভাল লাগে। তার জন্য রাস্তায় দাঁড়িয়ে ফুচকা হয়তো খেতে পারি না। কিন্তু এটা তো হবেই... মেনে নেওয়া ভাল।’’

পুজোর মাঝে অন্য কাজ নেই। সেই সময়টায় কি মেয়ের আবদার মেটাতে হয়? ‘‘ওটা মেয়ে আমাকে যখনই কাছে পায়, তখনই মেটাতে হয়,’’ গলায় প্রশ্রয়ের সুর। বলছিলেন, ‘‘মেয়ে খুব একটা ঘুরতে চায় না। আর কোথাও গেলেও দাদু-ঠাকুমার সঙ্গেই ও বেশি স্বছন্দ। আমি থাকলেই কোলে করে ঘোরাতে বলবে! তবে আমার বন্ধুদের আড্ডায় বাকিদের বাচ্চাদের সঙ্গে খুব হুল্লোড় করে।’’

আবীর যে ভাবে পুজো কাটিয়েছেন তাঁর ছোটবেলায়, মেয়ে ময়ূরাক্ষীর ছোটবেলা তার চেয়ে অনেকটা আলাদা। কখনও মনে হয়, মেয়ে যদি আপনার মতো ছেলেবেলাটা পেত? ‘‘মজার ব্যাপার হল, আমার ছোটবেলায় বড়রা বলত, ‘আহা রে... তোরা যদি আমাদের ছোটবেলাটা দেখতিস’! এটা কিছু করার নেই। ওরা নিজেদের মতো উপভোগ করছে। আমরা আমাদের মতো করেছি।’’

পুজোর আড্ডা, খাওয়া সব হল। কিন্তু এই জোড়া রিলিজ় কি বাড়তি চাপে ফেলে দিচ্ছে?

‘‘চাপ, আনন্দ দু’রকম অনুভূতিই আছে। ছবিটা কেমন হল, না-হল তা নিয়ে টেনশন থাকে। তবে পুজোর অন্য অনেক মজা, হইচইয়ের ভিড়ে খুব বেশি টেনশন করার সময়ও থাকে না। আর পুজোর সময় লোকজন ছবি দেখতে যান। সেটা পজ়িটিভ দিক,’’ বলছিলেন আবীর।

পরপর ব্যোমকেশ করতে একঘেয়েমি আসছে না? আবীরের কথায়, ‘‘না, মাঝের একটা বছর তো ব্যোমকেশ করিনি। আর ‘বিদায় ব্যোমকেশ’ অন্য রকম একটা ফরম্যাটে ছিল। ‘ব্যোমকেশ গোত্র’ও ফ্র্যাঞ্চাইজ়ির বাকি ছবিগুলোর চেয়ে আলাদা। সেটাই আমাদের কাছে ব়়ড় চ্যালেঞ্জ ছিল।’’ এটাই সেরা ব্যোমকেশ? ‘‘এটা না দেখা পর্যন্ত বলতে পারব না,’’ সত্যান্বেষীর সাবধানী জবাব।

ছবি: দেবর্ষি সরকার

মেকআপ: নবীন দাস; পোশাক: বহুরূপী; স্টাইলিস্ট: অভিষেক রায়

শুটিং কোঅর্ডিনেটর: ঈপ্সিতা বসু

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE