Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

ব্রেকআপ আমারও হয়েছে...

কথা ছিল তাঁর অফিসে সাক্ষাৎকার দেবেন। কিন্তু প্রযোজনা আর শ্যুট নিয়ে এতটাই ব্যস্ত যে, ফোনে বললেন, ‘‘ইকো পার্কের সামনে আসুন। একটা সাদা গাড়ি আপনাকে ফলো করবে।’’ কিছু বলার আগেই ও পারের ফোন বন্ধ। ইকো পার্ক পেরোতেই একটা সাদা মার্সিডিজ রাস্তা আটকালো।

স্রবন্তী বন্দ্যোপাধ্যায়
শেষ আপডেট: ০৯ জুন ২০১৭ ০০:০০
Share: Save:

কথা ছিল তাঁর অফিসে সাক্ষাৎকার দেবেন। কিন্তু প্রযোজনা আর শ্যুট নিয়ে এতটাই ব্যস্ত যে, ফোনে বললেন, ‘‘ইকো পার্কের সামনে আসুন। একটা সাদা গাড়ি আপনাকে ফলো করবে।’’ কিছু বলার আগেই ও পারের ফোন বন্ধ। ইকো পার্ক পেরোতেই একটা সাদা মার্সিডিজ রাস্তা আটকালো। একজন কালো পোশাকের ভদ্রলোক বললেন, ‘‘স্যার গাড়িতে ডাকছেন।’’ কালো ফুল স্লিভ শার্ট আর ক্রিম ট্রাউজার্সে চ্যাম্পের সঙ্গে গাড়িতে যেতে যেতে আড্ডা শুরু...

প্র: প্রযোজক না কি অভিনেতা দেব, আগে কাকে রাখবেন?

উ: আপাতত ভয়কে সকলের আগে রাখব।

প্র: দেব ভয় পান!

উ: বাংলায় বাণিজ্যিক আর শহরের ছবি এই ভাগ যে আর নেই, সেটা বোঝানোর জন্যই ‘চ্যাম্প’ করলাম। এমন ছবি যা সব স্তরের মানুষকে হলমুখী করবে। পোস্টার, গান, ট্রেলার দেখে সকলেই এখন বলছে কবে প্রিমিয়ার হবে? ছবি নিয়ে লোকের এক্সপেকটেশন বাড়ছে। ভয় তো হবেই।

প্র: ‘বস টু’ আর ‘চ্যাম্প’-এর প্রিমিয়ার কি একই দিনে?

উ: প্রিমিয়ার করবই না ঠিক করেছি।

প্র: এটা বিতর্ক থেকে গা বাঁচানো?

উ: গা বাঁচানোর কী আছে! আমার আমন্ত্রিতের লিস্ট এতটাই লম্বা, একটা প্রিমিয়ারে সারতে পারব না। আমি বরং জিৎদার প্রিমিয়ারে যাব।

প্র: জিতের জন্য না কি প্রাক্তন প্রেমিকা শুভশ্রীর জন্য?

উ: ওই শুরু হয়ে গেল! শুভশ্রী আজও আমার খুব ভাল বন্ধু। ‘খোকা ৪২০’‌-র সময় ওকে বলেছিলাম, যদি কোনও দিন আমি প্রোডিউসর হই, তা হলে প্রথম ছবিতে শুভকে নেব। আমি কথা রেখেছি কিন্তু।

প্র: কথা তো রাখলেন, কিন্তু ‘ধূমকেতু’ তো রিলিজই হল না!

উ: এটা প্লিজ কৌশিকদাকে (গঙ্গোপাধ্যায়) জিজ্ঞেস করুন। আমি কৌশিকদাকে বলেছিলাম ছবিটা আমাকে দিয়ে দাও। দীপাবলিতে রিলিজ করছি। আমার পারিশ্রমিকও চাইনি। তাও কিছু হল না! ওই ছবিতে আমার সেরা কাজ আছে। ‘ধূমকেতু’ রিলিজ হচ্ছে না দেখে, এক রকম জেদ করেই ‘চ্যাম্প’ করলাম।

প্র: লোকে তো বলছে দেব রাজনীতি করে অভিনয়ের বারোটা বাজিেয়ছে। সুপারস্টারদের ঘরে ঘরে যেতে নেই...

উ: সোশ্যাল মিডিয়ার দুনিয়ায় আজ আর সুপারস্টার বলে কিছু নেই। অমিতাভ বচ্চন রোজ কী পোশাক পরেন আমরা জানি। শাহরুখ ছবির প্রমোশনের জন্য লোকের ঘরে ঘরে যায় আমিও রাজনীতির জন্য গিয়েছি। খুব শিগগির এমন দিন আসবে,
যখন ভোটের প্রচার আর রাজনীতির প্রচার একই রকম
হয়ে যাবে। আর শুনুন আমার কোনও চ্যালা বা সেক্রেটারিও নেই যে ফোন ধরে বলবে, ‘দাদা কথা বলবে না’। নিজেই ফোন ধরি।

প্র: আপনি শুভশ্রী আর রাজের বিষয় কী বলবেন?

উ: আমি তো রাজকে কিছু বলিনি। দেখুন ব্রেকআপ আমারও হয়েছে। এগুলো জীবনের একটা পার্ট। তবে আমি, শুভশ্রী, মিমি, অঙ্কুশ সবাইকে কাজ নিয়ে পরামর্শ দিই। আমি তো সিনিয়র।

প্র: আর রুক্মিণী? শুনেছি বিদেশে শ্যুট থাকলে রুক্মিণীও যান। এটা কি নিরাপত্তাহীনতার কারণে?

উ: (থামিয়ে) এটা তো রুক্মিণী বলতে পারবে।

প্র: দেবের বান্ধবী বলেই কি রুক্মিণী এত বড় সুযোগ পেলেন?

উ: একেবারেই না। বিশ্বাস করুন ‘চ্যাম্প’-এর জয়া রুক্মিণী ছাড়া অন্য কেউ হতে পারত না। যারা এ ছবিটা দেখেছে, প্রত্যেকেই বলছে রুক্মিণীকে বলিউডের হিরোইন মনে হচ্ছে। একজন পুরুষকে সাপোর্ট করার জোরটা ওর মধ্যে আছে। দেব-রুক্মিণীর কেমিস্ট্রিটাই এ ছবির ইউএসপি। অনেক ভেবেচিন্তে ছবি করতে হবে এখন, লোকে যাতে হলে গিয়ে ছবি দেখে। ‘চ্যাম্প’ কিন্তু আমার একটা বড় সাহসী পদক্ষেপ। আশা করি লোকে আমায় সাপোর্ট করবে। আর শুধু ক্রিকেট নয়, বক্সিং এর মতো একটা গুরুত্বপূর্ণ খেলাকে আমি প্রমোট করছি, ছবিটা ট্যাক্স ফ্রিও হয়েছে তাই।

প্র: এত কিছুর পরও বছরে একটা দুটো বাংলা ছবি হিট!

উ: মুম্বইয়ে গত বছর ‘পিঙ্ক’, ‘সুলতান’ আর ‘দঙ্গল’ হিট করেছে। টলিউডের তুলনায় বলিউডে ছবি, কাজ, সিনেমা হল অনেক বেশি। আসলে দর্শক মোবাইলে ছবি দেখে, ইউটিউবে ওয়ার্ল্ড সিনেমা দেখে।

প্র: তা হলে?

উ: এমন কনটেন্ট তৈরি করতে হবে যার ট্রেলার দেখে লোকে গ্রুপ বুকিং করে পপকর্ন খেতে খেতে দেখবে। যেমন ‘বাহুবলী’। আরে আমাদের পশ্চিমবঙ্গই প্রায় ২০ কোটির ব্যবসা দিয়েছে ওই ছবিকে। আমি যদি এখানে ১২ কোটিও পেতাম বাংলা ছবিতে ইতিহাস তৈরি করে দিতাম। আমি, রাজ, বিরসা সকলেই কনটেন্ট নিয়ে ভাবছি।

প্র: কী ভাবছেন?

উ: আমি বছরে দুটো ছবি প্রযোজনা করব। ‘বিনয়-বাদল-দীনেশ’ আমার পরের ছবি। মুম্বইয়ে লোকে ভগৎ সিংহকে নিয়ে কতগুলো ছবি করে ফেলল। আমরা নেতাজীকে নিয়ে একটা ছবি করতে পারি না!

প্র: শিবপ্রসাদের সঙ্গে না কি ঝামেলা ছিল?

উ: ও ঝামেলা মিটে গেছে। শিবু ভাল পরিচালক। শিবপ্রসাদ-নন্দিতারও লড়াই আছে। আমি জানি ভাল কোনও চরিত্র হলে শিবু আমায় বলবে।

প্র: দু’বছরে কী শিখলেন?

উ: হেভিওয়েট বক্সারের জীবনের ঘাত-প্রতিঘাত তো নায়কেরও জীবনের কাহিনি! তাকেও তো রিংয়ের মধ্যে লড়াই করতে হয়। কখনও সে জেতে। কখনও তার গা বেয়ে অঝোরে রক্ত ঝরে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Celebrity Interview Dev দেব Chaamp
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE