Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪

কাকে বলেছি সিরিয়াল করে কষ্টে আছি?

ছোট পরদায় কাজ করলে সিনিয়রদের নাকি অসম্মান হয়। এ জল্পনায় সরব সেই অভিনেতারাই সকালবেলা আনন্দ প্লাস দফতরে ফোন। ও পার থেকে বলিষ্ঠ স্বর! ‘‘আমার কথা না জেনে, আমার সঙ্গে আলোচনা না করে কেউ কেন আমার কথা লিখবেন, বলুন তো?

শেষ আপডেট: ০৫ মে ২০১৭ ০৯:৪০
Share: Save:

সকালবেলা আনন্দ প্লাস দফতরে ফোন। ও পার থেকে বলিষ্ঠ স্বর! ‘‘আমার কথা না জেনে, আমার সঙ্গে আলোচনা না করে কেউ কেন আমার কথা লিখবেন, বলুন তো? নানা জায়গায় দেখছি আমার মুখে কথা বসানো হচ্ছে, যা আমি বলিনি। আমি মিডিয়াতেই এর প্রতিবাদ করছি,’’ উত্তেজিত মাধবী মুখোপাধ্যায়।

নিজেই বললেন, তিনি জানতে চান ‘‘আমি কাকে বলেছি টিভি সিরিয়াল করে কষ্টে আছি? আমাকে স্ক্রিপ্ট রাইটারের জন্য বসে থাকতে হয়?’’ বুঝিয়ে দিলেন, যেখানে যেমন সিস্টেম তিনি সেই মতো কাজ করেন। বসে থাকাটাও তাঁর কাজ। জানালেন, আর্টিস্টরা তো আড্ডা মারে, মুড়ি তেলেভাজা খায়। সেখানে বাড়ির গল্পও হয়। পারস্পরিক সম্পর্ক তৈরি হয়। এই আড্ডা স্বাস্থ্যকর বলে উল্লেখ করলেন তিনি। যোগ করলেন,‘‘আমি কিন্তু এখন একা! সিরিয়ালপাড়াই আমার সঙ্গী। আমি ঠিকমতো না খেলেও তো প্রোডাকশনের লোকজন আমায় বকে, ধমকায়! এ বার বুঝলেন তো?’’ এতটাই উত্তেজিত ইন্ডাস্ট্রির চারুলতা যে, থামতে চাইছেন না।

সেই কবে থেকে ইন্ডাস্ট্রিতে। জানালেন আগে কাজের সঙ্গে সঙ্গে অনেক দায়িত্ব নিতে হতো। আজ তিনি মুক্ত, বোঝাহীন। জোর গলায় বললেন, ‘‘প্লিজ লিখবেন, আমি কিন্তু শুধু লীনা গঙ্গোপাধ্যায় আর শৈবাল বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গেই কাজ করি। আর অন্য কোনও সিরিয়াল বললেও করি না। ওদের ব্যবহার, সম্মান, ভালবাসা আমায় মুগ্ধ করেছে। তাই আছি। ওরা তো অনেক সময় ফ্লোরেও থাকে না। কিন্তু ওদের সহযোগী দিগন্ত, সুমিত, বাপ্পা খুব খেয়াল রাখে আমার। আর কী করে বোঝাই বলুন তো!’’

সিরিয়ালপাড়ায় কাজ করতে গিয়ে সত্যিই বয়স্ক অভিনেতাদের সম্মান হানি হচ্ছে?

‘‘শৈবালদা একমাত্র প্রযোজক যাকে বলতে পারি, আমি কিন্তু রাত জেগে কাজ করতে পারব না। ওখানে আমার আবদার মেটানো হয়! কাজের খিদে আজও মেটেনি বলেই সিরিয়ালে কাজ করি। টাকাপয়সা নয়, ব্যবহারটাই আসল। লীনা কাজ কমিয়ে দিলে ঝগড়া করে ওর থেকে কাজ চাই। ওটাই আমার বেঁচে থাকার রসদ। কে বলল, আমাদের বসিয়ে রাখা হয়?’’ আবেগ নিয়ে বললেন সাবিত্রী চট্টোপাধ্যায়। মাধবী মুখোপাধ্যায় যদিও মেগার ক্ষেত্রে অর্থের গুরুত্বটা এড়িয়ে যাচ্ছেন না। ‘‘বলতে খারাপ লাগছে, কিন্তু এটাই বাস্তব। সিনেমার চেয়ে সিরিয়ালে লোকে দশগুণ বেশি টাকা পায়। লোকে সিরিয়ালে কাজ করবে না তো কোথায় করবে? আর যে লেখিকাকে এক দিনে পাঁচটা সিরিয়ালের গল্প লিখতে হয়, তার জন্য অপেক্ষা তো করতেই হবে। অসুবিধা কোথায়?’’ সাফ জবাব মাধবীর।

‘আত্মজা’ ছবির পরিচালনার দায়িত্বে ছিলেন মাধবী মুখোপাধ্যায়। তাঁর মধ্যে একটা টেকনিশিয়ান সেল্ফও আছে। তাই ফ্লোরে অপেক্ষার মধ্যে যে কোনও অসম্মান নেই, বেশ কড়া গলায় জানিয়ে দিলেন। ফোন ছাড়ার আগে বললেন, ‘‘ শুনুন, এটাও লিখবেন। সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের হয়ে আমি বলে দিচ্ছি, কাজের প্রতি ডেডিকেটেড ও রকম মানুষ ঘণ্টা বেঁধে মেগায় কাজ করেন। এক ঘণ্টা বাড়লে ওর অপমান হয় না। আর এটা নিয়ে বেদনাও ওর নেই!’’ ফোন ছেড়েই হাঁটা দিলেন সিরিয়ালপাড়ায়। কল টাইমের একটু আগেই।

একটু শাড়ি, একটু বই, নতুনদের পেছনে লাগা। ঠাট্টা, ইয়ার্কি…ওইখানেই যেন আস্ত এক মাধবীর সংসার!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Sabitri Chatterjee Madhabi Mukherjee
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE