প্রসেনজিৎ।ছবি: নিরুপম দত্ত
প্র: প্রযোজকের দায়িত্ব কতটা কঠিন?
উ: প্রযোজকের ভূমিকায় নিজেকে দেখি না আসলে। আমার পঁয়ত্রিশ বছরের অভিজ্ঞতাকে অন্য ভাবে ব্যবহার করছি বলতে পারেন। প্রাথমিক উদ্দেশ্য ভাল কনটেন্ট তৈরি করা এবং নতুন পরিচালক, অভিনেতা তুলে নিয়ে আসা। এখনও ছবি করতে গেলে টাকার কথা ভাবি না। জানি, ওটা ঠিক এসে যাবে।
প্র: প্রযোজক হিসেবে টাকা জরুরি নয় বলছেন?
উ: টাকা নিঃসন্দেহে জরুরি। একটা সংগঠন চালাতে গেলে টাকা লাগে। ছবির ব্যবসা এবং কনটেন্টের ব্যালান্স কী ভাবে করতে হয়, সেটা বুঝি বলেই এই দায়িত্বটা নিয়েছি। শুধু অভিনয় আমাকে স্যাটিসফ্যাকশন দেয় না। বছরে দুটো-তিনটে ছবিতে অভিনয় করি। বাকি সময়টা কনটেন্ট ভিত্তিক ছবি তৈরির দিকে মন দিই। খুব বড় বাজেটের ছবি হবে না সেগুলো। কিন্তু আলোচনা হবে। ‘উড়নচণ্ডী’ হয়তো বক্স অফিসে ভাল ফল করেনি। কিন্তু গত বছর যে ক’টা ভাল ছবি এসেছিল, তার মধ্যে ‘উড়নচণ্ডী’র নাম থাকবে। আমি নিশ্চিত, বাঙালিরা ‘মহালয়া’ দেখবে।
প্র: কী ভেবে মার্চ মাসে ‘মহালয়া’ রিলিজ় করছেন?
উ: (হেসে) এ বার একটু কটু কথা বলি। দিন-ক্ষণ, পাঁজি দেখে যে ছবিগুলো আসছে, সেগুলো কি দারুণ ফল করছে? বা যেগুলো বক্স অফিসে বিশাল সফল হবে ভাবছি, সেগুলো কি তাই হচ্ছে? ছবিটা ভাল হতে হবে। অনেকে বলছে, ‘মহালয়া’ কেন পুজোয় আনলাম না। ‘মহালয়া’য় দুর্গাপুজোর কোনও শটই নেই। আমি ইতিহাসের গল্প বলছি। কিছু কিংবদন্তি মানুষের ভিতরের গল্প রয়েছে। বক্স অফিস আর কনটেন্টের ভারসাম্য আনতে গেলে আমাদের সমানে হ্যামার করতে হবে। বলিউড সেটা করতে পেরেছে বলেই ‘বধাই হো’ হিট করেছে। সিনেমার চেয়ে বড় আন্দোলন আর কিছু নেই।
প্র: দিন-ক্ষণের কথা বলছিলেন। আপনি পুজোয় ছবি রিলিজ় করেন কেন?
উ: কাকাবাবু করলে আমাকে পুজোয় আসতে হয়। ব্র্যান্ড প্রসেনজিৎ কিন্তু প্রযোজক প্রসেনজিতের চেয়ে আলাদা। ‘মহালয়া’ রিলিজ়ের দিন আমি চার বার পিছিয়েছি। কেন? কারণ, আমারই কোনও বন্ধু, কোনও কলিগ নয়তো কোনও ভাইয়ের ছবি ওই দিনে আসছিল। কিন্তু অভিনেতা প্রসেনজিৎ যখন আসে, তখন গোটা বিষয়টা আলাদা হয়ে যায়। ব্র্যান্ড প্রসেনজিতের জায়গায় আমি হিটলার। সেটা আমি যার ছবিই করি না কেন। খুব ভাল করে জানি, কোনটা বক্স অফিসের জন্য করছি, কোনটা সম্মানের জন্য করছি, কোনটা জাতীয় পুরস্কারের জন্য করছি। এটা নিয়ে আমার মধ্যে কোনও দ্বন্দ্ব নেই বলেই বক্স অফিসের ফলাফলে কষ্ট পাই না।
প্র: এত দিন ইন্ডাস্ট্রির ভরকেন্দ্রে শুধু ভেঙ্কটেশ ফিল্মস ছিল। সুরিন্দর এসে ভারসাম্যে বদল ঘটিয়েছে। আপনাকে বাকিরা জায়গা ছাড়বে?
উ: আমাকে কোনও দিনও এই পরিস্থিতির মধ্যে পড়তে হয়নি। সুরিন্দর-ভেঙ্কটেশ দু’জনের সঙ্গেই ছবি করছি। তেমন পরিস্থিতি হলে কথা বলে নিই।
প্র: আপনিই তো বলেছিলেন, ‘কিশোর কুমার জুনিয়র’ হল থেকে নামিয়ে দেওয়া হয়েছিল...
উ: ‘কিশোর কুমার...’-এর পারফরম্যান্স যদি কাকাবাবুর মতো হতো, তা হলে হয়তো সেটা ঘটত না। এটা পার্ট অব দি ইন্ডাস্ট্রি। আমি নিজের কনটেন্ট ভিড়ের মধ্যে ঠেলতে চাই না বলেই রিলিজ়ের দিন বদলে দিয়েছি। তবে যদি কোনও দিন বুঝি কেউ ক্ষতি করার চেষ্টা করছে, তা হলে প্রথমে বোঝাব। আর আমি বললে ওরা শুনবে না, এটা হয়নি। পুজো বা ক্রিসমাসের মতো প্রাইম টাইমে সকলে আসতে চায়। কিন্তু বাকি সময়গুলো নিয়ে সবাই সমঝোতা করছে।
প্র: আনন্দ প্লাসের সাক্ষাৎকারে সৃজিত মুখোপাধ্যায়ের ‘এক যে ছিল রাজা’ নিয়ে কিছু মন্তব্য করেছিলেন। সৃজিত পাল্টা মন্তব্য করেন। এ নিয়ে আপনি ওঁকে কিছু বলেননি?
উ: না। কী বলব!
প্র: আপনারা একসঙ্গে ‘গুমনামী’ এবং ‘কাকাবাবুর প্রত্যাবর্তন’ করছেন। তার মাঝে ওই কথাগুলো খারাপ লাগেনি?
উ: ছবি তো করছি। (একটু থেমে) ও কেন এগুলো করে আমি জানি। এ-ও জানতাম পরের দিন আমার কাছে ঠিক চলে আসবে। এসেও ছিল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy