Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

আমার টাকা আমার টিম, রুক্মিণীকে নিয়ে অন্যদের কথা কেন শুনব?

ছবি মুক্তির আগে দেব এ বার অনেক রিল্যাক্সড। কেন? মন খুললেন আনন্দ প্লাসের কাছে ছবি মুক্তির আগে দেব এ বার অনেক রিল্যাক্সড। কেন? মন খুললেন আনন্দ প্লাসের কাছে

দেব। ছবি: আশিস সাহা।

দেব। ছবি: আশিস সাহা।

পারমিতা সাহা
শেষ আপডেট: ০২ অক্টোবর ২০১৮ ০০:১১
Share: Save:

প্র: শেষ দুটো ছবি মুক্তির আগে আপনাকে ভীষণ অস্থির দেখেছিলাম। বলেছিলেন, পরপর রাতে ঘুম নেই। এ বার কিন্তু অনেকটা রিল্যাক্সড লাগছে...

উ: হ্যাঁ। কারণ আমি যা-যা ভেবেছিলাম, এ বার তাই-তাই হচ্ছে। টুইটারে কেউ কিছু লিখবে, হল মালিকরা কী বলবে... তিনটে ছবি করার পর বুঝতে পেরে গিয়েছি কী কী হতে পারে। মুশকিলটা হচ্ছে, সবাই এক ফরম্যাটে কাজ করে। আমার এই ছকটা বোঝা দরকার ছিল। যেহেতু আমি আর কোনও ছবি হাতে নিইনি, তাই অনেকটা সময় ছিল প্ল্যান করার। আগের বার পুজোর সময় আমার ছবির (পড়ুন ‘ককপিট’) হোর্ডিং নামিয়ে দেওয়া হয়। শো হাউসফুল হওয়া সত্ত্বেও ছবি সরিয়ে দেওয়া হয়। শো টাইম ছিল রাত ১১টায়! তখন হতাশ লাগত। মনে হয়েছিল কী করছি আমি! তবে এ বারও লড়াইটা জোরদার হবে। দেখা যাক!

প্র: আবার হল পাওয়া নিয়ে সমস্যা? পুজোর সময় এত ছবির মুক্তি!

উ: অবশ্যই। আমাকে মুখের উপরে এসে বলে গিয়েছে, হল দেবে না।

প্র: তাঁরা কে বা কারা?

উ: নর্থ কলকাতার নামকরা হল মালিক। উত্তর কলকাতায় এখনও আমার কাছে কোনও হল নেই। তিন-তিনটে হল আছে, কিন্তু আমাকে শো দেওয়া হচ্ছে না। একে-তাকে ফোন করতে বলা হয়েছিল। জনৈক হল মালিক বললেন, তিনি তিনটে ছবি নিয়েছেন। তার মধ্যে একটা হিন্দি। বললাম, হিন্দি ছবিটা নিলেন কেন, আমার তো এক বছর আগে থেকে বলা। উত্তর এল, ‘নিয়ে নিয়েছি। এখন দেখো তুমি কী করতে পারো!’ এ রকম অ্যাটিটিউড। এর পর তো শো-টাইম নিয়েও লড়তে হবে। তবে আমার প্রথম লক্ষ্য ছবির কনটেন্ট। ছবিটা নিয়ে যেন দর্শকের মধ্যে আগ্রহ তৈরি হয়। তার পরেও যদি শো টাইম না দেয়, তা হলে আবার লড়তে হবে। তার পর ছবিটা না চললে কিছু করার নেই। অনেক ছবিই আছে ভাল শো টাইম পেয়েও চলেনি। শুধু শুধু লোককে দোষ দিয়ে তো লাভ নেই। তবে লোকে যখন মুখের উপরে এসে বলে যায় হল দেব না, তখন কষ্ট হয়!

প্র: ‘হইচই... ’-এর জন্য তো একটা সময়ে নায়িকা পাচ্ছিলেন না! ইন্ডাস্ট্রিতে এত শত্রু বাড়ালেন কী ভাবে?

উ: তার মানে আমি নিশ্চয়ই উন্নতি করছি। কতটা সাকসেসফুল হতে পারলাম, সেটা তো নির্ভর করে শত্রুর সংখ্যার উপরে (হেসে)!

আরও পড়ুন: ‘আমার জীবনের সঙ্গে অন্যরাও জড়িয়ে, তাঁদের দুঃখ দিয়ে লিখতে চাই না’

প্র: ‘কবীর’ ছিল আপনার সবচেয়ে অ্যাম্বিশাস প্রজেক্ট। কী কারণে ব্যর্থ হল বলে মনে হয়?

উ: এর কোনও ব্যাখ্যাই আমার কাছে নেই। কাদা ছুড়লে তা গায়ে এসে লাগে। কিছু মানুষ আমার সব ছবির পিছনে পড়ে যাচ্ছে, এটা অন্যায়। খুব চেষ্টা করছি জানেন। কোন নতুন বিষয় নিয়ে ছবি বানানো যায়, কী ভাবে কত বেশি সংখ্যক মানুষের কাছে পৌঁছনো যায়... টিকিট বুকিংয়ের অনলাইন সাইটেও ‘কবীর’-এর নাম দেখাচ্ছিল না... আমি জানি না কেন... (কিছুক্ষণ ভেবে) খুঁজতে গেলে তো নিজের লোকদেরই খুঁজে পাই। তার পরে মনে হয়, যখন এ শহরে এসে শুরু করেছিলাম, তখনও তো প্রচুর লড়াই করতে হয়েছিল। আবার শূন্য থেকে শুরু করেছি। তিনটে ছবির পরে নিজের কোম্পানির নামটাকে তো অন্তত চেনাতে পেরেছি। অনেকেই তো চেষ্টা করছে আলাদা ভাবে দাঁড়াতে। ওই সাহসটা খুব দরকার।

প্র: এতটা লড়াই করার সাহস কোথা থেকে পান?

উ: কারণ আমার হারার ভয় নেই। চারটে চার রকম ছবি করেছি। সে ছবি কারও ভাল না-ও লাগতে পারে। কিন্তু আমার চেষ্টাটা ইগনোর করতে পারবে না।

প্র: উজবেকিস্তানে শুটিংয়ের সময় রুক্মিণীও আপনার সঙ্গে গিয়েছিলেন। নিন্দুকরা বলে, রুক্মিণী আপনাকে পাহারা দিতে গিয়েছিলেন...

উ: নিন্দুকরা তো অনেক কিছুই বলে। তারা তো ‘হইচই...’কে পাকিস্তানি ছবির রিমেকও বলে। কোন কথাটা শুনব! আমার ছবি, আমার টাকা, আমার টিম, তাদের যদি রুক্মিণীকে নিয়ে আপত্তি না থাকে, তা হলে অন্যের কথা কেন ভাবতে যাব? গত ছ’বছর ধরে আমরা ডেট করছি। আর রুক্মিণী তো এটা প্রথম বার আমার সঙ্গে আউটডোরে যায়নি। আমার সব নায়িকাই ওকে সেটে দেখেছে।

আরও পড়ুন: দেব কি ভাল বাংলা বলেন? উত্তরে সহ-অভিনেতা অর্ণ বললেন...

প্র: সুভাষিণী মিস্ত্রির বায়োপিক কতদূর এগোলো?

উ: আসলে কয়েকটা ব্যাপার নিয়ে অনিকেতদা’র (চট্টোপাধ্যায়) সঙ্গে একটু ঝামেলা চলছে, সেটা মিটলেই ছবি শুরু হবে। কমল’দার সঙ্গেও কথা চলছে, তবে সেটা ‘বিনয় বাদল দীনেশ’ না কি অন্য কোনও ছবি, ফেব্রুয়ারির মধ্যে ঠিক করে ফেলব। উই আর থিঙ্কিং সামথিং ভেরি বিগ।

প্র: এক দিকে এসভিএফ আপনার সবচেয়ে বড় প্রতিদ্বন্দ্বী, অন্য দিকে তাঁদের ব্যানারে ছবি করতে আপত্তি নেই বলছেন। সেই কাজে একশো শতাংশ দেওয়া সম্ভব?

উ: (কিছুক্ষণ ভেবে) আমার মনে হয় এসভিএফও এ রকমই ভাবে। ধরে নিলাম আমরা পরস্পরের শত্রু। ঘৃণা করি, হিংসে করি। আবার এটাও সত্যি, এত বছরে ভেঙ্কটেশের সামনে দাঁড়ানোর মতো লোক কিন্তু আসেনি। আজ যদি আমি ওদের বলি, দশ কোটি টাকা লাগবে একটা ছবি প্রোডিউস করতে। কালই ওরা আমাকে চেক পাঠিয়ে দেবে। একটা প্রশ্নও করবে না। ওরা জানে এটা দেবের পিছনে খরচ করা যায় এবং দেবই একমাত্র হিরো, যে তার দায়িত্ব নিতে পারবে। উল্টো দিকটা ভাবুন। ওরাও ভাবছে, এত কিছুর পরেও আমরা দেবের মতো আর এক জনকে দাঁড় করাতে পারলাম না। এমন নয় যে, দে ওয়ান্ট দেব অর আই ওয়ান্ট ভেঙ্কটেশ। আমরা উভয়েই পরস্পরকে চাই ইন্ডাস্ট্রির উন্নতির জন্য। আমার সঙ্গে ওদের বনিবনা না হতেই পারে। সেটা আমাদের ব্যক্তিগত সমস্যা। আমার ছবিকে কেউ ছোট করলে আমি তার বিরুদ্ধে যাব। কিন্তু তার মানে এটাও নয়, শ্রীকান্তর (মোহতা) প্রধান শত্রু দেব। ইন্ডাস্ট্রির ভালর জন্য কোথাও দেব এবং শ্রীকান্তকে এক হতে হবে। সেটা হতে পারছে না, কারণ আমি ভাল স্ক্রিপ্ট পাইনি।

প্র: বিয়ের কথা কী ভাবছেন?

উ: (প্রবল হেসে) শ্রীকান্ত মোহতাই মাথা থেকে নামছে না! আমার স্বপ্নে এখন শুধুই এসভিএফ, আইনক্স, অ্যাক্রোপলিস, নর্থ কলকাতার সিনেমা হল... বিয়ের কথা পরে ভাবব (হেসে)!

লোকেশন সৌজন্য: সুইসোতেল, রাজারহাট

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Dev Tollywood দেব টলিউড
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE