পাওলি।মেকআপ: অনিরুদ্ধ চাকলাদার।ছবি: সোমনাথ রায়
সব নাকচ করে দিয়ে বিয়ের আসর থেকে তিনি শেষ মুহূর্তে পালাবেন, এমন আশঙ্কা ছিল কারও কারও। কিন্তু সব আশঙ্কায় জল ঢেলে গুছিয়ে, চুটিয়ে সংসার করছেন পাওলি দাম। বালিগঞ্জের ফ্ল্যাটের বৈঠকখানায় এসে যখন বসলেন, ঠিক আগের পাওলিকেই পাওয়া গেল। বদল বলতে বাঁ হাতে বিয়ের হিরের আংটি আর নোয়া...
প্র: বিয়ের পর কতটা বদল এল?
উ: খুব বেশি বদল হয়নি। দু’দিক ব্যালান্স করে চলতে হচ্ছে। আগে শুধু বাবা-মা-ভাই আর কাজ ছিল। এখন পরিবার বড় হয়ে গিয়েছে। আর অর্জুনের পরিবারের সকলেই ভীষণ হুল্লোড়ে। কাজের সঙ্গে গল্প, আ়ড্ডাও তো করতে হবে নাকি!
প্র: শ্বশুরবাড়িতে তা হলে দিব্যি মানিয়ে নিয়েছেন!
উ: মানিয়ে বললেও কম বলা হয়। শ্বশুরবাড়িতে আমি এত প্যাম্পার্ড হই যে, বলার নয় (জোর হাসি)! অর্জুনের মা ফিকি-র সদস্য। অনেক জায়গায় যান। শাড়ি ভালবাসি বলে সব জায়গা থেকে শাড়ি নিয়ে আসেন।
প্র: অনেকে ভেবেছিলেন, আপনি বিয়ের দিন হয়তো সব কিছু ভেস্তে দেবেন...
উ: সকলে নয়, শুধু অনিরুদ্ধদা (চাকলাদার)! মা-বাবা আমাকে নিয়ে যত টেনশন করে, তার দশগুণ বেশি করে অনিরুদ্ধদা! কেন হঠাৎ বিয়ের আসর থেকে পালাব বলতে পারেন (হাসি)?
আরও পড়ুন: সমবয়সি তিন বন্ধুর গল্প...
প্র: বিয়ের পরে দু’মাস ছুটি নিয়ে কাজে ফিরেছেন। কোনও পরিবর্তন বুঝছেন?
উ: বিয়ের পরে এই ব্রেকটা দরকার ছিল। সময় ভাগ করে নিয়েছি। কাজ না থাকলে গুয়াহাটি চলে যাই। অর্জুনও কলকাতা চলে আসে। বিয়ের পরে প্রায়োরিটিগুলো বদলে গিয়েছে। লোভ দেখাতে পারবে এমন কাজ চাই। শুধু কাজের জন্যই ছবি করব না।
প্র: একটা সময়ে পর পর ছবি করেছেন। নিন্দুকদের বক্তব্য, পাওলি বাছবিচার না করেই ছবি করে ফেলেন।
উ: চরিত্রগুলো ভাল লেগেছে বলেই করেছি। তবে এখন বাছাই করে কাজ করব। এ বছর ভাল কিছু কাজ করলামও। প্রতিম দাশগুপ্তর ‘আহা রে মন’, ‘ইঙ্ক’ করলাম। শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়-নন্দিতা রায়ের সঙ্গে ‘কণ্ঠ’ করে ভীষণ ভাল লেগেছে। ওয়র্কশপ করে কাজ করলাম। এই প্রজন্মের পরিচালকদের এ ভাবে কাজ করতে দেখি না। বুদ্ধদেব দাশগুপ্ত বা গৌতম ঘোষ করে থাকেন। লীনা গঙ্গোপাধ্যায়-শৈবাল বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে ‘মাটি’, মনোজ মিশিগানের ‘তৃতীয় অধ্যায়’ রয়েছে। ভারত-বাংলাদেশ যৌথ প্রযোজনায় ‘হলুদবনি’ করেছি। ওয়েব সিরিজ়, শর্টফিল্মেও কাজ করার কথা চলছে। কত পরিচালকের সঙ্গে কাজ করা বাকি! কৌশিকদার (গঙ্গোপাধ্যায়) সঙ্গে কাজ করতে চাই।
প্র: ‘জুলফিকর’-এর অভিজ্ঞতার পরে সৃজিত মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে কাজ করবেন আবার?
উ: ও যদি আমাকে ভাল, জোরালো কোনও চরিত্র দেয়, অবশ্যই করব। আর আমার ‘জুলফিকর’-এর অভিজ্ঞতা যে ভাল নয়, এটা আমি সৃজিতকে সরাসরি বলেছি। কাজ করার সময়ে এক রকম ভেবেছিলাম। ছবিটা দেখে অন্য রকম লাগল। অভিনেতা হিসেবে স্যাটিসফায়েড হইনি।
প্র: যতই বাছাই করে কাজ করুন, ব্যস্ততা তো থাকবেই। অর্জুন কিছু বলেন না?
উ: কাজটা তখনই করা সম্ভব, যদি পার্টনার খুব সাপোর্টিভ হয়। ও চায়, আমি কাজ করি। অর্জুন খুবই সহযোগিতা করে।
প্র: সিনেমা জগতে নানা রকম গসিপ চলতেই থাকে। আপনাকে নিয়ে সে রকম কিছু রটলে সমস্যা হবে না?
উ: আমাকে নিয়ে গসিপ, লিংক আপ হবে না। আমি এমন কিছু করিও না। তাও যদি কেউ কখনও বানিয়ে লেখে, আমি সোশ্যাল মিডিয়ায় বিষয়টা খোলসা করে দেব (হাসি)! আর অর্জুন ভীষণ ম্যাচিয়োর্ড। ও জানে কোনটা কাজের জন্য দরকার, কোনটা নয়। সেটা না হলে কলকাতা-গুয়াহাটি করে কাজ করাটা আমার পক্ষে মুশকিল হতো।
প্র: অর্জুন ইন্ডাস্ট্রির পার্টিতে যান?
উ: হ্যাঁ, খুব ভালবাসে। কিছু দিন আগেই ‘হামি’র প্রিমিয়ারে গেলাম। ও এমনিতে ইন্ট্রোভার্ট হলেও সকলের সঙ্গে মিশতে পারে।
প্র: আদিল হুসেনের সঙ্গে দুটো ছবি করলেন। কেমন অভিজ্ঞতা?
উ: আদিলের সঙ্গে আমার টিউনিং বেশ ভাল। ও বড় মাপের শিল্পী তো বটেই, মানুষটাও ভাল। ‘মাটি’র সময়ে ভাল বন্ধুত্ব হয়ে গিয়েছিল। তার পর ‘আহা রে মন’ করলাম। ওর কাছে টেকনিক্যাল দিকগুলো শিখেছি।
প্র: আপনার মুখে কখনও কোনও বিতর্কিত কথা শোনা যায় না। বিয়ের পর কি আরও সাবধানী হয়েছেন?
উ: (জোর হাসি) আমি তো কখনওই কারও নামে কিছু বলি না। আসলে খারাপ-ভাল ব্যক্তিবিশেষে নির্ভর করে। দুম করে মন্তব্য করব কেন? তুলা রাশি তো, তাই সব সময়ে ব্যালান্স করে চলি। আমার সঙ্গে ইদানীং তো কেউ খারাপ করেনি (মুচকি হেসে)। অনেক আগে করেছে অবশ্য। সে সব ভুলে গিয়েছি!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy