Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

'মিউজিক কম্পোজার হতে চাই'

গায়িকা থেকে নিজেকে এ বার অন্য দিকে মেলে ধরতে চান অন্বেষা। আনন্দ প্লাসের আড্ডা।গায়িকা থেকে নিজেকে এ বার অন্য দিকে মেলে ধরতে চান অন্বেষা। আনন্দ প্লাসের আড্ডা।

অন্বেষা

অন্বেষা

ঈপ্সিতা বসু
শেষ আপডেট: ০৯ মে ২০১৮ ১৩:১৭
Share: Save:

মনে পড়ে ‘জ্বলতে দিয়া’ (প্রেম রতন ধন পায়ো) গানটি অথবা ‘বোঝে না সে বোঝে না’র ফিমেল টাইটেল ট্র্যাক? কিংবা ‘বনারসিয়া’ (রাঞ্ঝনা), ‘মন বাওরে’ (কানামাছি)...শুনেই গুনগুনিয়ে উঠলেন নাকি! সব ক’টি গান সমান জনপ্রিয় আজও! কিন্তু আমরা কি জানি, সব গানের প্লেব্যাক শিল্পী এক জনই! তিনি হলেন অন্বেষা দত্তগুপ্ত। যদিও পদবি ব্যবহার করেন না।

কোঁকড়ানো চুলের মিষ্টি মেয়েটির প্লেব্যাকে হাতেখড়ি ‘সা রে গা মা’র ছোটদের রিয়্যালিটি শোয়ে। তার পর সোজা পাড়ি মুম্বইয়ে। ওখানে বেশ কয়েকটি রিয়্যালিটি শোয়ে পারফর্ম করতে করতেই সুযোগ এসেছিল ‘গোলমাল রিটার্নস’ ছবিতে ‘থা কারকে...’ গানটির। প্রথম গানই তুমুল হিট। নজরে পড়লেন তাবড় সঙ্গীত পরিচালকের। মুকুটে পালক জুড়ল বেশ কয়েকটি বাংলা ও হিন্দি ছবির প্লেব্যাক... ‘রোশনি এলো’ (প্রলয়), ‘আজ আমায়’ (পাওয়ার), ‘সারাটা দিন’ (যোদ্ধা), ‘জিনা মরনা’ (দো লফ‌জ়োঁ কী কহানি) ও আরও অনেক। এ ছাড়াও ভোজপুরি, পঞ্জাবি, মরাঠি, নেপালি, গুজরাতি, তামিল, তেলুগু ও আরও নানা ভারতীয় ভাষায় প্লেব্যাক করার সুযোগ। ‘আই অ্যাম বান্নি’, ‘মি টু’, ‘জিনিয়াস’ মুক্তির অপেক্ষায়, আরও এক বার অন্বেষাকে শুনতে পাবেন শ্রোতারা।

দেখতে দেখতে দশ বছরেরও বেশি হল অন্বেষার ইন্ডাস্ট্রিতে। সাফল্য এলেও যতটা ভেবেছিলেন, ততটা কি পেয়েছেন? ‘‘আমার কাছে সাফল্য পাওয়া মানে টিকে থাকা। একটা গান একটা বছরে গোটা বাজার খেয়ে ফেলল। কিন্তু পরের বছর আমার কোনও গান শোনার মতোই হল না। এমন সাফল্যের আমার দরকার নেই। কেরিয়ারে ওঠা-নামা ছিল, কিন্তু কখনওই থমকে যাইনি। অনেক সমসাময়িক হারিয়ে গিয়েছেন। তাই টিকে থাকাটাই আসল কথা। ধীরে ধীরে এখন যেমন চলছে, ভবিষ্যতেও তেমনটাই চলুক,’’এক নিঃশ্বাসে বললেন অন্বেষা।

‘কুয়াশা যখন’ ছবিতে একটি মিষ্টি প্রেমের গান রেকর্ড করছিলেন তিনি। তার ফাঁকেই সাক্ষাৎকার চলছিল। তখনই জানালেন, ছবিতে প্লেব্যাক করার কথা।

গল্ফগ্রিনে ছেলেবেলা কাটলেও আপাতত তিনি মুম্বইবাসী। মা-বাবাও থাকেন একমাত্র কন্যার সঙ্গে। সবে মাত্র মুম্বইয়ে তাঁর গাওয়া ‘দুশওয়ারি’র মিউজ়িক ভিডিয়ো মুক্তি পেয়েছে। প্লেব্যাকের পাশাপাশি সিঙ্গল নিয়েই কাজ করতে অন্বেষা এখন বেশি উৎসাহী। নিজেই মিউজ়িক কম্পোজ় করেছেন ‘কাগজের নৌকো’ সিঙ্গল ভিডিয়োটির। তাই লক্ষ্য এখন মিউজ়িক কম্পোজ়ার হওয়া। ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে নিজের লেখা কথা ও সুর নিয়ে ভাল ভাল কাজের স্বপ্ন সার্থক করতেই অন্বেষা ভেঙেচুরে তৈরি করছেন নিজেকে...

তা হলে কি গায়িকা হিসেবে অন্বেষার সেরাটা পেয়ে গিয়েছেন শ্রোতা? ‘‘অনেক গান আছে, সে সময় মনে হয়েছিল, আমি আমার সেরাটা দিয়েছি। কিন্তু এখন গাইতে পারলে মনে হতো আরও অনেক ভাল গাইতাম।’’ কষ্ট শুধু এটুকুই নয়, এ আর রহমান, ইসমাইল দরবার প্রমুখ সঙ্গীত পরিচালকের সঙ্গে কাজ করা হয়ে থাকলেও বিশাল-শেখর বা সেলিম-সুলেমানের সঙ্গে কাজ না হওয়ার আক্ষেপ রয়েছে।

স্বভাবে ‘মজার’ হলেও কথাবার্তায় কিন্তু তিনি বেশ স্পষ্টবাদী। ‘আপসে’ তিনি যেমন রাজি নন, তেমন নিরাপত্তাহীনতায় ভোগেন না। কেরিয়ারগ্রাফের ওঠানামা অন্বেষার চলমান জীবনকে কোনও ভাবেই প্রভাবিত করে না। ‘‘কাজ করতে ভালবাসি। কিন্তু কাজটাই আমার কাছে জীবনের সব কিছু নয়,’’ এমনটাই মত তাঁর। জীবনের ওঠানামাকে সহজ ভাবে দেখলেও গায়িকা জানেন, ইন্ডাস্ট্রিতে বন্ধু পাওয়াটা সহজ নয়। তবে স্টেটাস ‘সিঙ্গল’ কি নার উত্তরে বললেন, ‘‘বলা মুশকিল!’’ যদিও বেস্ট ফ্রেন্ড এখনও তাঁর মা-ই। কাজ প্রথম প্রেম হলেও রেডিয়ো অন্বেষার আর একটি প্রেম। আর প্রতিটা দিন কিছুটা সময় বার করেন বই পড়ার জন্য। বাংলায় শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় প্রিয় ঔপন্যাসিক আর থ্রিলার তাঁর পছন্দের বিষয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE