Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

‘বাবাকে এখনও ভয় পাই’

‘থ্রি ইডিয়টস’-এ র‌্যাঞ্চোর চরিত্রের জন্য প্রস্তাব পেয়েছিলাম। কম বয়সের চরিত্রটা করতে পারলেও পরিণত র‌্যাঞ্চোকে ফুটিয়ে তোলা কঠিন মনে হয়েছিল।

রণবীর

রণবীর

শ্রাবন্তী চক্রবর্তী
মুম্বই শেষ আপডেট: ২৩ জুন ২০১৮ ০০:১৫
Share: Save:

প্র: ছবি মুক্তির আগে চাপ অনুভব করেন?

উ: এই সময়টা খুব গুরুত্বপূর্ণ। ফলের আশায় বসে থাকা। ‘সঞ্জু’র জন্য রাজকুমার (হিরানি) যখন প্রথম আমাকে ফোন করেন, আমি রাজি ছিলাম না তখন। ওঁকে জানিয়েওছিলাম সে কথা। ‘থ্রি ইডিয়টস’-এ র‌্যাঞ্চোর চরিত্রের জন্য প্রস্তাব পেয়েছিলাম। কম বয়সের চরিত্রটা করতে পারলেও পরিণত র‌্যাঞ্চোকে ফুটিয়ে তোলা কঠিন মনে হয়েছিল।

প্র: ‘সঞ্জু’র চরিত্রটা আমির খানের করার ইচ্ছে ছিল?

উ: আমির স্যর আমাকে ফোন করে বলেন, আমি খুব ভাগ্যবান যে সঞ্জয় দত্তের চরিত্রে অভিনয় করছি। এটাও বলেন, আমি ওঁর চেয়ে সঞ্জু বেশি ভাল করব। আমার বড় চ্যালেঞ্জ ছিল, সঞ্জয়ের মতো দেখতে লাগা। দর্শক যখন সেটা মেনে নিয়েছেন, একটু হলেও চাপ কম।

প্র: দত্ত ও কপূর পরিবার অনেক বছর ধরে পরস্পরের ঘনিষ্ঠ। এই অফার নেওয়ার সময়ে বাড়িতে আলোচনা হয়েছিল?

উ: খুবই আন্তরিক সম্পর্ক আমাদের। সঞ্জয় স্যরের দুই বোন প্রিয়া আর নম্রতা বাবাকে রাখি পরান। সুনীল স্যর আমাকে ভীষণ স্নেহ করতেন। বায়োপিক নয়, আমার দাদির বাণিজ্যিক ছবিই বেশি পছন্দের। তবে আমার মতো বাড়ির সকলেরই রাজু স্যরের উপরে ভরসা ছিল। আর এখন তো সঞ্জয় ও রাজু স্যরের অনেক অনুরাগীর ভালবাসাও আমি পাচ্ছি।

প্র: সঞ্জয় দত্ত বাস্তব জীবনে মাদকাসক্ত ছিলেন। আপনি কখনও নেশা করেছেন?

উ: কলেজে পড়ার সময়ে বন্ধুদের খপ্পরে পড়ে করেছিলাম (হাসি)! এক বার করেই বুঝেছিলাম, পাঁচ মিনিটের আনন্দের জন্য পুরো জীবন নষ্ট করতে পারব না। নিকোটিনের নেশা ছিল অনেক বছরের। বহু কষ্ট করে তার কবল থেকে বেরিয়েছি। নেশামুক্তির ক্ষেত্রে পরিবারের ভূমিকাও গুরুত্বপূর্ণ।

প্র: এর পরের ছবিগুলির কাজও ইন্টারেস্টিং। ছকের বাইরে বেরিয়ে কাজ করতে চাইছেন?

উ: অভিনেতা হিসেবে আমাকে সাফল্য বা ব্যর্থতা বিচলিত করে না। যখন ‘বেশরম’, ‘বম্বে ভেলভেট’, ‘জগ্গা জাসুস’ ছবি করেছিলাম, আশা ছিল আমার যখন ভাল লেগেছে, দর্শকেরও ভাল লাগবে। তবে সব সময়ে সেটা হয় না। ‘সঞ্জু’র জন্য অনেক দিন পর্যন্ত নতুন ছবি সই করিনি। গুড বয় ইমেজ ছেড়ে বেরোনোর জন্য ‘শামসেরা’ করছি। এখানে সঞ্জয় দত্ত নেগেটিভ চরিত্রে। লব রঞ্জনের ছবি আমার বরাবর ভাল লাগে। আমিই ওকে ফোন করে কাজ করার ইচ্ছে জানাই। আর ব্রহ্মাস্ত্র নিয়ে কী বলি? অয়ন (মুখোপাধ্যায়) মন-প্রাণ দিয়ে ছবিটা বানাচ্ছে। এখানে যা দেখানো হবে, তা ভারতীয় দর্শক আগে দেখেননি। এই ছবিতে আলিয়ার মতো নতুন প্রতিভা আছে, আবার অমিতাভ বচ্চনের মতো লিভিং লেজেন্ড। আমার কাছে এটা স্বপ্নের মতো। বচ্চন স্যরকে প্রিয় বন্ধু বানানোই এখন আমার লক্ষ্য।

প্র: আলিয়ার আর আপনার কাজের অভিজ্ঞতা কী রকম?

উ: আলিয়া ভীষণ সৎ। আমি দশ বছর ধরে কাজ করছি। আর ও ছ’বছর। আমার আসলে একটা ‘চলতা হ্যায়’ মনোভাব কাজ করে। আলিয়া খুব ডিসিপ্লিনড। আর ও খুব গিভিং অ্যাক্টর। একসঙ্গে কাজ করার সময়ে কখনও নিজের কথা ভাবে না। এটা একটা বিশাল প্রতিভা। আশা করছি, আমার আর আলিয়ার জুটি দর্শক পছন্দ করবে।

ছবিতে লুক

প্র: আর বাস্তব জীবনে?

উ: এই মুহূর্তে এই বিষয়ে আমি কথা বলতে রাজি নই।

প্র: তৈমুর এবং সামারার সঙ্গে কতটা সময় কাটান?

উ: তৈমুরের সঙ্গে আমার বেশি দেখা হয় না। তবে যত বার দেখা হয়েছে, খুব ভাল লাগে। ওকে কোলে তুললেই অন্য রকম অনুভূতি হয়। আমি নিজে তৈমুরকে সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটে ফলো করি। চুলের ছাঁট কী রকম করেছে, কী ভাবে হাঁটছে... দেখতে খুব মজা লাগে। সামারার সাত বছর বয়স। আগে আমাকে দেখে খুব লজ্জা পেত। এখন অনেকটা সহজ হয়েছে। সম্প্রতি ওর মা ওকে একটা ফোন কিনে দিয়েছে। সামারা ইনস্টাগ্রামে অনেক ভিডিয়ো পোস্ট করে। তাই সময় পেলেই ওর সঙ্গে কথা বলি।

প্র: জীবনকে কী ভাবে দেখেন?

উ: যাঁরা আমার কাছের, তাঁরা আমাকে বলেন আমি নাকি অনেকটা গৌতম বুদ্ধের মতো। হয়তো কেউ বিশ্বাস করবেন না, আমার কিন্তু রাগ হয় না। আমাকে যে যা খুশি বলুক, আমার কিচ্ছু এসে যায় না। আমার কারও সঙ্গে ঝগড়া হয় না। আমি নিজের বাড়ির ব্যালকনিতে বসে থাকতে পারি ঘণ্টার পর ঘণ্টা। কিছু না চিন্তা করে বাইরের দিকে এক পলকে তাকিয়ে।

প্র: আপনার বাবা রিমেক বা বায়োপিকে খুব একটা বিশ্বাস করেন না। আপনার কী মত?

উ: আমার মতে বায়োপিক সৎ ভাবে বানানো উচিত। সঞ্জু স্যর যে ভাবে নিজের জীবনের পাতা আমার সামনে তুলে ধরেছেন, সেটা খুব কম লোকই করতে পারেন। আমার দাদাজিকে (রাজ কপূর) নিয়ে বায়োপিক বানানো কঠিন হবে। হয়তো আমার বাড়ির লোকজন সব কিছু বলতে আগ্রহী হবেন না। তবে একটা কথা শেয়ার করতে চাই। সঞ্জুর শুটিংয়ে একটা জিনিস উপলব্ধি করেছি। সঞ্জয় স্যরের তাঁর বাবার সঙ্গে যে রকম সম্পর্ক ছিল, আমার আর বাবার সম্পর্কটাও অনেকটা সেই ধরনের। ভালবাসার সঙ্গে একটা ভয়ের অনুভূতি সব সময় থাকে।

প্র: আপনি বাবাকে ভয় পান?

উ: সেই ভয় কখনও যাবে না। আগে বাবা আমার ম্যানেজারও ছিলেন। আর বাবাকে সবাই ভয় পান বলে আমার মার্কেটটা ভাল তৈরি হয়েছে (হেসে)। অভিনয় শুরু করার পর থেকে বাবার সঙ্গে একটু বেশি কথা বলতে শুরু করেছি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Ranbir Kapoor Indian actor Sanjay Dutt
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE