Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
প্রথম ছবি মুক্তির আগেই বেশ আত্মবিশ্বাসী রাজনন্দিনী পাল

‘ভবিষ্যতে মাকে সকলে চিনুক আমার পরিচয়েই’

আগে পড়াশোনা, বন্ধুবান্ধবদের সঙ্গে হ্যাংআউট, পার্টি নিয়ে ব্যস্ত থাকতাম। এখন কাজ নিয়ে থাকি। তবে আমি কিন্তু বদলাইনি। ছোটবেলা থেকেই মায়ের সঙ্গে আমার ছবি কাগজে বেরিয়েছে।

রাজনন্দিনী, ছবি: অমিত দাস

রাজনন্দিনী, ছবি: অমিত দাস

স্বর্ণাভ দেব
শেষ আপডেট: ২৬ জানুয়ারি ২০১৮ ০০:০০
Share: Save:

এই মুহূর্তে তাঁকে টলিউডের অন্যতম সম্ভাবনাময় অভিনেত্রী বলে চিহ্নিত করা হচ্ছে। তবে অভিনয়ের পাশাপাশি নাচের রিহার্সাল, গান তো রয়েছেই, পড়াশোনা নিয়েও বেজায় ব্যস্ত রাজনন্দিনী পাল। গল্ফ ক্লাব রোডের পৈতৃক ডুপ্লে ফ্ল্যাটে মনের ঝাঁপি খুললেন তিনি।

প্র: আপনাকে নিয়ে তো বেশ চর্চা শুরু হয়ে গিয়েছে ইন্ডাস্ট্রিতে...

উ: সত্যিই এটা স্বপ্নের শুরু। সৃজিত মুখোপাধ্যায়ের ‘এক যে ছিল রাজা’ এবং বুম্বা আঙ্কলের প্রোডাকশনে ‘উড়নচণ্ডী’র মতো দুটো ভাল প্রজেক্ট দিয়ে শুরু করলাম। এর আগে ‘নায়িকার ভূমিকায়’ এবং ‘সেদিন বসন্তে’ ছবিতে প্লে ব্যাক করেছিলাম। সেই সূত্রে টলিউডের সঙ্গে প্রত্যক্ষ যোগাযোগটা তৈরি হয়েছিল। তবে অভিনয়ের সুযোগ পাব ভাবিনি।

প্র: ছবির অফার পেলেন কী ভাবে?

উ: মায়ের (ইন্দ্রাণী দত্ত) সঙ্গে টলিউডের বিভিন্ন পার্টিতে যেতাম। সেখানেই বুম্বা আঙ্কল হঠাৎই একদিন আমাকে বলেছিলেন, ‘তোমাকে বড় পরদায় দেখতে চাই।’ তার পরেই ওঁর প্রোডাকশনে ‘উড়নচণ্ডী’তে অভিনয়ের প্রস্তাব দিয়েছিলেন। এই ছবির কাজ শুরুর আগে হঠাৎ সৃজিতের (মুখোপাধ্যায়) অফার পেয়ে একটু দোটানায় পড়েছিলাম। কারণ, বুম্বা আঙ্কলকে কথা দেওয়া ছিল। তবে উনি সম্মতি দেওয়ার পরে সৃজিতের ছবির কাজ শুরু করি।

প্র: ছোট থেকেই ইন্ডাস্ট্রিকে এত কাছ থেকে দেখেছেন। কখনও ইচ্ছে হয়নি অভিনয় করতে?

উ: বিশ্বাস করুন, একেবারেই না। আমি বরং নিজের গান ও নাচ নিয়েই বেশি আগ্রহী ছিলাম। আমি তো সে ভাবে কখনও বাংলা ছবি দেখিনি। ‘বেলাশেষে’ দেখে বাংলা ছবির প্রতি আগ্রহ তৈরি হয়। সেই সূত্রেই ক্রমশ অভিনয়ের প্রতি আকর্ষিত হই। এমন সময়েই বুম্বা আঙ্কলের প্রস্তাব। তবে অভিনয় শুরু করলেও আমার তো সেই অর্থে প্রথাগত প্রশিক্ষণ ছিল না। সৃজিত অনেক হেল্প করছে। তবে উচ্চারণের খামতি মেটাতে সাহায্য করেছেন সুদীপ্তা (চক্রবর্তী) আন্টি। সঙ্গে মায়ের টিপস তো আছেই। এখন তো মুম্বইয়েও কাজের স্বপ্ন দেখছি।

প্র: অভিনয়ের জন্য তো কলেজেও নিয়মিত যেতে পারছেন না...

উ: হ্যাঁ। এটা খুব সমস্যার। আমি দ্য হেরিটেজ কলেজে ইংরেজি অনার্স নিয়ে ফার্স্ট ইয়ারে পড়ছি। শিক্ষকরা আমার সমস্যার কথা জানেন। সকলে হেল্পও করছেন। কিন্তু নিয়মিত ক্লাস করতে না পারলে একটা সমস্যা তো হয়ই। তবে পড়াশোনা নিয়েও আমি খুব সিরিয়াস। ভবিষ্যতে পিএইচডি করতে চাই।

প্র: অভিনয়ে আসার পর জীবন কতটা বদলেছে?

উ: আগে পড়াশোনা, বন্ধুবান্ধবদের সঙ্গে হ্যাংআউট, পার্টি নিয়ে ব্যস্ত থাকতাম। এখন কাজ নিয়ে থাকি। তবে আমি কিন্তু বদলাইনি। ছোটবেলা থেকেই মায়ের সঙ্গে আমার ছবি কাগজে বেরিয়েছে। তখনও বন্ধুমহলে কোনও প্রভাব পড়েনি। তবে নিজের কাজের সুবাদে ছবি প্রকাশিত হলে খুব আনন্দ হয়। বেশ কিছু দিন আগে সানন্দা ও উনিশ কুড়ি পত্রিকার প্রচ্ছদে আমার ছবি বেরোনোর পরে উচ্ছ্বসিত হয়ে পড়েছিলাম। আমি তো সমস্ত ছবি কেটে একটা স্ক্র্যাপ বুক তৈরি করেছি। এ প্রসঙ্গে বলি, এখন সকলে আমাকে চেনে ইন্দ্রাণী দত্তর মেয়ে হিসেবে। আমি চাই, ভবিষ্যতে মাকে সকলে চিনুক আমার পরিচয়েই।

প্র: আপনি নাকি একা থাকতে খুব ভালবাসেন?

উ: হ্যাঁ। নিজেকে সময় দিই। ওটাই আমার অবসর যাপন। পাশাপাশি সিনেমা দেখা, গান শোনা এগুলো তো রয়েছেই। আসলে বাবা-মা বেজায় ব্যস্ত। তাই ছোট থেকেই আমি নিজের একটা স্পেস তৈরি করে নিয়েছি। সুযোগ পেলে কাছের বন্ধুদের সঙ্গেও দেখা করি।

প্র: সেই ঘনিষ্ঠ বন্ধুদের তালিকায় নাকি সৃজিত মুখোপাধ্যায়েরও নাম রয়েছে?

উ: বুঝতে পারছি আপনার ইঙ্গিতটা। এটুকু বলতে পারি, আমি ওর সঙ্গে খুব স্বচ্ছন্দ বোধ করি। দেখুন, আই অ্যাম আ গার্ল হু ইজ সৃজিত’স ফ্রেন্ড। সৃজিত আমাকে সিনেমা সম্পর্কে শিক্ষিত করেছে। ও আমার বন্ধু, মেন্টর, গাইড। ওর সঙ্গে সময় কাটাতে আমার ভাল লাগে। নিজের ছবির বাইরেও আমি কী ভাবে কেরিয়ারে আরও উন্নতি করতে পারব, সেই নিয়েও টিপস দেয় সৃজিত। আমাদের ইকুয়েশন কী সেটা দু’জনেই ভাল জানি। লোকে কী বলছে সেই নিয়ে ভাবছি না। আই লাভ হিজ ওয়র্ক, ওর প্রতি আমি খুবই শ্রদ্ধাশীল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE