দেব।
প্র: দেব কি রেগে আছেন?
উ: (অবাক হয়ে) রেগে! না না না। আমি তো ভীষণ চিল্ড আউট।
প্র: মানে, ‘ককপিট’-এর ট্রেলার নিয়ে প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের টুইটেও আপনি রেগে যাননি?
উ: প্রযোজক হিসেবে একটা অন্য রকম ছবি দিতে চেয়েছি। তাই চেয়েছিলাম ‘ককপিট’ যাতে সেরা প্রোমোশন পায়। সেটাই করেছিলাম। কিন্তু ট্রেলারে ওকে দেখানোয় বুম্বাদার খারাপ লেগেছে। আমাকে মেসেজও করেছিল। আমি বলেছিলাম, সন্ধে পর্যন্ত সময় দাও। ট্রেলারের শুরুতে আমার বাবার নাম ছিল আর শেষে বুম্বাদা, যাকে আমি গুরুর মতো মনে করি। সেই সম্মানটা দিতে চেয়েছিলাম। এটা বোধহয় বুম্বাদা ছাড়া আর সবাইকে বোঝাতে পেরেছি। যাক গে, বুম্বাদা না বুঝলে আমাকেই পাল্টাতে হবে। তবে আমাদের সম্পর্ক এতে খারাপ হয়নি। এই একটা ছবি তো আমার সঙ্গে বুম্বাদার সম্পর্ক ডিসাইড করবে না।
প্র: বাংলা ছবির খারাপ বাজারে ফের প্রযোজক হওয়ার ঝুঁকি নিলেন?
উ: আমি কিন্তু ঝুঁকি বলি না। এটা দর্শকের উপর ইনভেস্টমেন্ট। অনলাইনের যুগে সকলে ভাল সিনেমা দেখেন। তাদের বোকা বানানো যাবে না। এখন কিন্তু আর ‘পাগলু’ চলবে না। আমি তো কারও সঙ্গে পাঙ্গা নিতে আসিনি। একটা কনটেন্টওয়ালা ছবি করতে চেয়েছি। মুম্বই থেকে গ্রাফিক্সের কাজ করিয়েছি, যারা ‘অবতার’, ‘বাহুবলী’র গ্রাফিক্স করেছে। টাকার অঙ্ক শুনলে পাগল হয়ে যাবেন! তবু আমি করেছি। হলিউডের ছবি দেখে যে থ্রিলটা পাই, চেয়েছিলাম বাংলা ছবিতেও দর্শককে তা দিতে। বিশ্ব সিনেমা ফোর্থ গিয়ারে চলছে, আর আমরা সেকেন্ড গিয়ারেই খুশি! সেটা আমার না-পসন্দ।
প্র: তার পরেও তো পুজোয় একসঙ্গে এত ছবি। আপনার খারাপ লেগেছে?
উ: প্রথম কথা, খারাপ লাগলে, কারও কিচ্ছু যায় আসে না। আমি তো ‘ধূমকেতু’ নিয়ে প্রযোজকদের কাছে গিয়ে ভিক্ষে চেয়েছি। কেউ প্রোডিউস করতে চায়নি। ‘চ্যাম্প’ও কেউ প্রোডিউস করতে চায়নি। তাই বাধ্য হয়েই প্রযোজক হলাম। সবাই বলত, চলবে না। আরে কোনটা চলবে, আর কোনটা চলবে না, সেটা কে বলতে পারে। অনেকে তো বলত, দেবের মতো গামবাট ছেলের ছবি চলবে না! আমি দর্শককে অন্য রকম অভিজ্ঞতা দিতে চেয়েছি। চললে ভাল, না চললে পরের পুজোতে কোনও একটা পার্ট টু করে নেব। আমার কাছে প্ল্যান তো আছে, ফান্ডিংটাই যা নেই। বুম্বাদা আর কোয়েল খুব সাহায্য করেছে। ওরা টাকা নেয়নি। সেই টাকাটা আমি গ্রাফিক্সে খরচা করতে পেরেছি। প্রথম বার প্রযোজনা করতে গিয়ে দেখেছি, অনেক হলে আমার হোর্ডিং লাগেনি। গেমগুলো এ বার বুঝে গিয়েছি।
প্র: হল পাওয়া নিয়ে চিন্তিত?
উ: আমার ভয় হচ্ছে, আমি কি আদৌ হল পাব? শুধু বড় হাউজের ছবি রিলিজ আছে বলে নয়। অনেক ক’টা ছবি রিলিজ করছে বলে। এই তো গুজব রটেছে, আমি নাকি শিবুকে (শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়) হল দিচ্ছি না। ফোন করে ওকে বললাম, আমি এখনও হলের জন্য ফোন করাই শুরু করিনি। আরে একটা ছবি কারও কেরিয়ার ডিসাইড করে না।
প্র: আপনার ছবিতে এখন আর নাচ থাকছে না যে...
উ: আসছি আসছি। নিয়ে আসছি ‘ককপিট’-এ। নাচ ছাড়া দেব পারে না। যেগুলো করছিলাম, ভাল লাগছিল না। নতুন কনটেন্ট নেই। লার্জার দ্যান লাইফ চরিত্র নেই। হিন্দিতেও যে ক’টা ছবি চলেছে, দেখুন সব ক’টা কনটেন্ট নির্ভর। বোকা বাক্সের সামনে থেকে দর্শকদের তুলে এনে হলে ঢোকাতে চাইলে, ভাল ছবি দিতে হবে বস।
প্র: সোশ্যাল মিডিয়ায় তো আপনার নামে কুৎসার ছড়াছড়ি। আপনাকে নিয়ে ঠাট্টা করে পোস্ট করা হয়...
উ: কেনই বা করবে না? একটা ছেলে যা-ই করছে, তার প্রশংসা করতে হবে কেন! দুনিয়া জিততে হলে পজিটিভ-নেগেটিভ দুটোকেই জিততে হবে। অনেস্টলি বলছি, এগুলো আমাকে প্রভাবিত করে না। আমার সঙ্গে জিতের তো কোনও প্রতিযোগিতাই নেই। আমি যে কাজ করি, তার ধারেকাছে জিৎকে দেখতে পাচ্ছি না। জিৎও যে ধরনের কাজ করে, তার ধারেকাছে আমাকে দেখতে পাচ্ছে না। অন্যের কথা শুনে তো আমি আমার জীবন চালাব না। যদি বলি, এগুলো অ্যাফেক্ট করে না, তা হলে ভুল বলা হবে। বুম্বাদার টুইট অবশ্যই হার্ট করেছিল। কিন্তু পরে ভেবেছি, আমারই ভুল ছিল।
আরও পড়ুন:‘আমার জীবনে ও অনেকটা নোঙরের মতো’
প্র: এত ব্যস্ততায় রুক্মিণী কী বলছেন?
উ: (হেসে) সব ক’টা ছবিতেই তো ও আছে, তাই কিছু বলছে না। ও তো দেখতে পাচ্ছে স্ট্রাগলটা। এই তো কাল সারারাত ঘুমাইনি। বলল, বেশি চিন্তা করো না, ঘুমিয়ে পড়ো। ফোন করে আবার মাকে বলেছে। মা ফোন করে কি বকা না ঘুমানোর জন্য!
প্র: মা বিয়ের জন্য বকছেন না?
উ: বলে গো। সেলিব্রিটির লাইফ তো ডিফিকাল্ট। সেটা ওরাও বোঝে। এমনিই কাজের মধ্যে ব্যস্ত। তার উপর বিয়ে-ফিয়ে করলে বউয়ের কাছে বকা খাব, কেন ঘরে থাকছি না...
প্র: কেন পাত্রী তো সেটেই থাকছেন?
উ: দেখুন, রুক্মিণী কিন্তু ছবিতে থাকছে ওর জন্যই। আমি চাই লোকে ওকে হিরোইন হিসেবেই জানুক। দেবের বান্ধবী বা গার্লফ্রেন্ড হিসেবে নয়।
প্র: পরের প্ল্যান কী?
উ: ‘কবীর’ আর ‘বিনয় বাদল দীনেশ’ তো আছেই। আরও দুটো ছবি আছে, যেটা আমি লিখছি।
প্র: মানে, আর কখনও ‘পাগলু’র মতো ছবি করবেন না?
উ: অফকোর্স করব। সবাইকে বলছি, ছবিতে এ বার আমাকে একটু হাসতে দে। প্লিজ, একটা রিমেক দে। এত রিয়েল স্টোরি থেকে ছবি করছি, আমিই যেন নিজেই স্টোরি হয়ে যাচ্ছি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy