Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

‘অভিনেত্রীর জীবনে গুজব আর বিতর্ক থাকবেই’

কেরিয়ারের চড়াই-উতরাই থেকে যাবতীয় গুঞ্জন সব কিছু নিয়ে সোজাসাপ্টা নুসরত জাহান কেরিয়ারের চড়াই-উতরাই থেকে যাবতীয় গুঞ্জন সব কিছু নিয়ে সোজাসাপ্টা নুসরত জাহান

নুসরত

নুসরত

দীপান্বিতা মুখোপাধ্যায় ঘোষ
শেষ আপডেট: ০১ অগস্ট ২০১৮ ০০:০০
Share: Save:

প্র: অস্ট্রেলিয়া সফর কেমন হল?

উ: ওহ্ দারুণ! অনেক ধরনের অ্যাডভেঞ্চার স্পোর্টস করেছি। সার্ফিং করলাম। মানে দু’দিনে শিখে যতটা করা যায় আর কী। ওখানকার শুটিং অ্যাকাডেমিতে সত্যিকারের বন্দুক নিয়ে শুট করেছি! দু’বার বুল্‌স আই করতে পেরেছি (কাঁচুমাচু মুখে)। চোখে পাওয়ার নিয়ে এটাই অসাধ্য সাধন মনে হয়েছে।

প্র: আর একটা অসাধ্য সাধনও তো করে ফেলেছেন। ‘ক্রিসক্রস’-এর সেটে পাঁচজন মেয়ে থাকা সত্ত্বেও নাকি ফায়ার ব্রিগেড ডাকতে হয়নি!

উ: আসলে আমরা ইচ্ছে করে লোকজনকে বিরক্ত করি। ওই শয়তানিগুলো এখানে করলে ছবিটাই হতো না। বিরসা পাগল হয়ে যেত। তাই ওকে আমরা এ বারের মতো ছেড়ে দিয়েছি (হাসি)! তবে পাঁচ জন মেয়েকে কিন্তু দারুণ সামলেছে বিরসা।

প্র: পাঁচ জন নায়িকা আছে, এমন ছবি আপনি বাছলেন কেন?

উ: প্রথমে একটু থমকে ছিলাম। মনে হয়েছিল, পাঁচটা মেয়ের গল্পে আমি আর মিমি কী করব! স্ক্রিপ্ট শোনার পর মনে হল, এর চেয়ে ভাল চরিত্র আমার জন্য হতেই পারে না। মেহেরের চরিত্রটা রিলেট করতে পারলাম। আমিও মেহেরের মতো নন কম্প্রোমাইজ়িং পার্সন। কোনও কিছুর জন্য নিজের আর্দশকে বিসর্জন দেব না। তার জন্য হয়তো আমাকে অনেক ভাঙতে হয়েছে, লড়তে হয়েছে। বাট আই ডিড নট গিভ আপ।

প্র: অঁসম্বল কাস্টের ছবিতে কিন্তু ফোকাস অন্যের উপর চলে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

উ: চিত্রনাট্যে আমার জন্য ক’টা পাতা আছে, এটা ভাবলে আর পারফর্ম করতে পারব না। মনে হয় না, ‘ক্রিসক্রস’-এর অন্য কোনও অভিনেত্রীও জায়গা কম-বেশি নিয়ে অভিযোগ করবে। লাইমলাইট নিয়ে ভাবলে এতগুলো ছবি আজ পর্যন্ত করতে পারতাম না। আমি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগি না।

আরও পড়ুন: মলাট চরিত্রে সুযোগ তো পাই না

প্র: ‘শক্রু’র নুসরতের সঙ্গে আজকের আপনার কতটা তফাত?

উ: আগের চেয়ে অনেক বেশি ম্যাচিয়োরড হয়েছি।

প্র: সেটা কি আপনি বরাবরই ছিলেন না?

উ: মানুষের ম্যাচিয়োরিটি বোঝা যায় তার সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা দেখে। একটু কায়দা করে কথা বলা বা স্মার্ট হাবভাবে লোকে হয়তো মনে করে, মেয়েটা খুব ম্যাচিয়োরড। তা কিন্তু নয়। আমাকে নিয়ে লোকের কত ভুল ধারণার কথা যে শুনেছি!

প্র: নিজের সম্পর্কে কোন জিনিসটা শুনে সবেচেয়ে বেশি রিঅ্যাক্ট করেছেন?

উ: অ্যাই অ্যাম ডেটিং শ্রীকান্ত মোহতা। এর চেয়ে বেশি হাস্যকর কিছু নেই! আমার মা জিজ্ঞেস করছে, এ সব কী লেখা হয়েছে? আমি বললাম, এর চেয়ে বড় ঠাট্টা আর হয় না।

প্র: আপনার সম্পর্কে অনেক কিছু শোনা যায়। একে একে জিজ্ঞেস করি বরং। আপনি বিবাহিত, এটাও বলা হয়।

উ: আমি বিয়ে করলে সকলে জানতে পারবেন। অভিনেত্রী বলে সম্পর্ক গোপন করব না। যার সঙ্গে অনেক দিন ধরে সম্পর্কে আছি, তাকেই বিয়ে করব। যারা বলছে, আমি বিবাহিত, তারা প্রমাণ দিক। আর কিছু না পারুক, বিয়ের জন্য আমাকে ট্রিট অন্তত দিক (হাসি)!

প্র: এসভিএফ-এর অনেক সিদ্ধান্ত আপনি নেন। এ ভাবেই অধিকাংশ ছবিতে শুধুই নুসরত থাকছেন?

উ: এটা কখনও সত্যি হতে পারে! দেখান তো, কোথায় আমি সব ছবিতে থাকি? এত বড় একটা কোম্পানি। এত কাজ হচ্ছে। সব ছবিতে আমার পক্ষে থাকা সম্ভব? যে ছবিতে মানায়, শুধু সেখানেই কাজ করি।

প্র: ইলেকশনে দাঁড়াচ্ছেন?

উ: এ ব্যাপারে কোনও ধারণা নেই।

প্র: নুসরত ধর্মান্তরিত হয়েছেন বলেও শোনা যায়।

উ: এটা কী বলব বলুন তো! উল্টোরথের দিন জগন্নাথের রথের দড়ি প্রত্যেক বার আমি টানি। এ বার অস্ট্রেলিয়ায় ছিলাম বলে যেতে পারিনি। রথের সময়ের ওই ছবি দিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় অনেক দিন ধরে বলা হচ্ছে, আমি ধর্মান্তরিত হয়েছি। আমার বাড়িতে মন্দির আছে। তার মানে আমি মুসলমান নই, তা তো নয়। আমি সেকুলার। কোনও ধর্মকে আঘাত দিতে পারব না।

প্র: আপনি কোনও পদক্ষেপ করেননি কেন?

উ: করে কী হবে! অভিনেত্রীর জীবনে গুজব আর বিতর্ক থাকবে, এটা সাফ বুঝে গিয়েছি। ক’জন লোকের মুখ বন্ধ করব? আমি এই ইন্ডাস্ট্রির একমাত্র শিল্পী, যে সবচেয়ে বেশি ট্রোলড হয়েছে। আগে খারাপ লাগত, এখন মানিয়ে নিয়েছি। যারা ট্রোল করে, তারা আমাকে বিচার করার কে? ‘ক্রিসক্রস’-এ মেহেরও যেমন প্রত্যেক দিন জাজ্‌়়ড হয়।

প্র: এটা কি মেয়েদেরই বেশি সহ্য করতে হয়?

উ: হ্যাঁ। কারণ, এখনও আমাদের সমাজ পুরুষশাসিত। আমি আন্তর্জাতিক মহিলা দিবসও পালন করি না। ওই এক দিনের জন্য যত বড় বড় কথা। বাকি সব দিন নিজের কাজের জন্য ক্রমাগত জবাবদিহি করতে হবে। সোশ্যাল মিডিয়ায় কোনও ছবি দিলে কত নোংরা মন্তব্য আসে! আসলে দেখার চোখটাই খারাপ। এখন তো এদের ব্লক করাও ছেড়ে দিয়েছি। কথাগুলো পড়লে কী মন খারাপ হয়ে যেত, কান্না পেত! এখন ভাবি, যাকে চিনি না, তার কথায় কী এসে যায়।

প্র: আবেগকে নিয়ন্ত্রণ করে ফেলেছেন?

উ: ঠিক তাই। অনেক দিন হয়ে গেল আর কোনও কিছুতে কান্না পায় না। খুব অ্যাবনর্মাল কিন্তু এটা! এ দিকে আমি সিনেমা দেখে, বই প়ড়ে কাঁদি। আসলে আমরা ইমোশনাল হয়ে অনেক ভুল সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলি। আবেগশূন্য হয়ে যাওয়ার কথা বলছি না। কিন্তু নিজের আবেগকে ঠিক দিকে চালিত করতে হবে। নইলে কষ্ট বাড়বে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Nusrat Jahan Indian film actress
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE